দেশে লোকসভা আসনের সংখ্যা ৫৪৩। সেই আসনে ৪৯ জন প্রার্থীর উপর নজর ছিল আনন্দবাজার অনলাইনের। তাঁরা কেমন ফল করলেন? কত জন জয়ী হলেন আর কত জন পরাজিত?
তালিকায় প্রথম নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪, ২০১৯ সালের পর ২০২৪ সালেও উত্তরপ্রদেশের বারাণসী লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। জয়ের হ্যাটট্রিকও করে ফেললেন মোদী।
মোদীর ‘ডানহাত’ বলে পরিচিত তিনি। মন্ত্রিসভাতেও দ্বিতীয়। দেশের বিদায়ী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লড়ছেন গুজরাতের গান্ধীনগর কেন্দ্রে। গত বার গান্ধীনগর থেকে ৫ লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন। এ বারও জয়ী তিনি।
রাহুল গান্ধী এ বার লড়েছেন দু’টি আসনে। কেরলের ওয়েনাড় এবং উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলী আসনে। এই রায়বরেলী আসনে সাংসদ ছিলেন সনিয়া গান্ধী। দু’টি আসনেই জয়ী রাহুল।
বহরমপুরে এ বার প্রার্থী অধীররঞ্জন চৌধুরী। নজর ছিল তাঁর উপরেও। ১৯৯৯ সাল থেকে ওই আসনে কংগ্রেসের টিকিটে জিতছেন অধীর। কিন্তু এ বার ব্যর্থ হলেন। হেরে গেলেন অধীর।
ডায়মন্ড হারবারের প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও ওই আসন থেকে জিতে লোকসভায় গিয়েছিলেন অভিষেক। এ বারও জয়ের ধারা অব্যাহত। তৃতীয় বার ওই কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হলেন অভিষেক।
২০১৯ সালে নদিয়ার কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে জিতেছিলেন মহুয়া মৈত্র। গত ডিসেম্বরে বহিষ্কৃত হন তিনি। ২০২৪ সালের ভোটে ওই আসনেই ফের প্রার্থী মহুয়া। জয়ী এ বারও।
মুর্শিদাবাদে সিপিএমের প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। ২০১৯ সালে রায়গঞ্জে প্রার্থী হয়ে হেরেছিলেন তিনি। এ বারের লোকসভা নির্বাচনেও পরাজিত তিনি।
বালুরঘাটে বিজেপির প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির রাজ্য সভাপতিও বটে। ২০১৯ সালেও ওই আসন থেকে জিতেছিলেন তিনি। জয়ী হয়েছেন।
বর্ধমান দুর্গাপুরে বিজেপির প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। ২০১৯ সালে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে সংসদে গিয়েছিলেন। এ বার হেরে গেলেন।
লখনউ থেকে বিজেপির প্রার্থী রাজনাথ সিংহ। দেশের বিদায়ী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। লখনউ কেন্দ্র থেকে জয়ী তিনি।
স্মৃতি ইরানি প্রার্থী উত্তরপ্রদেশের অমেঠীতে। ওই কেন্দ্রেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে হারিয়েছিলেন রাহুল গান্ধীকে। এ বারও তিনিই প্রার্থী হয়েছিলেন সেখানে। যদিও জিততে পারেননি।
কনৌজ থেকে প্রার্থী হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। তিনি সমাজবাদী পার্টির প্রধানও। জয়ী হয়েছেন তিনি।
নাগপুর লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী বিদায়ী সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গড়করী। আবারও জয়ী হলেন তিনি।
মানেকা গান্ধী প্রার্থী উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে। বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়েছেন তিনি। যদিও তাঁর পুত্র বরুণ গান্ধীকে এ বার টিকিট দেয়নি বিজেপি। হেরে গিয়েছেন।
ঘাটালে তৃণমূলের প্রার্থী দীপক অধিকারী, যিনি পরিচিত দেব নামে। নায়ক দেব ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে ওই আসন থেকে জিতেছেন। এ বারও বজায় থাকল জয়ের ধারা। আবার সাংসদ হলেন দেব।
বসিরহাটে বিজেপির প্রার্থী রেখা পাত্র। সন্দেশখালিতে প্রতিবাদের অন্যতম ‘মুখ’ ছিলেন তিনি। জয়ী হতে পারেননি রেখা।
ব্যারাকপুরে বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিংহ। তিনি ভোটের আগে টিকিটের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। যদিও জয় অধরাই থাকল।
হুগলিতে বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও ওই আসন থেকে জিতেছিলেন তিনি। তবে এ বার জয় অধরাই থাকল।
কোচবিহারে বিজেপির প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। গত বার ভোটে জিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন। এ বার যদিও জিততে পারেননি। তৃণমূলের জগদীশ বসুনিয়ার কাছে পরাজিত।
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী সায়নী ঘোষ। এই প্রথম বার লোকসভা ভোটে লড়েছেন তিনি। প্রথম বার লড়েই জিতেছেন ভোটে।
কলকাতা উত্তরে তৃণমূলের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ওই আসনেই প্রার্থী ছিলেন তিনি। এ বারও জয়ী।
কলকাতা উত্তর আসনে বিজেপির প্রার্থী তাপস রায়। ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। চলতি লোকসভা ভোটে হেরেছেন তিনি।
বনগাঁয় বিজেপির প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। বিদায়ী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এ বারও জয়ী হলেন।
আসানসোল লোকসভা আসনে তৃণমূলের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা। বিপক্ষকে ‘খামোশ’ করালেন নায়ক। জয়ী হলেন তিনি।
শতাব্দী রায় প্রার্থী হয়েছেন বীরভূমে। লড়াই করেছেন তৃণমূলের টিকিটে। ২০০৯ সাল থেকে তিনি ওই আসনের সাংসদ। এ বারও জয়ী হলেন।
মেদিনীপুরে তৃণমূলের প্রার্থী জুন মালিয়া। তিনি রাজ্যের বিধায়কও। প্রথম বার লোকসভা ভোটে লড়ে জয়ী তিনি।
মেদিনীপুরে বিজেপির প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। তিনিও রাজ্যের বিধায়ক। তবে সাংসদ হচ্ছেন না। পরাজিত হয়েছেন তিনি।
সৌগত রায় দমদমে তৃণমূলের প্রার্থী। চার বার সাংসদ হয়েছেন তিনি। এ বারও জয়ী হয়েছেন। পঞ্চম বার যাচ্ছেন সংসদে।
বারাসতে তৃণমূলের প্রার্থী হলেন কাকলি দস্তিদার। ওই আসনে গত বারও জিতেছিলেন তিনি। জয়ের ধারা বজায় রইল। জয়ী এ বারও।
কলকাতা দক্ষিণে তৃণমূলের প্রার্থী মালা রায়। তিনি ওই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ। এ বারও ওই আসন থেকে জয়ী হয়েছেন।
শ্রীরামপুরে তৃণমূলের প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারও জয়ী হয়েছেন তিনি। এই নিয়ে টানা চার বার ওই কেন্দ্রের সাংসদ হলেন তিনি।
দমদমে সিপিএমের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। তিনি যাদবপুরের প্রাক্তন সাংসদ ছিলেন। এ বার ভোটে পরাজিত।
হুগলিতে তৃণমূলের প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রথম ভোটের ময়দানে ‘দিদি নম্বর ১’-শোয়ের সঞ্চালিকা তথা নায়িকা। প্রথম বারই জয়ী হলেন।
মালদহ দক্ষিণে কংগ্রেসের প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী। তিনি জয়ী হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে এই একটিই আসন কংগ্রেস পেয়েছে।
ঘাটাল লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। অতীতে তৃণমূলে ছিলেন তিনি। পরে যোগ দেন বিজেপিতে। এখন তিনি সে দলের বিধায়ক। তবে সংসদে যাওয়া হচ্ছে না হিরণের। পরাজিত হয়েছেন তিনি।
হাওড়া লোকসভা আসনে তৃণমূলের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিদায়ী সাংসদও। এ বারও ওই আসনে জয়ী তিনি।
বহরমপুর লোকসভা আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ইউসুফ পাঠান। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। প্রথম বার লড়াই করে জয়ী ‘পিঞ্চ হিটার’ ইউসুফ।
আসানসোলে বিজেপির প্রার্থী এসএস অহলুওয়ালিয়া। গত বার তিনি বর্ধমান- দুর্গাপুর আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন। এ বার পরাজিত।
শ্রীরামপুর লোকসভা আসনে সিপিএমের প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। জেএনইউয়ের প্রাক্তনী তিনি। এ বার পরাজিত হয়েছেন।
বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী কীর্তি আজ়াদ। তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলে খেলেছেন। এ বার খেলার পালা লোকসভায়। জয়ী হয়েছেন তিনি।
যাদবপুর লোকসভা আসনে সিপিএমের প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। তিনি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিঙ্গুর আসনে লড়েছিলেন। হেরেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনে তিনি পরাজিত।
তমলুকে বিজেপির প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। লোকসভা ভোটে লড়াই করে জয়ী হয়েছেন তিনি।
তমলুকে সিপিএমের প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পেশায় আইনজীবী। চলতি লোকসভা ভোটে হেরে গিয়েছেন তিনি।
বিদিশায় বিজেপির প্রার্থী শিবরাজ সিংহ চৌহান। তিনি মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এ বার জয়ী হয়েছেন লোকসভা ভোটে।
রাজগড় লোকসভা আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী দিগ্বিজয় সিংহ। তিনি মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। লোকসভা ভোটে হেরে গেলেন তিনি।
কাশ্মীরের অনন্তনাগ-রাজৌরিতে পিডিপির প্রার্থী মেহবুবা মুফতি। হেরে গিয়েছেন তিনি।
কাশ্মীরের বারামুল্লায় জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রার্থী ওমর আবদুল্লা। হেরে গিয়েছেন তিনি।
কর্নাটকের মাণ্ড্য লোকসভা আসনে জেডিএসের প্রার্থী এইচডি কুমারস্বামী। জয়ী হয়েছেন তিনি।
কর্নাটকের হাসন লোকসভা আসনে জেডিএসের প্রার্থী প্রজ্বল রেভান্না। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। পরাজিত হয়েছেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত।