কুলদীপ সিংহ ধীংড়া এবং গুরবচন সিংহ ধীংড়া। ভারতের অন্যতম বড় রং সংস্থার মালিক এই ভ্রাতৃদ্বয়। তবে তাঁদের সাফল্যে ‘অবদান’ ছিল ভারতের এক সময়ের ধনকুবের ব্যবসায়ী বিজয় মাল্যের।
শুধুমাত্র ব্যবসায়িক বুদ্ধির জেরে ধীংড়া ভ্রাতৃদ্বয় তাঁদের ব্যবসায়িক সংস্থাকে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে গিয়েছেন। বর্তমানে তাঁদের সংস্থার বাজারমূল্য ৬৮ হাজার কোটি টাকা।
কুলদীপ তাঁদের রং সংস্থার চেয়ারপার্সন এবং গুরবচন ভাইস চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কুলদীপ এবং গুরবচনের সাফল্য-কাহিনি অনেকেরই অনুপ্রেরণা হতে পারে। কিন্তু কী ভাবে সাধারণ দোকানদার থেকে ভারতের অন্যতম ধনী ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর মালিক হয়ে উঠলেন এই দুই ভাই?
কুলদীপ এবং গুরবচন পঞ্জাবের অমৃতসরের একটি ছোট ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান।
অমৃতসরে ধীংড়াদের ছোট্ট একটি রঙের দোকান ছিল। যে ব্যবসা প্রায় ১২৫ বছর আগে কুলদীপ এবং গুরবচনের দাদু শুরু করেছিলেন।
ছোটবেলা থেকেই পরিবারের আদর পেয়ে বড় হয়েছেন কুলদীপ এবং গুরবচন। ছোটবেলায় পড়াশোনা করেছেন অমৃতসরেই। তবে উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁরা দিল্লি চলে যান। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন।
পড়াশোনা শেষ করে দাদুর দোকান থেকেই ব্যবসা শুরু করেন গুরবচন এবং কুলদীপ। ব্যবসায় নামার ১০ বছরের মধ্যে তাঁরা নিজেদের পঞ্জাবের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেন।
দুই ভাই হাল ধরার পরেই ব্যবসায় ‘সোনা ফলতে’ শুরু করে। ১৯৭০ দশকে ধীংড়ারা ব্যবসা থেকে বার্ষিক ১০ লক্ষ টাকা মুনাফা করেন। ১০ বছর পেরোতে না পেরোতেই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে রং রফতানি করা সব থেকে বড় সংস্থায় পরিণত হয় তাঁদের এই কোম্পানি।
কুলদীপ এবং গুরবচন বুঝতে পেরেছিলেন, নিজেদের প্রতিপত্তি আরও বৃদ্ধি করতে হলে আরও বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আরও বড় করে গড়ে তুলতে হবে সংস্থাকে।
এর পর একাধিক বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে হাত মেলান দুই ভাই। তবে অনেক দিন ধরেই ভারতের তৎকালীন ধনকুবের ব্যবসায়ী বিজয় মাল্যের নেতৃত্বাধীন ইউবি গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় থাকা ছোট সংস্থাগুলির দিকে নজর ছিল তাঁদের।
এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে বিজয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা হয়। বিজয় রাজি হওয়ায় দু’ভাই গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।
’৯০-এর দশকে বিজয়ের গোষ্ঠী থেকে রং উৎপাদন সংস্থা কিনে নেন ধীংড়া ভ্রাতৃদ্বয়। সেই সংস্থায় বর্তমানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রং সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
কুলদীপ এবং গুরবচন, উভয়েরই সংস্থায় সমান মালিকানা রয়েছে। দুই ভাইয়ের সম্পত্তির পরিমাণ ২৯,৭০০ কোটি টাকা।