আর কে নারায়ণের ‘মালগুডি ডেজ’ মনে পড়ে? কোথায় সেই গ্রাম, তার উত্তর লেখককে দিতে হয়েছে শেষ জীবন পর্যন্ত। ‘পঞ্চায়েত’-এর ‘ফুলেরা’ গাঁও-ও ঠিক তেমন। বর্তমানে ‘পঞ্চায়েত ২’ বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। প্রথম পর্ব মুক্তি পাওয়ার প্রায় দু’বছর পর ওটিটি প্ল্যটফর্মে মুক্তি পেল ‘পঞ্চায়েত’-এর দ্বিতীয় পর্ব।
এই ওয়েব সিরিজের প্রতিটি চরিত্র কৌতুক ও নাটকীয়তায় পূর্ণ। চরিত্রগুলি দর্শকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। তবে, চরিত্রগুলিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য ‘ফুলেরা’ গ্রামের প্রভাব যথেষ্ট। বস্তুত, এই গ্রামটিই যেন একটি চরিত্র।
গ্রামবাসীদের এমন সহজসরল জীবনযাপন ওয়েব সিরিজের জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়েছে। এই গ্রামের আঞ্চলিক অবস্থান নিয়েও কৌতূহল জেগেছে দর্শকদের মনে। আদৌ এই গ্রামের কোনও অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তা জানতে উৎসুক দর্শকমহল। নারায়ণের মালগুডি নিয়েও ছিল অনুরূপ কৌতূহল।
রাজস্থানে আজমেঢ় ও জয়পুর শহরকে আলাদা করে ফুলেরা নামে একটি শহর। ভারতের উল্লেখযোগ্য রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে ফুলেরা একটি। এমনকি, দিল্লি-মুম্বই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর প্রকল্প এই শহরের উপর দিয়েই গিয়েছে।
তবে, এই ফুলেরা শহরের সঙ্গে পঞ্চায়েতে দেখানো গ্রামটির কোনও মিল নেই। সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে শ্যুটিং হয়েছে ‘পঞ্চায়েত’ ওয়েব সিরিজের দুই পর্ব।
গ্রামটির নাম ‘ফুলেরা’ নয়, সেহোর জেলার অন্তর্গত সেহোর শহর থেকে প্রায় ন’কিলোমিটার দূরে এই গ্রামটির নাম মহোদিয়া।
২০০৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, মহোদিয়াও গ্রাম পঞ্চায়েতের আওতায় পড়ে। ঠিক যেমন ওয়েব সিরিজে দেখানো হয়েছে।
‘পঞ্চায়েত’-এর মুখ্যচরিত্র অভিষেক ত্রিপাঠী ওরফে জিতেন্দ্র এক সাক্ষাৎকারে জানান, ওই গ্রামে কোথাও থাকার জায়গা ছিল না। সেহোর শহরেই তাঁরা সকলে থাকতেন।
জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘ভোরের আলো থাকতেই আমরা শ্যুটিং-এর জন্য বেরিয়ে পড়তাম। সূর্য না ডোবা পর্যন্ত কাজ চলত। তার পর আবার আমরা শহরে ফিরে যেতাম।’’
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, মহোদিয়া গ্রামের জনসংখ্যা দু’হাজারেরও কম। সব মিলিয়ে ৩৭৫টি ঘর রয়েছে এই গ্রামে।
সরকারি ও বেসরকারি বাস পরিষেবা ছাড়াও রেলওয়ে পরিষেবা চালু রয়েছে, কিন্তু মহোদিয়া গ্রাম থেকে সবই রয়েছে পাঁচ থেকে দশ কিলোমিটারের দূরত্বে।
মধ্যপ্রদেশে এর আগেও বিভিন্ন বলিউড সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজের শ্যুটিং হয়েছে। এর মধ্যে ‘শেরনি’, ‘দুর্গামতী’, ‘ভুজ’, ‘ছোরী’, ‘গুল্লক’, ‘মহারানি’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
তবে ‘পঞ্চায়েত’-এর বিপুল সাফল্যের পর শহরের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে গ্রামমাটির সাধারণ জীবনের প্রতিই আকৃষ্ট হচ্ছেন দর্শকরা।
এর ফলে মধ্যপ্রদেশের এই গ্রামটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ইতিমধ্যেই এই গ্রামটিতে অনেকে বেড়াতেও গিয়েছেন।