সমাজমাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়। ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম খুললেই কোনও না কোনও মিমে তাঁর মুখ এক বার না এক বার দেখা যাবেই। সমাজমাধ্যমে তিনি পরিচিত জ়েভিয়ার নামে। কিন্তু তিনি কে, কোথায় থাকেন, কী করেন— তা বেশির ভাগ মানুষেরই অজানা।
ফেসবুক-ইনস্টায় তাঁকে নিয়ে মিম ছেয়ে গেলেও সাধারণ মানুষের কাছে জ়েভিয়ার এখনও এক রহস্যময় ব্যক্তি।
জ়েভিয়ারের আসল নাম পাকালু পপিতো। মিম নির্মাতা পাকালু অবশ্য জ়েভিয়ার নামেই পরিচিত।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকালু ভারতীয় বংশোদ্ভূত। দীর্ঘ দিন মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে থাকেন। আর ভারতে ফিরে আসেননি। মিনিয়াপোলিসে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন পাকালু।
লাজুক প্রকৃতির পাকালু ২০১৩ সালের জুলাই মাসে টুইটারে (বর্তমানে এক্স) অ্যাকাউন্ট খোলেন। একের পর এক মজার টুইট পোস্ট করা শুরু করেন। তাঁর পোস্টগুলি দ্রুত ভাইরাল হতেও শুরু করে।
সাড়া পাচ্ছেন দেখে ফেসবুকেও অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি। সেখানেও মজার মজার পোস্ট করতে শুরু করেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্ধুদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে টুইটারে যোগ দিয়েছিলেন পাকালু। পাকালুর বন্ধুরা চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, টুইটারে যদি তাঁর পাঁচ হাজার ফলোয়ার হয়, তা হলে তাঁকে ১০ হাজার ডলার দেবেন তাঁরা।
২০১৫ সালে টুইটারে পাকালুর ফলোয়ারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ লক্ষ। ফেসবুকে ফলোয়ারের সংখ্যা ৫ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়ে যায়। বন্ধুদের সঙ্গে ধরে জেতা বাজির টাকায় একটি গ্যাস স্টেশন কিনে ফেলেন পাকালু।
তবে কোনও কারণে তাঁর ওই দুটো অ্যাকাউন্টই ব্লক করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তত দিনে তাঁর পোস্টগুলির স্ক্রিনশট সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছড়াতেও শুরু করেছে ঝড়ের গতিতে।
এর পর পাকালু আর কোনও অ্যাকাউন্ট না খুললেও টুইটার এবং ফেসবুকে তাঁর নামে অনেক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়। তাঁর ছবি ব্যবহার করে শুরু হয় মজার মজার পোস্ট করা। তার মধ্যেই একটি অ্যাকাউন্টের নাম দেওয়া হয় জ়েভিয়ার।
ব্যস, সেই অ্যাকাউন্টটি জনপ্রিয় হতেই পাকালু হয়ে যান জ়েভিয়ার। তবে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর নাকি আরও একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করেন পাকালু। মূলত মিম পোস্ট করা শুরু করেন।
সেই অ্যাকাউন্টটিও অচিরেই জনপ্রিয়তা লাভ করে। ইতিমধ্যেই ফেসবুক পেজটির ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় আট লক্ষে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু জীবনে এত রসবোধ কোথা থেকে পান জ়েভিয়ার? এক সংবাদমাধ্যমে তিনি এক বার বলেছিলেন, “সমস্ত কৃতিত্ব আমার। আমার রসবোধ স্বাভাবিক ভাবেই আসে। আমার বাবাও মজার মানুষ ছিলেন।”
পাকালু আরও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে তাঁর মজার মজার লেখা বই আকারে ছাপাতে চান তিনি।
তবে সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের একাংশের মতে, জ়েভিয়ারের নাম পাকালু পপিতো নয়। যাঁর ছবি ‘জ়েভিয়ার’ নাম দিয়ে বিভিন্ন মিমে ব্যবহার করা হয়, তিনি কানপুর আইআইটির এক জন কর্মী। নাম ওমপ্রকাশ। যদিও এই তথ্য সঠিক কি না তা জানা যায় না।