চার দশক ধরে বলিপাড়ায় একটানা কাজ করে চলেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বিন্দু নানুভাই দেসাই। হিন্দি ফিল্মজগতে তিনি বিন্দু নামেই অধিক পরিচিত। চল্লিশ বছরের কেরিয়ারে ১৬০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
সত্তর থেকে আশির দশকে দর্শকের মনে জায়গা করে ফেলেছিলেন বিন্দু। ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কটি পতঙ্গ’ ছবিতে প্রেম চোপড়ার বিপরীতে বিন্দুর অভিনয় প্রশংসীয়।
১৯৬২ সালে অভিনয় শুরু করেন বিন্দু। তবে ইন্ডাস্ট্রিতে এক দশক কেটে যাওয়ার পর অভিনয়ের জন্য বলিপাড়ায় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন তিনি। কিন্তু এক বার নয়, পর পর চার বার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হন বিন্দু।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলিজগতের পুরস্কারের অন্ধকার দিক নিয়ে সরব হন বিন্দু। অভিনেত্রী দাবি করেন, অধিকাংশ ভোট পাওয়ার পরেও তাঁকে ন্যায্য পুরস্কার দেওয়া হয়নি।
১৯৬৯ সালে রাজেশ খন্না, মুমতাজ এবং প্রেম চোপড়ার সঙ্গে ‘দো রাস্তে’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিন্দু। এই ছবিতে নেতিবাচক চরিত্রে কাজ করতে দেখা যায় তাঁকে।
সাক্ষাৎকারে বিন্দু জানান, পুরুষ অনুরাগীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অনুরাগীদের স্ত্রীরা বাধা দিতেন। ছবিতে অভিনয় করার পর বিন্দু মহিলা দর্শকের মনে এমন ছাপ ফেলেছিলেন যে, তাঁরা মনে করতেন তাঁর সঙ্গে কোনও পুরুষ কথা বললেই তাঁকে নিজের জালে ফাঁসিয়ে ফেলবেন বিন্দু।
তবে, পুরস্কার নিয়ে সমস্যার মুখেও পড়েছিলেন বিন্দু। তিনি সাক্ষাৎকারে জানান, ‘দো রাস্তে’ ছবিতে অভিনয় করে বহুল প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। এমনকি, বলিপাড়ার নামী পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন বিন্দু।
বিন্দুর দাবি, সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়নে অধিকাংশ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। তদ্সত্ত্বেও ন্যায্য পুরস্কার পাননি বিন্দু।
পুরস্কার বিতরণী সংস্থার তরফে বিন্দুকে নাকি জানানো হয়, ভোট বেশি পেলেও বিন্দুর ভাগ্যে পুরস্কার জুটবে না। কারণ জিজ্ঞাসা করায় সংস্থার তরফে বলা হয়, ‘‘তুমি ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগতা। এখনই কিসের পুরস্কার পাওয়ার আশা রাখছ? এটাই তোমার প্রথম ছবি।’’
পুরস্কার বিতরণী সংস্থার কথা শুনে অবাক হয়ে যান বিন্দু। অভিনেত্রী জানান, ১৯৭১ সালে নবাগতা অভিনেত্রী হয়েও পুরস্কার পান জয়া ভাদুড়ি (তখনও অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েননি নায়িকা)।
‘গুড্ডি’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, উৎপল দত্ত এবং সুমিতা সান্যালের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় জয়াকে। এই ছবির মাধ্যমেই বড় পর্দায় পা রাখেন জয়া।
বিন্দু জানান, শুধুমাত্র ‘দো রাস্তে’ ছবির ক্ষেত্রেই নয়। ‘দাস্তান’ ছবির জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। ভোট বেশি পাওয়া সত্ত্বেও তাঁকে পুরস্কার দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন বিন্দু।
‘দো রাস্তে’ এবং ‘দাস্তান’ ছবির পরেও আরও দু’বার একই ঘটনা ঘটে বিন্দুর সঙ্গে। অভিনেত্রীর দাবি, পুরস্কার পাবেন জেনেও তাঁর কাছ থেকে সেই পুরস্কার ছিনিয়ে অন্য অভিনেত্রীকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কেরিয়ারের শুরুতেই বলি ইন্ডাস্ট্রির অন্ধকার রূপ দেখে ফেলেছিলেন বিন্দু। অভিনেত্রী সাক্ষাৎকারে জানান, পুরস্কার পেলে ভবিষ্যতে ভাল কাজ করার উৎসাহ পাওয়া যায়। কিন্তু ন্যায্য পুরস্কার না দেওয়াটা ঠিক নয় বলে অভিযোগ করেন বিন্দু।