চলতি বছরে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয় বলি অভিনেতা কুণাল খেমুর। কুণালের পরিচালনায় মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মডগাঁও এক্সপ্রেস’ দর্শকের প্রশংসা কুড়োয়। পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্য নির্মাণ থেকে শুরু করে এই ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন তিনি।
বলিপাড়ায় এমন বহু তারকা রয়েছেন, যাঁরা অভিনয়ক্ষেত্রে নিজের পরিচিতি তৈরি করে জনপ্রিয় হয়ে পরিচালনার জগতেও হাত পাকিয়েছেন। তালিকায় আমির খান, কঙ্গনা রানাউত থেকে শুরু করে রয়েছেন আরও অনেকে।
১৯৮৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মঞ্জিল মঞ্জিল’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন বলি অভিনেতা আমির খান।
একাধিক হিন্দি ছবি প্রযোজনা করলেও একটি মাত্র ছবিই পরিচালনা করেছেন আমির। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘তারে জমিন পর’ ছবিটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বলিউডের ‘পারফেকশনিস্ট’।
২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি ‘ইউ মি অওর হম’-এর মাধ্যমে পরিচালনার জগতে আত্মপ্রকাশ করেন বলি অভিনেতা অজয় দেবগন। পরিচালনার পাশাপাশি এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতেও দেখা যায় তাঁকে। অজয়ের সঙ্গে এই ছবিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তাঁর জীবনসঙ্গিনী এবং বলি অভিনেত্রী কাজল।
‘ইউ মি অওর হম’ মুক্তির পর আট বছর কোনও ছবির পরিচালনা করেননি অজয়। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শিবায়’ ছবিটির পরিচালকের আসনে দেখা যায় তাঁকে। এই ছবিতে অভিনয়ও করেন তিনি।
২০১৬ সালের পর আবার ছ’বছরের বিরতি। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রানওয়ে ৩৪’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় অজয়কে। এই ছবিটিও পরিচালনা করেছিলেন অজয়।
‘রানওয়ে ৩৪’ মুক্তির এক বছরের মাথায় অজয়ের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘ভোলা’। এই ছবিতেও মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন অজয়।
অভিনেতা নন, বরং পরিচালক হিসাবে বলিপাড়ায় পা রাখেন জাভেদ আখতারের পুত্র ফারহান আখতার। ২০০১ সালে ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনার জগতে আত্মপ্রকাশ করেন ফারহান।
‘লক্ষ্য’, ‘ডন- দ্য চেস বিগিন্স’ এবং ‘ডন ২- দ্য কিং ইজ় ব্যাক’ ছবিগুলির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ফারহান। ২০০৮ সালে ‘রক অন!!!’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
‘লাক বাই চান্স’, ‘কার্তিক কলিং কার্তিক’, ‘জ়িন্দেগি না মিলেগি দোবারা’, ‘ভাগ মিলখা ভাগ’, ‘শাদি কে সাইড এফেক্টস’, ‘দিল ধড়কনে দো’, ‘ওয়াজ়ির’, ‘রক অন ২’, ‘লখনউ সেন্ট্রাল’, ‘দ্য ফকির অফ ভেনিস’, ‘দ্য স্কাই ইজ় পিঙ্ক’ এবং ‘তুফান’ ছবিতে অভিনয় করেছেন ফারহান।
২০২৩ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায় ‘দ্য আর্চিজ়’। শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খান, শ্রীদেবীর কন্যা খুশি কপূর এবং অমিতাভ বচ্চনের নাতি অগস্ত্য নন্দ এই ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ফারহানের দিদি জ়োয়া। ‘দ্য আর্চিজ়’ ছবিতে একটি চরিত্রের নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছিলেন ফারহান। সম্প্রতি ‘ডন ৩’ ছবির পরিচালনার কাজ নিয়ে ব্যস্ত তিনি।
২০০৩ সালে ‘পাঁচ’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনা শুরু করেন অনুরাগ কশ্যপ। যদিও সেই ছবিটি মুক্তি পায়নি। তার পর ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’, ‘নো স্মোকিং’, ‘ডেভ ডি’, ‘রমন রাঘব ২.০’, ‘বম্বে ভেলভেট’, ‘মুক্কাবাজ’, ‘মনমরজ়িয়া’, ‘দ্যাট গার্ল ইন ইয়েলো বুট্স’, ‘দোবারা’, ‘গ্যাঙ্গস অফ ওয়াসেপুর’, ‘কেনেডি’র মতো বহু ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি। নিজের পরিচালিত একাধিক ছবিতে অভিনয় করতেও দেখা গিয়েছে অনুরাগকে।
২০০৬ সালে ‘গ্যাংস্টার’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন কঙ্গনা রানাউত। ‘উওহ লমহে’, ‘শাকা লাকা বুম বুম’, ‘লাইফ ইন অ্যা…মেট্রো’, ‘ফ্যাশন’, ‘রাজ়- দ্য মিস্ট্রি কন্টিনিউজ়’, ‘কাইট্স’, ‘তনু ওয়েড্স মনু’, ‘তনু ওয়েড্স মনু রিটার্নস’, ‘কুইন’, ‘কাট্টি বাট্টি’, ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অফ ঝাঁসি’, ‘রঙ্গুন’, ‘জাজমেন্টাল হ্যায় কয়া’, ‘তেজস’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় কঙ্গনাকে।
‘ইমার্জেন্সি’ নামের একটি ছবি মুক্তি পাবে কঙ্গনার। এই ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও করেছেন তিনি। ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অফ ঝাঁসি’ ছবিটির পরিচালনার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন কঙ্গনা। তিনি জানান, মান্ডি থেকে নির্বাচনে জিতলে অভিনয় ছেড়ে দেবেন । তাঁর দাবি, ফিল্মি দুনিয়ায় সব কিছুই নাকি ‘নকল’।
ধর্মেন্দ্রের পুত্র সানি দেওল অভিনেতা হিসাবে হিন্দি ফিল্মজগতে কেরিয়ার শুরু করেন। তবে ছবি পরিচালনা করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দিললাগি’ এবং ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঘায়েল ওয়ান্স এগেন’ ছবি দু’টি পরিচালনা করেন সানি। ছবি দু’টিতে অভিনয়ও করেছেন তিনি।
২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পল পল দিল কে পাস’ ছবিটির পরিচালকের আসনে ছিলেন সানি। এই ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় সানির পুত্র কর্ণ দেওলকে।
বলিউডের ‘ভাইজান’ সলমন খানের ভাই সোহেল খান। অভিনয় নয়, পরিচালনার মাধ্যমে বলিপাড়ায় কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৯৭ সালে অ্যাকশন ঘরানার ছবি ‘অওজ়ার’ মুক্তি পায়। এই ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন সোহেল। মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সলমন।
২০০২ সালে ‘ম্যায়নে দিল তুঝকো দিয়া’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন সোহেল। ‘ডরনা মানা হ্যায়’, ‘কৃষ্ণা কটেজ’, ‘ফাইট ক্লাব’, ‘হ্যালো’ এবং ‘টিউবলাইট’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় সোহেলকে।
একাধিক হিন্দি ছবির প্রযোজনার পাশাপাশি ‘প্যার কিয়া তো ডরনা কয়া’, ‘ম্যায়নে প্যার কিঁউ কিয়া’, ‘হ্যালো ব্রাদার’, ‘ম্যায়নে দিল তুঝকো দিয়া’, ‘জয় হো’ এবং ‘ফ্রিকি আলি’র মতো বহু ছবির পরিচালকের আসনে ছিলেন সোহেল।
বলিপাড়ার খ্যাতনামী অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম নাসিরুদ্দিন শাহ। শুধুমাত্র অভিনয় নয়, পরিচালনার ক্ষেত্রেও বিচরণ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইয়ুঁ হোতা তো কয়া হোতা’ ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন তিনি।