ছোট পর্দায় এমন বহু অভিনেত্রী রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের কেরিয়ার সরাসরি টেলিভিশন ধারাবাহিকের মাধ্যমে শুরু করেননি। বি গ্রেড ছবিতে কাজ করে কেরিয়ারের সূত্রপাত তাঁদের। এই তালিকায় নাম রয়েছে অর্চনাপূরণ সিংহ, সানা খান থেকে শুরু করে পায়েল রোহাতগি-সহ বহু নায়িকার।
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন নামী সংস্থার বিজ্ঞাপনের প্রচারের মুখ হিসাবে কাজ করতে দেখা যায় পায়েল রোহাতগিকে। কিন্তু অভিনয়জগতে তিনি পা রেখেছিলেন বি গ্রেড ছবির মাধ্যমে।
২০০২ সালে ‘ইয়ে ক্যায়া হো রহা হ্যায়’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন পায়েল। ‘আমেরিকান পাই’ নামের ইংরেজি ছবির হিন্দি অনুকরণ এটি।
২০০২ সালের পর ‘তওবা তওবা’, ‘এক সে মেরে ক্যায়া হোগা’র মতো বি গ্রেড ছবিতে কাজ করেন পায়েল। ‘৩৬ চায়না টাউন’, ‘হে বেবি’, ‘ঢোল’, ‘আগলি অওর পাগলি’র মতো হিন্দি ছবিতেও পার্শ্বচরিত্রে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
তালিকায় নাম রয়েছে ঊর্বশী ঢোলাকিয়ারও। ২০০১ সালে টেলিভিশনের পর্দায় সম্প্রচারিত ‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ হিন্দি ধারাবাহিকে কমলিকার চরিত্রে অভিনয় করে খলনায়িকা হিসাবে দর্শকের মন জয় করেছিলেন তিনি।
ছয় বছর বয়সে দক্ষিণী অভিনেত্রী রেবতীর সঙ্গে একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন ঊর্বশী। শিশু অভিনেতা হিসাবে ‘শ্রীকান্ত’ হিন্দি ধারাবাহিকে রাজলক্ষ্মীর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
‘দেখ ভাই দেখ’, ‘শক্তিমান’, ‘মেহন্দি তেরে নাম কি’, ‘কভি সওতন কভি সহেলি’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন ঊর্বশী।
কিন্তু তাঁর কেরিয়ার শুরু হয়েছিল বি গ্রেড ছবির হাত ধরে। ‘স্বপ্নম’ নামের একটি বি গ্রেড ছবিতে প্রথম অভিনয় করেছিলেন তিনি।
২০০৮ সালে সম্প্রচারিত ‘পরী হুঁ মে’ হিন্দি ধারাবাহিকে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি গড়ে তোলেন রেশমা দেশাই। কিন্তু তার আগে থেকেই অসমিয়া, হিন্দি, ভোজপুরি, পঞ্জাবি এবং গুজরাতি ভাষার ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
২০০৪ সালে ‘ইয়ে লমহে জুদাই কে’ ছবিতে শাহরুখ খান এবং রবীনা টন্ডনের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান রেশমা। কিন্তু বি গ্রেড ছবিতে অভিনয় করে নিজের কেরিয়ার গড়ে তুলেছিলেন তিনি।
ফিল্মপাড়া সূত্রে খবর, ‘বলমা বড়া নাদান’ এবং ‘তোসে প্যার বা’ নামের ভোজপুরি ভাষার দু’টি বি গ্রেড ছবিতে অভিনয় করে অভিনয়জগতে হাতেখড়ি হয়েছিল রেশমার।
কৌতুকরসে পরিপূর্ণ হিন্দি ধারাবাহিকের মধ্যে ‘তারক মেহতা কা উল্টা চশমা’ বেশ জনপ্রিয়। এই ধারাবাহিকে দয়াবেনের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শককে হাসিয়ে তাঁদের পেটে খিল ধরাতে পারেন দিশা ভাকানি।
গুজরাতি থিয়েটারে অভিনয় করতেন দিশা। ‘যোধা আকবর’ এবং ‘দেবদাস’ হিন্দি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
তবে দিশার কেরিয়ার শুরু হয় নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কস্মিন: দ্য আনটাচ্ড’ নামের একটি হিন্দি বি গ্রেড ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন দিশা। বর্তমানে যদিও ধারাবাহিকের চরিত্রে দয়াবেন নামেই অধিক পরিচিত তিনি।
ফারদিন খানের ‘প্রেম অগন’ হোক বা আমির খান অভিনীত ‘মন’— দু’টি ছবিতেই পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন শমা সিকন্দর।
২০০৩ সালে ‘ইয়ে মেরি লাইফ হ্যায়’ ধারাবাহিকে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শমা। একাধিক মিউজ়িক ভিডিয়োর পাশাপাশি টেলিভিশনের ধারাবাহিক এবং ‘মায়া: স্লেভ অফ হার ডিজ়ায়ার্স’-এর মতো ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
কিন্তু শমার কেরিয়ার শুরু হয় বি গ্রেড ছবির মাধ্যমে। আমিরের ভাই ফয়জল খানের সঙ্গে ‘বস্তি’ নামের একটি বি গ্রেড ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি।
ছোট পর্দার অভিনেত্রী হিসাবে সাফল্যের চূড়ায় থাকা অবস্থায় এক ধর্মগুরুকে বিয়ে করে অভিনয় থেকে সরে যান অভিনেত্রী সানা খান। তাঁর স্বামী মৌলবি এবং ইসলাম ধর্মের গবেষক। বিয়ের পর হিজাব পরা শুরু করেন তিনি। তা নিয়ে বিতর্কেও জড়ান সানা।
হিন্দি ছবিতে ‘আইটেম সং’-এ অভিনয়ের পাশাপাশি তামিল, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম ছবিতে গানের দৃশ্যেও দেখা গিয়েছে সানাকে।
সানা তাঁর কেরিয়ারের শুরুতে ‘ক্লাইম্যাক্স’ নামের একটি বি গ্রেড ছবিতে অভিনয় করেছেন বলে টেলিপাড়া সূত্রে খবর।
‘দ্য কপিল শর্মা শো’, ‘কমেডি সার্কাস’-এর মতো হাস্যরস পরিপূর্ণ অনুষ্ঠানে অতিথির আসনে চেনা মুখ অর্চনাপূরণ সিংহ। আশির দশক থেকে বলিপাড়ায় অভিনয় শুরু করেছেন অর্চনা।
তবে অর্চনাও তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বি গ্রেড ছবিতে অভিনয় করে। ‘রাত কে গুনাহ’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
‘৩৬ চায়না টাউন’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় সম্ভাবনা শেঠকে। ‘রাজিয়া সুলতান’ ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন তিনি।
‘বিগ বস্’-এর দ্বিতীয় পর্বে প্রতিযোগী হিসাবে অংশগ্রহণ করে পরিচিতি পান সম্ভাবনা। তবে তাঁর কেরিয়ারের ঝুলিতে রয়েছে একাধিক বি গ্রেড ছবি। ‘মির্চি: ইট’স হট’, ‘মডেল: দ্য বিউটি’ নামের বি গ্রেড ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সম্ভাবনা।