বলিপাড়ার প্রথম সুপারস্টার বলে কথা! সত্তর থেকে আশির দশকে অভিনেতাদের মধ্যে সর্বাধিক উপার্জনকারীদের মধ্যে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে ফেলেছিলেন রাজেশ খন্না।
কিন্তু কেরিয়ারের ধাপে রাজেশ যত বেশি সিঁড়ি চড়়েছেন, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও তত বেশি বিতর্ক-আলোচনা-সমালোচনা দানা বেঁধেছে। এমনকি অভিনেতার মৃত্যুর পরেও তাঁর পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি হয়েছে।
২০১২ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় রাজেশের। অভিনেতার মৃত্যুর পর টিনসেল নগরীর বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অনিতা আডবাণী দাবি করেন, তিনি রাজেশের ‘সারোগেট’ স্ত্রী ছিলেন।
অনিতার দাবি, রাজেশকে তিনি বিয়ে করেননি। কিন্তু সাত-আট বছর অভিনেতার সঙ্গে একত্রবাস করেছিলেন। অনিতা বলেন, ‘‘আমি ওর জন্য ব্রত রাখতাম। স্ত্রী হিসাবে যা কর্তব্য করা প্রয়োজন, আমি রাজেশের জন্য সব করেছিলাম।’’
রাজেশের মৃত্যুর পর ‘বিগ বস্’ রিয়্যালিটি শোয়ে প্রতিযোগী হিসাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন অনিতা। শোয়ে এসে তিনি জানান, রাজেশের মৃত্যুর পর তিনি একা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ‘বিগ বস্’-এ গিয়ে তিনি মনের শান্তি খুঁজে পেয়েছেন।
রাজেশের মৃত্যুর পর অভিনেতার বাড়িতে সম্পত্তির জন্য আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন অনিতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘একত্রবাস করতাম। স্ত্রীর মতো থাকতাম। ও যখন মানসিক অবসাদে ডুবেছিল, তখন ওর পাশে থেকেছি। ওর পরিবার কোথায় ছিল তখন? আর কী ভাবে প্রমাণ দেব আমি?’’
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, রাজেশের প্রাক্তন স্ত্রী ডিম্পল কপাডিয়া এবং তাঁর জামাই অক্ষয় কুমার দু’জনেই অনিতাকে তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। এমনকি রাজেশের সঙ্গে অনিতার পরকীয়া সম্পর্কও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে বলিপাড়ার একাংশের অনুমান।
সত্তর থেকে আশির দশকে পুরুষ অনুরাগীর পাশাপাশি বহু মহিলা অনুরাগীও ছিল রাজেশের। বলিপাড়ার একাধিক অভিনেত্রীর সঙ্গেও নাম জড়িয়েছিল তাঁর। অঞ্জু মহেন্দ্রুর সঙ্গে রাজেশের সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, বলি অভিনেতা ঋষি কপূরের সঙ্গে ডিম্পলের ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠলেও সে সম্পর্ক কোনও পরিণতি পায়নি। তার পর রাজেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ডিম্পলের। বন্ধুত্বের গণ্ডি পেরিয়ে একে অপরকে ভালবেসে ফেলেন তাঁরা।
১৯৭৩ সালে রাজেশের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন ডিম্পল। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক সুখের হয়নি। সাফল্যের শীর্ষে থাকা রাজেশের কেরিয়ারের রেখচিত্রও ধীরে ধীরে নিম্নগামী হতে শুরু করে। মদের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়ে তাঁর।
বলিপাড়ার অন্দরমহলের খবর, অভিনেত্রী টিনা মুনিমের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রাজেশ। পরকীয়া সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে রাজেশের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন ডিম্পল।
১৯৮২ সালে রাজেশের বাড়ি ‘আশীর্বাদ’ ছেড়ে চলে যান ডিম্পল। তার পরেই রাজেশের জীবনে প্রবেশ ঘটে অনিতার। রাজেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভূপেশ রাসিনের পুত্র হর্ষ রাসিনের দাবি, অনিতাকে তিনি রাজেশের বাড়িতে বহু দিন দেখেছেন। কিন্তু তাঁরা কোনও সম্পর্কে ছিলেন না। এমনকি অনিতার সঙ্গে সম্পর্কের কথা জীবদ্দশায় স্বীকার করেননি রাজেশ নিজেও।
রাজেশের মৃত্যুর ১০ বছর পর এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেন অনিতা। তিনি জানান, মৃত্যুর পরেও প্রতি মুহূর্তে রাজেশের কথা মনে করেন।
অনিতা বলেন, ‘‘ও আমাকে ছেড়ে যায়নি। এখনও আমার স্মৃতিতে বেঁচে রয়েছে রাজেশ। আসলে ও বাইরে এক রকম এবং বাড়িতে অন্য রকম মানুষ ছিল।’’
সাক্ষাৎকারে অনিতা বলেন, ‘‘দিনের বেলায় ও রাজার মতো হাবভাব নিয়ে থাকত। কিন্তু সূর্যাস্তের পর ওর অন্য রূপ। নিজের মতো হাসত, গান করত। আসলে ওর মন বাচ্চাদের মতো ছিল।’’