বলিউডে সুযোগ দেওয়ার নাম করে উঠতি মডেল-অভিনেত্রীদের দেহব্যবসার দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বলিউডের কাস্টিং ডিরেক্টর আরতি মিত্তল। তার পর থেকেই আরতিকে নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাঁর উত্থান-কাহিনি নিয়েও কৌতূহল দেখাতে শুরু করেছেন অনেকে।
আরতির পুরো নাম আরতি হরিশচন্দ্র মিত্তল। বর্তমানে মুম্বইয়ের বাসিন্দা হলেও ১৯৯৫ সালের ১৮ অক্টোবর দিল্লিতে তাঁর জন্ম।
হিমাচলের সোলান জেলার মানব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে মুম্বই পাড়ি দেন আরতি। লক্ষ্য ছিল অভিনেত্রী হওয়ার।
মুম্বই পৌঁছে ছোটখাটো মডেলিং এবং অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান আরতি। অভিনয়ের সুযোগ পান কয়েকটি বড় বাজেটের ছবির ছোট ছোট চরিত্রে। টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করতেন তিনি।
বেশ কিছুটা পুঁজি সঞ্চয় করে নতুন কিছু শুরুর পরিকল্পনা করেন আরতি। আর সেই চিন্তাভাবনা থেকেই খুলে ফেলেন ‘প্ল্যান্টাস্টিক ফিল্মস’ নামের এক কাস্টিং সংস্থা।
এর পর মডেলিং এবং টুকটাক অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সিরিয়াল এবং ছোট বাজেটের ছবির জন্য অভিনেতা-অভিনেত্রী বাছাইয়ের কাজও শুরু করেন আরতি।
বিভিন্ন নামীদামি চ্যানেলের বড় বাজেটের সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন আরতি। কাজ করেছেন ওয়েব সিরিজ়েও। জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘আপনাপন’-এ একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি অভিনয় করেন। অভিনেত্রী রাজশ্রী ঠাকুরও ওই সিরিয়ালে ছিলেন।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে আরতি দাবি করেছিলেন, অভিনেতা আর মাধবনের সঙ্গে শীঘ্রই একটি ছবিতে অভিনয় করতে চলেছেন তিনি।
সেই আরতিই বর্তমানে পুলিশের জালে। অভিযোগ, বলিউডে সুযোগ দেওয়ার নাম করে মেয়েদের দেহব্যবসার ফাঁদে ফেলার।
পুলিশই সোমবার খদ্দের সেজে টোপ ফেলে কাস্টিং ডিরেক্টর আরতিকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ আধিকারিক মনোজ সুতার গোপন সূত্র মারফত দেহব্যবসার চক্রের খোঁজ পান। এর পর একটি দল গঠন করে তদন্ত শুরু করে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। সেই তদন্তেই এই চক্রের মাথা হিসাবে আরতির নাম উঠে আসে।
আরতিকে ফোন করে মনোজ জানান, তাঁর দুই বন্ধুর জন্য দু’জন এসকর্ট লাগবে। এই কথা শুনে দুই মডেল এসকর্ট জোগাড় করে দেওয়ার বদলে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন আরতি। এ-ও দাবি করেন, কেবল জুহু বা গোরেগাঁওয়ের কোনও হোটেল ভাড়া করলে তবেই মিলবে পরিষেবা।
এর পর আরতির কথামতো গোরেগাঁওয়ের একটি হোটেল বুক করে পুলিশ। আরতিও দুই মডেলকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান। খদ্দের সেজে আসা পুলিশ আধিকারিকদের দেওয়া হয় কন্ডোম। এর পর টাকা নেওয়ার সময় আরতিকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় দুই মডেলকেও। লুকোনো ক্যামেরায় ধরা পড়েছে পুরো ঘটনা।
উদ্ধার হওয়া ওই দুই তরুণী পুলিশকে জানান, আরতি কথা দিয়েছিলেন, দুই পুরুষের সঙ্গে নিশিযাপন করলে তাঁদের দু’জনকেই ১৫ হাজার টাকা দেবেন। শুধু তা-ই নয়, অনেক উঠতি মডেলকেই টাকার টোপ দিয়ে আরতি দেহব্যবসায় নামিয়েছেন বলেও তাঁরা দাবি করেন।
এই প্রসঙ্গে দিন্দোশি থানার এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘মডেল-অভিনেত্রীদের দেহব্যবসা করিয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।’’
বলিউডের অন্দরের খবর, এই দেহব্যবসার চক্র চালিয়েই আরতি কোটি কোটি টাকার মালকিন। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৭ কোটিরও বেশি।