India-Middle East-Europe Economic Corridor

চিনকে টেক্কা দিতে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ আর্থিক করিডর ভারতে! সায় দিলেও একটি শর্ত দিয়ে রাখল বেজিং

ভারত থেকে পশ্চিম এশিয়া হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত আর্থিক করিডর তৈরির বিষয়ে সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা-সহ আট দেশের সমঝোতা হয়েছে। চিন এই করিডর নিয়ে প্রকাশ্যে এখনও আপত্তি তোলেনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০৫
Share:
০১ ২১

ভারত থেকে পশ্চিম এশিয়া হয়ে সোজা ইউরোপ। দীর্ঘ অর্থনৈতিক করিডর গড়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে আটটি দেশের মধ্যে। জি২০ সম্মেলন চলাকালীন এই সমঝোতাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখছেন রাষ্ট্রনেতারা।

০২ ২১

ভারত, আমেরিকা, সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালির মধ্যে এই আর্থিক করিডর গড়ার সমঝোতা হয়েছে। জি২০ সম্মেলন চলাকালীনই সমঝোতাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্রত্যেক দেশের প্রতিনিধি।

Advertisement
০৩ ২১

ভারত থেকে পশ্চিম এশিয়া হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত আর্থিক করিডর তৈরি হলে বাণিজ্যের সময় অনেক কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতে পণ্য আমদানি এবং ভারত থেকে রফতানির প্রক্রিয়া নতুন গতি পাবে।

০৪ ২১

প্রাথমিক পরিকল্পনা, এই করিডরে ভারতের পশ্চিম উপকূলে মুম্বই বা গুজরাতের বন্দর থেকে জাহাজে পণ্য যাবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। তার পরে সৌদি আরব, জর্ডনের মধ্যে দিয়ে রেলপথে তা যাবে ইজরায়েলে। সেখানে হাইফা বন্দর থেকে জাহাজে পণ্য পৌঁছবে ইটালি, ফ্রান্সে।

০৫ ২১

ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডর প্রায় ৬০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মাধ্যমে মুন্দ্রা, কান্ডলা এবং জেএনপিটি বন্দর থেকে দুবাইয়ে পণ্য চলাচল বহু গুণ বাড়বে বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা।

০৬ ২১

তাৎপর্যপূর্ণ হল, ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডরকে স্বাগত জানিয়েছে চিনও। তারা জানিয়েছে, এই করিডর তৈরি হলে বেজিংয়ের কোনও আপত্তি নেই।

০৭ ২১

ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডর তৈরি হলে তা হবে চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের প্রথম বৃহৎ প্রতিদ্বন্দ্বী। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকায় বাণিজ্য বিস্তার করতে চিন এই আর্থিক করিডর গড়েছিল।

০৮ ২১

২০১৩ সালে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ চালু করেছিলেন। মধ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উপসাগরীয় অঞ্চল, আফ্রিকা এবং ইউরোপের সঙ্গে চিনের যোগাযোগ বৃদ্ধি করাই ছিল তার লক্ষ্য।

০৯ ২১

গত কয়েক বছরে এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু চিন সম্প্রতি ধাক্কা খেয়েছে ইউরোপেরই একটি দেশের কাছে। ইটালি এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছে।

১০ ২১

ইটালি সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে আর তারা থাকতে চায় না। কারণ, এর থেকে যে অর্থনৈতিক লাভ হবে বলে তারা মনে করেছিল, তা হয়নি।

১১ ২১

অক্টোবরেই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা ছিল বেজিংয়ে। কিন্তু চিন সেই বৈঠক পিছিয়ে দিয়েছে। তার পরেই ইটালি তাদের সিদ্ধান্ত জানায়। ভারতে জি২০ বৈঠক চলাকালীন এ বিষয়ে ইটালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চিনা প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলেও খবর।

১২ ২১

চিনের দাবি, তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে প্রচুর মানুষের উপকার হয়েছে। ১৫০-র বেশি দেশ এই উদ্যোগে তাদের সহযোগী হয়েছে। সেই সব দেশেরই লাভ হয়েছে চিনের আর্থিক প্রকল্পে।

১৩ ২১

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে ইটালির অসন্তোষের মাঝেই দিল্লিতে আট দেশের মধ্যে ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডরের সমঝোতা হয়েছে। এই আট দেশে শামিল ইটালিও।

১৪ ২১

চিনের হাত ছেড়ে ইটালি কি তবে আমেরিকার দিকে ঝুঁকল? চিনের রোষের মুখে পড়তে পারে ইউরোপের এই দেশ? জি২০ সম্মেলনেই মঞ্চ থেকেই এই জল্পনা দানা বেঁধেছে।

১৫ ২১

যদিও ইটালির সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে প্রকাশ্যে কোনও রকম অসন্তোষ প্রকাশ করেনি চিন। বরং ইটালীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে তারা আগ্রহী।

১৬ ২১

এই পরিস্থিতিতে ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডরে সম্মতি জানিয়ে চিন সংঘর্ষ-বিমুখ হিসাবে নিজেদের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে চাইছে। তেমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা।

১৭ ২১

কিন্তু ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডরকে স্বাগত জানিয়ে একটি শর্তও রেখেছে বেজিং। তারা জানিয়েছে, এই উদ্যোগকে তারা তত দিনই সমর্থন করবে, যত দিন তা নিরপেক্ষ থাকবে।

১৮ ২১

ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডরকে যদি ভবিষ্যতে ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়, তবে চিন তাদের সমর্থন তুলে নিতে পারে। এ সম্পর্কে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের কথায় প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারিও লুকিয়ে ছিল।

১৯ ২১

চিনের বিদেশ মন্ত্রক সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উদ্যোগ, যোগাযোগ স্থাপন সবই হতে হবে প্রকাশ্যে। প্রত্যেক দেশের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি। তবেই একে তারা সমর্থন করবে। একে ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা চলবে না।

২০ ২১

মোদী সরকারের বক্তব্য, জি২০ সম্মেলন থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় পাওনা এই করিডর। এর সুবাদে দেশের পণ্য পশ্চিম এশিয়া হয়ে দ্রুত ইউরোপে পৌঁছবে। খরচ কমবে ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া থেকে জিনিসপত্র আমদানিরও।

২১ ২১

নয়াদিল্লির মূল লক্ষ্য ইউরোপের বাজার। ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালির পরে আগামী দিনে এই করিডরে গ্রিসও জুড়তে পারে। সম্প্রতি সে দেশে সফর সেরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। গ্রিসের বন্দরে ভারতীয় সংস্থার নজর রয়েছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement