গুরুত্ব বাড়ছে জন্মের শংসাপত্রের (বার্থ সার্টিফিকেট)। ১ অক্টোবর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিয়ের নথিভুক্তির আবেদন থেকে শুরু করে ড্রাইভিং লাইসেন্স, সরকারি চাকরির নিয়োগ— যে কোনও সরকারি ক্ষেত্রের সুবিধা পেতে হলে এই নথি দেখালেই হবে।
অর্থাৎ, ১ অক্টোবর থেকে যে কোনও সরকারি পরিষেবা পেতে শুধুমাত্র জন্মের শংসাপত্রই যথেষ্ট হবে।
ভোটার কার্ডের তালিকা প্রস্তুতি এবং আধার নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রেও জন্মের শংসাপত্রকেই প্রামাণ্য নথি হিসাবে গণ্য করা হবে।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন (সংশোধনী) আইন, ২০২৩ কার্যকর করার তারিখ ঘোষণা করে বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সরকারের এই নতুন উদ্যোগ আরও দক্ষ এবং স্বচ্ছ ভাবে মানুষকে সরকারি পরিষেবা পেতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি, জনগণকে আরও ভাল ভাবে সামাজিক সুবিধা এবং ডিজিটাল নথিভুক্তিকরণেও সাহায্য করবে এই নতুন সিদ্ধান্ত।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘জন্ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন (সংশোধন) আইন, ২০২৩-এর ধারা প্রয়োগ করে কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর তারিখ থেকে এই নিয়ম কার্যকর করছে।’’
চলতি বছরের বাদল অধিবেশন চলাকালীন, গত মাসে সংসদের উভয় কক্ষে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন (সংশোধনী) বিল, ২০২৩ পাশ করানো হয়েছে। লোকসভায় এই বিল পাশ হয় ১ অগস্ট। রাজ্যসভায় ৭ অগস্ট ধ্বনিভোটে বিলটি পাশ হয়।
এই আইন অনুযায়ী, জন্ম ও মৃত্যুর নথিভুক্তিকরণ করা বাধ্যতামূলক। ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলকেও জন্ম-মৃত্যুর জাতীয় রেজিস্ট্রি দেখাশোনা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য সরকারের রেজিস্ট্রারদেরও জন্ম ও মৃত্যুর জাতীয় রেজিস্ট্রিতে তথ্য জমা দিতে হবে। রাজ্য স্তরের প্রধান রেজিস্ট্রারকে সেই তথ্যগুলি সঠিক ভাবে বজায় রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আগে নির্দিষ্ট কয়েক জনকে জন্ম এবং মৃত্যুর খতিয়ান রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিতে হত।
উদাহরণস্বরূপ, হাসপাতালে কোনও শিশুর জন্ম হলে সেই শিশুর জন্ম সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার দায়িত্ব সেই হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারের উপর থাকত। জেল, হোটেল বা লজে কোনও শিশুর জন্ম হলেও, এই নিয়ম প্রযোজ্য ছিল। এ সব ক্ষেত্রে জেলার এবং হোটেল ম্যানেজারকে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করতে হয়।
তবে এখন থেকে শিশুদের পাশাপাশি অভিভাবকদের আধার নম্বরও ডেটাবেসে জমা দিতে হবে।
নতুন আইনের অধীনে, তালিকাটি আরও প্রসারিত করা হয়েছে। কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়া বাবা-মা, সারোগেসি পদ্ধতিতে জন্মের ক্ষেত্রে বাবা-মা এবং অবিবাহিত মায়ের নামও রেজিস্ট্রারের কাছে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
নতুন আইনটি কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে জনসংখ্যা নিবন্ধন, ভোটার তালিকা প্রস্তুতকারী দফতর এবং অন্যান্য সরকারি দফতরকে জন্ম-মৃত্যুর ডেটাবেস ভাগ করে নেওয়ার অনুমতি দেয়।
একইভাবে, রাজ্যের ডাটাবেস ও রাজ্য সরকারের অনুমোদনের সাহায্য অন্যান্য দফতরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যাবে।
আইন অনুসারে, রেজিস্ট্রার বা জেলা রেজিস্ট্রারের যে কোনও পদক্ষেপ বা আদেশে সম্মত না হলে কোন ব্যক্তি যথাক্রমে জেলা রেজিস্ট্রার বা মুখ্য রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন করতে পারবেন। এই ধরনের কোনও আবেদন আদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে।
জেলা রেজিস্ট্রার বা মুখ্য রেজিস্ট্রারকে আবেদন পাওয়ার দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।