Chinese Submarine Sank

বেজিংয়ের মুখে চুনকালি! চিনের অত্যাধুনিক পরমাণু ডুবোজাহাজ ডুবেই গেল, ঘনাচ্ছে রহস্য

চিনের অত্যাধুনিক পরমাণু শক্তিসম্পন্ন ডুবোজাহাজ ডুবে যাওয়ার খবর ফাঁস করেছেন আমেরিকার এক প্রতিরক্ষা আধিকারিক। বেজিং বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০৬
Share:
০১ ১৮

তাইওয়ান, জাপানকে চোখরাঙানি। কিংবা আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় দাদাগিরি চালানো চিনের মুখেই এ বার পড়ল চুনকালি। বেজিংয়ের হাতে থাকা অত্যাধুনিক পরমাণু শক্তিসম্পন্ন ডুবোজাহাজ ডুবে গিয়েছে বলে দাবি ওয়াশিংটনের।

০২ ১৮

চিনা ডুবোজাহাজের সলিলসমাধি সংক্রান্ত খবরটি সম্প্রতি ফাঁস করেন আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিক। তাঁর দাবি, চলতি বছরের মে-জুন মাসের মাঝামাঝি কোনও সময়ে তলিয়ে গিয়েছে বেজিংয়ের ওই ডুবোজাহাজ।

Advertisement
০৩ ১৮

আমেরিকার ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, চিনের উহানের কাছে উচাং শিপইয়ার্ডে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পরমাণু শক্তিসম্পন্ন ওই জলযানটি ছিল ‘ঝৌ শ্রেণি’-র প্রথম প্রজন্মের ডুবোজাহাজ।

০৪ ১৮

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কৃত্রিম উপগ্রহের পাঠানো ছবিতে ডুবোজাহাজটি তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। এটিকে জল থেকে তোলার জন্য ক্রেন ব্যবহার করা হচ্ছে। যার উপগ্রহচিত্র প্রকাশ্যে এসেছে বলে দাবি করেছে আমেরিকার এই জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থা।

০৫ ১৮

হঠাৎ করে কী ভাবে চিনা ডুবোজাহাজের সলিলসমাধি ঘটল, তা এখনও সকলের অজানা। ডুবোজাহাজটিতে পরমাণু জ্বালানি বা পরমাণু হামলাকারী ব্যালেস্টিক মিসাইল ছিল কি না, তা-ও জানা যায়নি।

০৬ ১৮

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পরমাণু শক্তিসম্পন্ন ডুবোজাহাজটি যেখানে ডুবে গিয়েছে সেই উহান প্রদেশ থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছিল নোভেল করোনা ভাইরাস। ডুবোজাহাজ দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

০৭ ১৮

‘দ্য ওয়ার জ়োন’ নামের আমেরিকার আর একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, সমুদ্রে যাত্রা শুরু করার আগে ডুবোজাহাজটিতে চূড়ান্ত পর্যায়ের কিছু কাজ চলছিল। তখনই এর সলিলসমাধি ঘটে।

০৮ ১৮

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ডুবোজাহাজটি জল থেকে তুলতে কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সমুদ্রে পরমাণু বিকিরণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও ওই ঘটনার পর জল পরীক্ষার কোনও উদ্যোগ নেয়নি বেজিং।

০৯ ১৮

আমেরিকার নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার অফিসার টম শুগার্টের কথায়, ‘‘উহানের নৌবন্দরের যে উপগ্রহচিত্রগুলি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে চারটি ক্রেন দেখতে পেয়েছি। ১২ থেকে ১৭ জুনের মধ্যে সেগুলিকে আনা হয়েছিল।’’

১০ ১৮

অন্য দিকে, ডুবোজাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনা অস্বীকার করেছে চিন। এ ব্যাপার মুখ খুলেছেন ওয়াশিংটনের চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র। তাঁর কথায়, ‘‘ডুবোজাহাজ ডুবে যাওয়ার কোনও খবর আমাদের কাছে নেই। কোন ঘটনার কথা বলা হচ্ছে তা জানি না। এ ব্যাপারে কোনও তথ্য দিতে পারব না।’’

১১ ১৮

তবে বেজিং অস্বীকার করলেও নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও সরতে নারাজ ডুবোজাহাজ ডুবে যাওয়ার খবর ফাঁস করা আমেরিকার প্রতিরক্ষা আধিকারিক। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘চিন কখনওই নিজের ভুল স্বীকার করতে চায় না। তাই ডুবোজাহাজের সলিলসমাধির ঘটনা যে মানতে চাইবে না, সেটাই স্বাভাবিক।’’

১২ ১৮

আমেরিকার ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, ‘‘চিনা নৌসেনাদের প্রশিক্ষণ ও পরিকাঠামোগত গুণমান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফলে এই ঘটনাকে বেজিংয়ের পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি (পিএনএ) ও সেখানকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক কী ভাবে দেখছে, তা বুঝতে হবে। লালফৌজে দীর্ঘ দিন ধরেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।’’

১৩ ১৮

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, ঝৌ শ্রেণির প্রথম ডুবোজাহাজটি তৈরি করতে আনুমানিক ৮ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছিল চিন। সদ্য তৈরি হওয়া সেই জলযান ডুবে যাওয়ায় গোটা বিশ্বের কাছে মুখ পুড়েছে বেজিংয়ের।

১৪ ১৮

এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর বেজিংয়ের পরমাণু শক্তিসম্পন্ন ডুবোজাহাজগুলি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সিঙ্গাপুরের চিনা প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ জেমস চার। তিনি বলেন, ‘‘পিএনএ নৌবাহিনীর ফার্স্ট-ইন-ক্লাস ডুবোজাহাজগুলি যে আদৌ নিরাপদ নয়, এই দুর্ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।’’

১৫ ১৮

এর আগে ১৯৬০ ও ৭০-র দশকে আমেরিকা ও সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে একই ঘটনা ঘটেছিল। দু’টি দেশেরই ডুবোজাহাজের সলিলসমাধির খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। যা নিয়ে সারা দুনিয়ায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায়।

১৬ ১৮

এই ঘটনার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জাপানে মোতায়েন আমেরিকার বিমানবাহী রণতরীর এক প্রাক্তন কমান্ডার বলেছেন, ‘‘সব শুনে মনে হচ্ছে চিনা নৌসৈনিকরা বড্ড বেশি তাড়াহুড়ো করছিলেন। তার জেরেই দুর্ঘটনা হয়েছে।’’

১৭ ১৮

আমেরিকার গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে চিনের কাছে ছ’টি পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন ডুবোজাহাজ ও ৪৮টি ডিজ়েল-চালিত সাবমেরিন রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বেজিং।

১৮ ১৮

পেন্টাগনের দাবি, ২০২৫ সালের মধ্যে চিনা ডুবোজাহাজের বহর বেড়ে দাঁড়াবে ৬৫। আর ২০৩৫ সালে ৮০-তে পৌঁছবে এই সংখ্যা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement