মিজ়োরামে বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরে যথেষ্ট রদবদল হয়েছে রাজনৈতিক মানচিত্রে। এ বারের ভোটে তাক লাগিয়েছেন ব্যারিল ভান্নেইসাঙ্গি। সে রাজ্যে মোট ৩ জন মহিলা বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন, তার মধ্যে তিনিও এক জন। শুধু তাই নয়, মিজ়োরাম বিধানসভায় তিনিই এ বার সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক।
শিক্ষার মাপকাঠিতে মিজ়োরাম দেশের এক নম্বরে। মিজ়োরামের তরুণ তরুণীদের কাছে তাঁর খ্যাতি ঈর্ষণীয়। বেতার ঘোষকের পেশার পাশাপাশি, তাঁর কণ্ঠ এ বার পৌঁছে যাবে বিধানসভাতেও। সেই রাজ্যে কোনও মহিলা রেডিয়ো জকি বা বেতার ঘোষকের রাজনীতিতে এমন সাফল্য নজিরবিহীন।
আর এই জনপ্রিয়তার ভর করেই নির্বাচনী লড়াইয়েও সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন ব্যারিল। জ়োরাম পিপলস্ মুভমেন্ট (জ়েডপিএম)-এর প্রার্থী হিসাবে আইজল দক্ষিণ-৩ কেন্দ্রে ১,৪১১ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। ব্যারিলের দলও এ বার ৪০ আসনের মিজ়োরাম বিধানসভায় ২৭টি আসন পেয়ে ক্ষমতা দখল করেছে।
ব্যারিল সবার কাছেই চেনা মুখ। শুধু ইনস্টাগ্রামেই তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ২ লক্ষ ৫২ হাজার। এই রাজনৈতিক সাফল্য দিয়ে মিজ়োরামের মহিলাদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
মিজ়োরামের বিধানসভা ভোটে এ বার বিভিন্ন দল থেকে মোট ১৭৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তার মধ্যে মাত্র ১৬ জন ছিলেন মহিলা। তাঁদের মধ্যে জয়ের মুখ দেখেছেন ব্যারিল-সহ তিন জন।
নিজের এবং দলের জয় স্পষ্ট হতেই নারীদের অধিকার এবং ক্ষমতায়ন নিয়ে সুদীর্ঘ বক্তব্য পেশ করেন তিনি। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি একটা কথাই মেয়েদের বলব যে, আপনাদের লিঙ্গ পরিচয় কখনও আপনার ইচ্ছাকে বাধা দিতে পারে না। আপনি কোন সমাজে বাস করছেন, কোন পরিচয়ে বাঁচছেন, সেটা বড় কথা নয়। আপনি যদি মনে করেন, কাজটা করবেন, তবে সেটার জন্য মনোনিবেশ করুন।”
ব্যারিল শিলংয়ের নর্থ ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তরের পাঠ শেষ করে টেলিভিশন এবং রেডিয়োর সঞ্চালক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন।
তার পর অবশ্য আইজল পুরসভার কাউন্সিলর হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ব্যারিলের জয় লিঙ্গসাম্য নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দেবে বলে মনে করছেন সে রাজ্যের অনেকেই।