বিশ্বকাপ কার হাতে উঠবে? কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। কাপ হাতে তোলার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে টিম ইন্ডিয়া। কাপ জয়ের স্বপ্নে বুঁদ হয়ে রয়েছে গোটা দেশ। সেজে উঠেছে আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা, উত্তেজনায় ফুটছে ক্রিকেট দুনিয়া।
বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচে না হেরেই এ বার ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে রোহিত ব্রিগেড। ২০০৩ সালের বদলা কি এ বার নেবে ‘মেন ইন ব্লু’? রোহিতদের এ হেন আগ্রাসন দেখে অনেকেই এই নিয়ে চায়ের কাপে তুফান তুলছেন।
রবিবার বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ সেই অস্ট্রেলিয়া। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে রিকি পন্টিংয়ের দলের কাছে হারতে হয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দলকে। ২০ বছর পর সেই মধুর প্রতিশোধ কি নিতে পারবেন রোহিত-বিরাটেরা?
বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে এই নিয়েই আলোচনা চলছে। এ সবের মধ্যেই আলোচনায় উঠে এসেছেন এক আম্পায়ার। অতীতের পরিসংখ্যান বলছে, সেই আম্পায়ার থাকলেই ভারত হারে।
তাঁর নাম রিচার্ড কেটেলবরো। অতীত বলছে, যত বার কেটেলবরো আম্পায়ার হিসাবে বাইশ গজে ছিলেন, তত বারই হেরেছে টিম ইন্ডিয়া। আর সেই কারণেই রোহিত-বিরাটদের ভক্তরা তাঁকে ডাকছেন ‘অপয়া’ বলে।
২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচে আম্পায়ারদের মধ্যে ছিলেন কেটেলবরো। জিততে পারেনি ভারত। সেই শুরু।
পরের বছর ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচ। সে বার ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। আম্পায়ার হিসাবে ছিলেন কেটেলবরো। হেরে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।
২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। কিন্তু হারতে হয় টিম ইন্ডিয়াকে। আম্পায়ার হিসাবে ছিলেন সেই কেটেলবরো।
২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালেও একই ঘটনা ঘটে। আম্পায়ার হিসাবে ছিলেন কেটেলবরো। পাকিস্তানের কাছে হেরে যায় ভারত।
এর পর ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ম্যাচ। মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং নিউ জিল্যান্ড। আম্পায়ারদের মধ্যে এক জন ছিলেন কেটেলবরো। সে বারও পরাজিত হয় টিম ইন্ডিয়া।
টানা পাঁচ বারই আম্পায়ার হিসাবে ছিলেন ইংল্যান্ডের কেটেলবরো। আর প্রতি বারই হারতে হয়েছে ভারতকে। রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালেও আম্পায়ার হিসাবে থাকবেন তিনি। আর এই নিয়েই শঙ্কায় ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। অতীতের পুনরাবৃত্তি হবে না তো?
ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে কেটেলবরোকে ‘অপয়া’ তকমা দিয়েছেন অনেকেই। কেউ আফসোসও করছেন আবার। কেউ কেউ আত্মবিশ্বাসের সুরেই বলছেন, কেটেলবরো থাকলেও এ বার টিম ইন্ডিয়ার জয় কেউ রুখতে পারবেন না।
এক ক্রিকেটভক্ত লিখেছেন, ‘‘হায়! ভগবান, কেন এই লোকটা (রিচার্ড) এখনও ভারতে রয়েছে? ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে ফিরে যাওয়া উচিত ছিল ওঁর।’’
অন্য এক ভক্ত এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘‘আমরাই বিশ্বকাপ জিতব। সে যতই রিচার্ড কেটলবরো থাকুক না কেন।’’
চলতি বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার আগ্রাসী মনোভাব আলাদা আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। আবার প্রতিপক্ষ যখন অস্ট্রেলিয়া, তখন জয় ছিনিয়ে কাপ আনাও চ্যালেঞ্জের হতে পারে বলে মনে করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
টানা আট ম্যাচে জিতে ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে তারা। ফলে এ হেন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে কাপ জয় করতে মরিয়া রোহিত-বিরাটেরা। এই সন্ধিক্ষণে রিচার্ড নামক ‘অপয়া’কে কব্জা করে ২০০৩ সালের বদলা নিয়ে রোহিতের হাত ধরে তিন বার বিশ্বকাপ ভারতের হাতে ওঠে কি না, তার জন্য অপেক্ষা আর মাত্র এক দিনের।