দিল্লির এক জন আইনজীবী দাবি করেছেন যে, মোবাইলের সিম অদলবদল করে ৫০ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই আইনজীবী একটি অজানা নম্বর থেকে তিনটি মিসড কল পেয়েছিলেন।
এর পর তিনি ঘুরিয়ে ওই নম্বরে ফোন করার পর ফোনের ও পার থেকে বলা হয়, কুরিয়ারের জন্য তাঁকে ফোন করা হয়েছে। আইনজীবীর কাছ থেকে তাঁর বাড়ির ঠিকানাও নিয়ে নেওয়া হয়।
ব্যক্তিগত আরও তথ্য বিস্তারিত ভাবে ভাগ করে নেওয়ার পরেই ওই ৩৫ বছর বয়সি মহিলা আইনজীবীর ফোনে দু’টি মেসেজ আসে।
দেখা যায়, ওই আইনজীবীর অ্যাকাউন্ট থেকে তোলা হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।
তদন্ত করতে গিয়ে প্রাথমিক ভাবে হতবাক হয়ে যান তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকেরাও। তাঁরা দেখেন, ওই মহিলা প্রতারকদেরকে কোনও ওটিপি দেননি। তা হলে কী ভাবে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ লক্ষ লোপাট হল?
পরে আরও তদন্ত করে দেখা যায়, ওই আইনজীবী আসলে সিম অদলবদল কেলেঙ্কারি (সিম সোয়াপিং স্ক্যাম)-এর শিকার। সিম অদলবদল কেলেঙ্কারি বা জালিয়াতি আসলে কী?
প্রথমে প্রতারকেরা কারও সিম কার্ডের নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করেন। এর পর সিম কার্ডের নেটওয়ার্কে কারচুপি করে সেই ফোন নম্বর নিজেদের কাছে থাকা সিম কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করে ফেলা হয়।
এক বার যদি প্রতারকেরা কারও ফোন নম্বরের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায়, তা হলে তারা সেই নম্বরে ফোন করে বা মেসেজ পাঠায়।
ফোন বা মেসেজের পর যদি পাল্টা ফোন বা মেসেজ আসে তা হলে, যিনি ফোন করছেন, তাঁর মোবাইলটিও প্রতারকদের নাগালে চলে আসে। ফলে হ্যাকড হয়ে যাওয়া ফোনে যে মেসেজ আসে, সেই একই মেসেজ প্রতারকের ফোনেও আসে। সহজেই ব্যাঙ্কের পাঠানো ওটিপিও চলে আসে প্রতারকদের কাছে।
প্রতারকদের প্রতারণা করার প্যাঁচ-পয়জর যেমন আছে, তেমনি সেখান থেকে মুক্তির উপায়ও আছে। কী ভাবে সিম অদলবদল কেলেঙ্কারি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে?
প্রাথমিক ভাবে, ফোনে এমন কারও সঙ্গে কথা বলা উচিত নয় যাঁর সঙ্গে কথা বলতে ভাল লাগছে না বা কথা বলে সুবিধের ঠেকছে না।
যদি সিম কার্ড লক করা থাকে বা সিম কার্ডের বৈধতা সংক্রান্ত কোনও বার্তা আসে, তা হলে তৎক্ষণাৎ পরিষেবা প্রদানকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নম্বরটি ব্লক করা উচিত।
ফোনে যদি সিম লকের সুবিধা থাকে, তা হলে সেটি করে রাখাই শ্রেয়। সিম কার্ডের বৈধতা সংক্রান্ত বার্তা পেলে ইউপিআই এবং ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংও ব্লক করা উচিত।
প্রতারকদের ঠেকাতে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে থাকা উচিত। পাশাপাশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও নিয়মিত নজরে রাখা উচিত।
অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোপাট হলে অতি সত্বর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
টাকা লেনদেনের অ্যাপ পেটিএম-এর প্রতিষ্ঠাতা বিজয় শেখর শর্মা সম্প্রতি বলেন ফোন বা ফোন নম্বরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাসওয়ার্ড। তবে এলেবেলে পাসওয়ার্ড দিলেও হবে না।