চেতন ভগত-উরফি জাভেদকে নিয়ে বিতর্কে সরগরম বি-টাউন। এক জন লেখক হিসাবে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়, অন্য জন নিত্যনতুন পোশাকের বাহারে সকলকে চমকে দিতে ভালবাসেন।
সম্প্রতি উরফিকে নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন লেখক চেতন। তিনি একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে মন্তব্য করেছেন, বর্তমান যুবসমাজকে কলুষিত করছেন উরফি। তাঁরা সকলে উরফির ছবিতে মজে থাকছেন।
উরফিকে নিয়ে মন্তব্যের পর পাল্টা ফুঁসে উঠেছেন অভিনেত্রীও। তিনি চেতনের সঙ্গে মহিলাদের ব্যক্তিগত বাক্যালাপ প্রকাশ্যে এনেছেন। সেই সঙ্গে চেতনের চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন।
ভারতীয় যুবসমাজ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে চেতন বলেছিলেন, ‘‘এখনকার ভারতীয় যুবসমাজ কেবল মেয়েদের ছবিতে লাইক দিতে জানে। তাই উরফি জাভেদের ছবিতে কোটি কোটি লাইক পড়ে।’’
এখানেই না থেমে চেতন আরও বলেন, ‘‘এক দিকে সীমান্তে থাকা জওয়ান যাঁরা কার্গিলে বসে দেশকে রক্ষা করছেন। অন্য দিকে, এক দল কম্বলের তলায় ঢুকে উরফির ছবি দেখছে।’’
চেতনের এই মন্তব্যের পর উরফি বুঝিয়ে দিয়েছেন, ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী তিনি নন। উরফির পাল্টা অভিযোগ, চেতন আসলে ‘পারভার্ট’, অর্থাৎ তিনি বিকৃতমনষ্ক। চেতনের পুরনো কেচ্ছা মনে করিয়ে দিয়েছেন উরফি।
বস্তুত, চেতন ভগত বা উরফি, দু’জনেই ধারাবাহিক ভাবে বিতর্কের কেন্দ্রে। উরফি প্রায় প্রতি দিনই নানা রকম উদ্ভট পোশাক পরে ছবি তোলেন। যা নিয়ে সমাজমাধ্যমে চর্চা হয় বিস্তর। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উরফি ঠাট্টার খোরাক।
তবে হাসি-ঠাট্টায় কখনও দমে যাননি উরফি। তিনি কখনও স্তনে স্টিকার লাগিয়ে অবলীলায় এসেছেন ক্যামেরার সামনে, কখনও আবার ঊর্ধ্বাঙ্গে কিছু না পরে হাতে গ্লাস নিয়ে ঢেকেছেন বক্ষযুগল।
চেতন ভগত প্রথম বিতর্কের কারণে শিরোনামে উঠে আসেন ২০১৮ সালে। ‘মি টু’ আন্দোলনের সময় তাঁর সঙ্গে কথোপকথন ফাঁস করেন এক মহিলা। সেই কথোপকথনের বিষয়টি অস্বীকার করতে পারেননি লেখক।
প্রকাশ্যে আসা সেই কথোপকথনে দেখা গিয়েছিল, চেতন ওই মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাইছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘তুমি মিষ্টি, মজাদার এবং খুবই ভাল মনের মানুষ। তাই আমি ঠিক করেছি, তোমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করব। কিছু তো বল।’’
তার উত্তরে ওই মহিলা বলেছিলেন, ‘‘অন্য বিবাহিত পুরুষদের মতো কেন কথা বলছ? তুমি কিন্তু এ রকম না। এর থেকে ভাল।’’ কথোপকথন আরও এগিয়েছে। সব থেকে বড় কথা, অভিযোগ স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন চেতন।
ফেসবুকে পোস্টে চেতন লেখেন, ‘‘যাঁর উদ্দেশে ওই বার্তা পাঠিয়েছিলাম, তাঁর কাছে প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ওই ‘স্ক্রিনশট’গুলি সত্যি। আমার কথাগুলো আপনাদের ভুল মনে হলে দুঃখিত। আমাকে ক্ষমা করুন।’’
চেতন আরও লিখেছিলেন, ‘‘আসলে এই ‘স্ক্রিনশট’গুলো কয়েক বছরের পুরনো। আমার ওই মহিলার সঙ্গে বেশ কয়েক বার দেখা হয়েছে। আমাদের ভাল বন্ধুত্ব ছিল। আমি সব সময় ওর প্রতি টান অনুভব করতাম। কারণ ও খুব ভাল মানুষ।’’
কথোপকথনের কথা স্ত্রী অনুষাকে জানিয়ে তাঁর কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন লেখক। তাঁর ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী, ‘‘আমার মনে হয়, আমি কিছু ক্ষণের জন্য পথভ্রষ্ট হয়েছিলাম। তবে আমি সাফ জানাতে চাই যে, আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক, কোনও অশ্লীল ছবির আদানপ্রদান ছিল না। তার পরে অবশ্য আমি ওই মহিলার নম্বর মুছে ফেলেছিলাম এবং তাঁর সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ নেই। আরও এক বার আমি ওই মহিলা ও অনুষার কাছে ক্ষমা চাইছি।’’
এই পুরনো কথোপকথনের ‘স্ক্রিনশট’ প্রকাশ্যে এনে চেতনকে একহাত নিয়েছেন উরফি। তিনি বলেছেন, ‘‘ওঁর মতো মানুষ সব সময় মেয়েদের দোষই খোঁজেন। এক জন নারীকে তাঁর পোশাক দিয়েই বিচার করেন। আপনি বিকৃতমনস্ক (পারভার্ট) বলে এমন নয় যে, মেয়েটির দোষ রয়েছে।’’
উরফি জানান, খামোকা তাঁর নাম টেনে নিজেরই ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন চেতন। এটি দুর্ভাগ্যজনক। তাঁর পোস্ট দেখে নানা জনে নানা মন্তব্য করেছেন। কেউ লিখছেন, “সত্যি হোক বা মিথ্যা, আর কোনও সম্মান রইল না।” আবার কেউ লিখলেন, “বলিউড সিনেমার চিত্রনাট্য দেখছি মনে হচ্ছে।”
উরফির অভিযোগের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন লেখক। তিনি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রবিবার টুইটারে চেতন লিখেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যা রটানো হচ্ছে, আমি কখনও তেমন কারও সঙ্গে কথা বলিনি, দেখা করিনি, গল্প করিনি, এমন কাউকে আমি চিনিই না। এটা মিথ্যা, ভুয়ো।’’
একই সঙ্গে কখনও উরফির সমালোচনা করেননি বলেও দাবি করেছেন লেখক। চেতন বলেছেন, ‘‘ইনস্টাগ্রামে সময় নষ্ট না করে কেরিয়ারে মন দিতে বলার মধ্যে ভুল কিছু নেই বলে আমি মনে করি।’’