সলমন খান এবং ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় চর্চার অন্ত নেই। কারও মতে, ঐশ্বর্যা সম্পর্কে ইতি টানার কারণেই সলমন এখনও ‘সদা সিঙ্গল’-এর তকমা ছেড়ে বেরতে পারেননি। অনেকে আবার মনে করেন, সলমনের অত্যধিক রাগ এবং অধিকারবোধের কারণেই নাকি দু’জনের বিচ্ছেদ হয়। তবে, ঐশ্বর্যার সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন যে সলমনের সঙ্গে বলিপাড়ার এক বিখ্যাত পরিচালকের মধ্যে অশান্তি, হাতাহাতি হয়েছিল, সে কথা জানেন না অনেকেই।
২০০১ সালে বলিপাড়ার এক তারকাখচিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সলমন। সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন বলিপাড়ার পরিচালক সুভাষ ঘাইও।
সেই সময় টিনসেল নগরীতে কানাঘুষো শোনা যায় যে, সুভাষ তাঁর ছবিতে যে অভিনেত্রীর সঙ্গেই কাজ করেন, তাঁর সঙ্গেই নাকি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এই কথা সলমনের কানে পৌঁছতেও দেরি হয় না।
সলমন কোনও ভাবেই চাননি যে, সুভাষের সঙ্গে ঐশ্বর্যার নাম জড়িয়ে পড়ুক। ১৯৯৯ সালে সুভাষ পরিচালিত ‘তাল’ ছবিতে অনিল কপূর এবং অক্ষয খন্নার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন ঐশ্বর্যা।
পার্টিতে সলমন এবং সুভাষের দেখা হওয়ার পর দু’জনে একে অপরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু বার্তালাপ এগোতেই শুরু হয় কথা কাটাকাটি। কথাবার্তার মাঝে হঠাৎই সুভাষের গালে চ়়ড় বসিয়ে দেন অভিনেতা।
কানাঘুষো শোনা যায় যে, সুভাষ এবং সলমনের মধ্যে ঐশ্বর্যাকে নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়। সলমন তাঁর প্রেমিকার কাছ থেকে সুভাষকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলেন। কিন্তু সেই সময় ঐশ্বর্যাকে নিয়ে সুভাষ এমন এক মন্তব্য করেন, যা শুনে নিজেকে সামলাতে পারেননি সলমন।
রাগের বশে সুভাষের গালে চড় বসিয়ে দেন সলমন। তার পর সেই পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে যান। সুভাষের সঙ্গে সলমনের ঝামেলার কথা জানতে পারেন সলমনের বাবা সেলিম খান।
জানামাত্রই সুভাষকে ফোন করে ক্ষমা চান সেলিম। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে সুভাষ জানান, ঘটনার পরের দিন সকালেই সেলিম তাঁকে ফোন করে সলমনের তরফে ক্ষমা চান। এমনকি, সলমনকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সুভাষের বাড়ি পাঠাবেন বলেও ফোনে জানান সেলিম।
সলমনকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি কখনও কারও গায়ে হাত ওঠাই না। কাউকে খারাপ কথা বলি না। কিছু হলে আমি নিজের মাথা দেওয়ালে ঠুকে নিজেকে আঘাত করি। কিন্তু অন্যকে আঘাত করার চিন্তা আমার মাথাতেই আসে না।’’
সলমনের দাবি, রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরেই সুভাষকে চড় মেরেছিলেন সলমন। এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত দুঃখিত এবং লজ্জিত বলেও জানান সলমন।
সলমন বলেন, ‘‘আমাকে প্রথমে চামচ ছুড়ে মারা হয়েছিল।তার পর আমার মুখে প্লেট ভাঙা হয়। আমি চুপ করেছিলাম। পরে আমার জুতোর উপর প্রস্রাব করে গলা চেপে ধরা হয়। তখন আর নিজেকে সামলাতে পারিনি আমি।’’
ফোনে ক্ষমা চাওয়ার পরেই সুভাষের বাড়িতে সলমনকে পাঠান সেলিম। সুভাষ বলেন, ‘‘সেলিমের ফোনের এক ঘণ্টা পরেই দেখি সলমন আমার সামনে হাজির। বাচ্চারা দোষ করার পর যে ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, সলমনও সে ভাবে দাঁড়িয়েছিল।’’
আগের দিন রাতে ঠিক কী হয়েছিল তা সলমনকে জিজ্ঞাসা করেন সুভাষ। সুভাষের প্রশ্নে সলমন উত্তরে বলেন, ‘‘বাবা আসতে বলেছিলেন বলেই আমি এখানে এসেছি।’’
সুভাষ পাল্টা সলমনকে প্রশ্ন করেন যে, তিনি আদৌ দুঃখবোধ করছেন কি না? সলমন জানান যে, তিনি অত্যন্ত দুঃখিত বলেই সুভাষের কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছেন।
ক্ষমা চাওয়ার পরেও সুভাষ এবং সলমন বহু দিন একে অপরের সঙ্গে স্বাভাবিক বার্তালাপে যাননি। ঘটনার সাত বছর পর একসঙ্গে কাজ করতে দেখা যায় সলমন এবং সুভাষকে।
সুভাষের পরিচালনায় ‘যুবরাজ’ ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সলমন। তাঁর বিপরীতে নায়িকার চরিত্রে কাজ করতে দেখা যায় ক্যাটরিনা কইফকে।
এ ছাড়াও বোমান ইরানি, অনিল কপূর এবং জায়েদ খানের মতো অভিনেতা ‘যুবরাজ’ ছবিতে অভিনয় করেন। তবে বক্স অফিসে এই ছবি ব্যবসা করতে পারেনি। সুভাষ এবং সলমনকেও একসঙ্গে আর কাজ করতে দেখা যায়নি।