শীত পড়তেই দেশজুড়ে সর্দির সঙ্গে খুসখুসে কাশি সবার ঘরে ঘরে। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভেবেই সবাই এড়িয়ে যাচ্ছেন। তবে কেন্দ্রের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে আবার।
এখনও পরিস্থিতি হাতের বাইরে যায়নি বলেই জানা যাচ্ছে। তবে ধীরে হলেও সম্প্রতি কোভিড সংক্রমণ আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে। দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের উপপ্রজাতি জেএন.১-এ আক্রান্তের হদিস মিলেছে।
রাজ্যগুলিকে সাতটি নির্দেশিকা পাঠাল কেন্দ্র। নির্দেশিকায় আসন্ন উৎসবের মরসুমে সতর্ক হতে বলার পাশাপাশি জানাল, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে কি না, নজর রাখতে হবে। সেই নিয়ে রিপোর্ট দিতেও বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে ৭৯ বছরের এক মহিলার নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তিনি জেএন.১-এ আক্রান্ত হয়েছেন।
এর আগে তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লি থেকে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন এক মহিলা। তাঁর শরীরেও ধরা পড়েছিল করোনা ভাইরাসের জেএন.১ উপপ্রজাতি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র নির্দেশিকা জারি করে জানাল, আসন্ন উৎসবের মরসুমের কথা মাথায় রেখে জনস্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা উচিত। রোগ যাতে না ছড়ায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে।
নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, কোভিড-১৯ নিয়ে পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল, তা মেনে চলতে হবে। জ্বর বা শ্বাসকষ্ট নিয়ে যে রোগীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে আসছেন, তাঁদের উপর নজর রাখতে হবে।
এই নিয়ে জেলাভিত্তিক রিপোর্ট দিতে হবে। এর ফলে সংক্রমণের প্রাথমিক প্রবণতা ধরা পড়বে। কোভিডের নির্দেশিকা মেনে প্রত্যেক জেলায় পরীক্ষার যথেষ্ট ব্যবস্থা রাখতে হবে। আরটিপিসিআর এবং অ্যান্টিজেন পরীক্ষার উপর জোর দিতে হবে।
কারও রিপোর্ট পজিটিভ এলে নমুনার জিনোম পরীক্ষার জন্য ইন্ডিয়ান সার্স কোভ-২ জেনোমিক কনসর্টিয়ামে পাঠাতে হবে। যাতে দ্রুত নতুন উপপ্রজাতির হদিস মেলে।
সংক্রমণের মোকাবিলায় সরকারি এবং বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রগুলি কতটা প্রস্তুত, তা বোঝার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে মহড়ায় অংশ নিতে হবে।
নাগরিকদের ক্রমাগত সতর্ক করার কথা বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। পাশাপাশি, পরিচ্ছন্নতার বিধি মেনে চলার কথাও বলা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ (আইএলএসএসিওজি) বলছে, কেরলে জেএন.১ উপপ্রজাতির অস্তিত্ব মিলেছে। সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশেও মিলেছে এই উপপ্রজাতির অস্তিত্বের খোঁজ।
এর উপসর্গ হল জ্বর, সর্দি, কাশি, মুখে ব্যথা বা চাপ অনুভব, মাথা যন্ত্রণা, গলা ব্যথা। এটি করোনা ভাইরাসের বিএ.২.৮৬ ওমিক্রন প্রজাতির একটি উপপ্রজাতি।
গত অগস্টে লুক্সেমবার্গে প্রথম এই উপপ্রজাতির দেখা মিলেছে। বিএ.২.৮৬ প্রজাতির অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়েছিল গত জুলাই মাসে ডেনমার্কে।