চলতি বছর যেন বলিপাড়ার দেওল পরিবারের ভাগ্য সোনায় মুড়ে দিয়েছে। জুন মাসে বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্রের নাতি, সানি দেওলের জ্যেষ্ঠ পুত্র কর্ণ দেওল সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন। দীর্ঘ সময় বড় পর্দা থেকে দূরে ছিলেন সানি। চলতি বছরের অগস্ট মাসে মুক্তি পেতে চলেছে সানির ছবি ‘গদর ২’। কিন্তু চমকের যে এখানেই শেষ নয়, তা বুঝিয়ে দিল দেওল পরিবার।
মঙ্গলবার রাজশ্রী প্রোডাকশনস প্রযোজনা সংস্থার তরফে মুক্তি পেয়েছে একটি হিন্দি ছবির প্রথম ঝলক। গভীর সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বসে রয়েছে দুই তরুণ-তরুণী। এ যে আদ্যোপান্ত একটি রোম্যান্টিক ছবি, তা প্রথম ঝলক থেকেই স্পষ্ট। কিন্তু এখানেও নজর কাড়লেন দেওল পরিবারের পুত্র।
সানির কনিষ্ঠ পুত্র রাজবীর দেওলের প্রথম ছবি ‘দোনো’। এই ছবিরই প্রথম ঝলক প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার। রাজবীরের বিপরীতে যে অভিনেত্রীকে দেখা যাচ্ছে, তিনিও তারকাসন্তান।
বলি অভিনেত্রী পুনম ধিলোঁর কন্যা পালোমা ধিলোঁর সঙ্গে কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে জুটি বাঁধতে চলেছেন রাজবীর। এমনকি ‘দোনো’ ছবির পরিচালকের আসনেও রয়েছে নতুন মুখ।
বলি পরিচালক সুরজ বরজাতিয়ার পুত্র অবনীশ বরজাতিয়া ‘দোনো’ ছবির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগে ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’, ‘উঁচাই’, ‘প্রেম কি শাদি’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন অবনীশ।
সব মিলিয়ে ‘দোনো’ ছবিটি তারকাসন্তানদের সম্মিলিত প্রয়াস। এই ছবি নিয়েই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন সানি। তিনি জানান, পুনমের কেরিয়ারে সানির সঙ্গে প্রথম ছবি ছিল ‘সোহনী মহিবাল’। (এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল পুনম ধিলোঁর কেরিয়ারের প্রথম ছবি ‘সোহনী মহিবাল’। এই তথ্য ভুল। পুনমের কেরিয়ারে সানির সঙ্গে প্রথম ছবি ছিল ‘সোহনী মহিবাল’। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।)
১৯৮৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘সোহনী মহিবাল’ ছবিটি। পুনমের এই ছবিতে সহ-অভিনেতা হিসাবে কাজ করেছিলেন সানি। সানির সঙ্গে পুনমের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে বলেও জানান অভিনেতা।
যে হেতু পুনম তাঁর কেরিয়ারে সানির সঙ্গে কাজ করেছিলেন, সে হেতু অভিনেতা চেয়েছিলেন সানির পুত্র এবং পুনমের কন্যাও একসঙ্গে বড় পর্দায় তাঁদের কেরিয়ার শুরু করুক। তাই নিজে থেকেই পুনমের কাছে সেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন সানি। অভিনেতার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান পুনম।
সানি জানান, রাজবীর যেমন খুব সহজেই তাঁর প্রথম ছবির নায়িকা খুঁজে পেয়েছেন, সানির জ্যেষ্ঠ পুত্র কর্ণের প্রথম ছবির নায়িকার সন্ধানের সময় হোঁচট খেতে হয়েছিল অভিনেতাকে।
সানির সঙ্গে বলিপাড়ায় কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বলি অভিনেত্রী অমৃতা সিংহ। ১৯৮৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি ‘বেতাব’। এই ছবি দিয়েই নিজেদের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দুই তারকা।
সানি চেয়েছিলেন, তাঁর পুত্র কর্ণের সঙ্গে যেন সারা আলি খান নিজের কেরিয়ার শুরু করেন। সইফ আলি খান এবং অমৃতা সিংহের কন্যা সারা। অমৃতার কন্যার সঙ্গেই কর্ণের কেরিয়ারের হাতেখড়ি করাতে চেয়েছিলেন সানি।
২০১৯ সালে সানির পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘পল পল দিল কে পাস’ ছবিটি। এই ছবির মাধ্যমেই বলিপাড়ায় নায়ক হিসাবে আত্মপ্রকাশ কর্ণের।
‘পল পল দিল কে পাস’ ছবিতে কর্ণের বিপরীতে নায়িকার চরিত্রের জন্য সারাকে পছন্দ করেছিলেন সানি। অমৃতার কাছে সে প্রস্তাবও রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সানির প্রস্তাবে রাজি হননি অভিনেত্রী।
সাক্ষাৎকারে সানি জানান, সারার জন্য প্রথম ছবির প্রস্তাব শোনার পর বিন্দুমাত্র সময় না নিয়ে সানির মুখের উপর মানা করে দেন অমৃতা। এমন আচরণে অবাক হয়েছিলেন সানি। কিন্তু অমৃতাকে কিছু বলেননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত ‘পল পল দিল কে পাস’ ছবিতে কর্ণের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় শহের বাম্বাকে।
২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অভিষেক কপূর পরিচালনায় ‘কেদারনাথ’ ছবিতে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বিপরীতে অভিনয় করে সারা তাঁর কেরিয়ার শুরু করেন।
অমৃতা যে সানির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তা নিয়ে বলিপাড়ায় জলঘোলা শুরু হয়েছে। নিজেদের কেরিয়ার শুরুর পাশাপাশি সানি এবং অমৃতা সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে কানাঘুষো শোনা যায়।
তবে সানির সঙ্গে অমৃতার প্রেম দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বলিপাড়ার অন্দরমহল সূত্রে খবর, সানি যে বিবাহিত তা আগে থেকে জানতেন না অমৃতা। সে খবর প্রকাশ্যে আসায় অমৃতার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় সানির।
বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, পুরনো প্রেম, তার পর বিচ্ছেদ— এ সব কারণেই নাকি সানির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অমৃতা। অভিনেত্রী চাননি যে প্রাক্তন প্রেমিকের পুত্রের সঙ্গে তাঁর কন্যা নিজের কেরিয়ার শুরু করুক। তবে অমৃতা ঠিক কেন সানির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।