Sneha Ullal

‘হ্যালো, সলমন বলছি’! ঐশ্বর্যার মতো দেখতে বলেই কি বার বার স্নেহাকে ফোন করতেন ভাইজান?

ছবি মুক্তির পর ঐশ্বর্যার হুবহু হিসাবেই বেশি পরিচিতি পেতে থাকলেন স্নেহা উল্লাল। এর ফলে সাময়িক ভাবে জনপ্রিয় হলেও আখেরে কোনও লাভ হয়নি অভিনেত্রীর।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ১১:৩১
Share:
০১ ২০

২০০৫ সালে সোহেল খানের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘লাকি: নো টাইম ফর লাভ’ ছবিটি। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সলমন খান। প্রচারের সময় থেকেই এই ছবি নিয়ে বলিপাড়ায় চর্চা শুরু হয়েছিল। চর্চার বিষয় অবশ্য সলমন ছিলেন না। চর্চার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন এই ছবির নায়িকা স্নেহা উল্লাল।

০২ ২০

স্নেহাকে এক ঝলক দেখলে মনে হয় যে, তিনি যেন ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের যমজ বোন। মুখের আদল হুবহু ঐশ্বর্যার মতোই। বলিপাড়ার অনেকে বলাবলি করতে শুরু করেছিলেন যে, স্নেহাকে নিজের প্রাক্তন প্রেমিকার মতো দেখতে বলেই সলমন তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন।

Advertisement
০৩ ২০

‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে ঐশ্বর্যাকে যে লুকে দেখা গিয়েছিল, ‘লাকি: নো টাইম ফর লাভ’ ছবির একটি গানে স্নেহার লুকও একই রকম ছিল। তা গানের প্রয়োজনে রাখা হয়েছিল না কি ঐশ্বর্যাকে ‘খুঁজে পেতে’ সলমন নিজের ইচ্ছাতেই এমন করেছিলেন, তা যদিও অজানা।

০৪ ২০

১৯৮৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর ওমানে জন্ম স্নেহার। ওমানে স্কুলে ভর্তিও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শৈশবের কিছু দিন ওমানে কাটানোর পর ভারতে চলে আসেন তিনি।

০৫ ২০

মুম্বইয়ে আসার পর সেখান থেকেই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন স্নেহা। কলেজে পড়াকালীন তাঁর সঙ্গে সলমনের বোন অর্পিতার আলাপ হয়।

০৬ ২০

স্নেহার সঙ্গে অর্পিতার আলাপ বাড়তে থাকায় তাঁদের মধ্যে ফোন নম্বরও আদানপ্রদান হয়। দু’জনে একসঙ্গে বাইরে দেখাও করতেন। কলেজে পড়ার সময় স্নেহার জীবনে কঠিন সময় এসে পড়ে। স্নেহার মায়ের ক্যানসার ধরা পড়ে। মাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন স্নেহা। দিনের বেশির ভাগ সময় হাসপাতালে কাটাতেন তিনি।

০৭ ২০

হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর হঠাৎ স্নেহার কাছে একটি ফোন আসে। ফোনের ও পার থেকে ভেসে আসে পুরুষকণ্ঠ— ‘হ্যালো, আমি সলমন খান বলছি।’’ স্নেহা ভাবতেন, কেউ মনে হয় তাঁর সঙ্গে মস্করা করছেন। তাই কোনও কথা না বলে ফোন রেখে দিতেন তিনি। কিন্তু এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকল। কোনও বারই ফোনে কথা বলেননি স্নেহা।

০৮ ২০

চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে স্নেহার মা ফিরে এলে তাঁকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন স্নেহা। এক অপরিচিত ব্যক্তি মেয়েকে ফোন করে বিরক্ত করছেন শুনে সেই নম্বরে ফোন লাগান স্নেহার মা। ফোনের ও পারে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার পর তিনি আশ্বস্ত হন। ফোনের ও পারে ছিলেন সলমন স্বয়ং। ‘ভাইজান’ই বার বার তাঁর মেয়েকে ফোন করতেন।

০৯ ২০

সলমন জানান, অর্পিতা তাঁকে স্নেহার ব্যাপারে বলেছিলেন। সলমনের কোনও ছবিতে যদি স্নেহাকে কাজ দেওয়া যায়, তা নিয়ে আগ্রহী ছিলেন অর্পিতা। স্নেহার ফোন নম্বরও সলমনকে দিয়েছিলেন অর্পিতা।

১০ ২০

বোনের কথা রাখতে সলমন তাঁর পরবর্তী ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন স্নেহাকে। বড় পর্দায় অভিষেক হবে সলমনের হাত ধরে! এ যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না স্নেহা। ছবির শুটিংয়ের জন্য কলেজের পড়াশোনা থেকে সাময়িক বিরতি নেন স্নেহা।

১১ ২০

ছবি মুক্তির পর ঐশ্বর্যার হুবহু হিসাবেই বেশি পরিচিতি পেতে থাকলেন স্নেহা। এর ফলে সাময়িক ভাবে জনপ্রিয় হলেও আখেরে কোনও লাভ হল না অভিনেত্রীর। অন্য দিকে তাঁর প্রথম ছবিও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ল।

১২ ২০

২০০৬ সালে ‘আরিয়ান’ ছবিতে কাজ করেছিলেন স্নেহা। সেই ছবিও ভাল ব্যবসা করতে পারেনি। হতাশ হয়ে ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন স্নেহা।

১৩ ২০

দু’বছরের বিরতি নিয়ে কলেজের পড়়াশোনা শেষ করলেন স্নেহা। তার পর আবার অভিনয় জগতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে এ বার আর বলিউডে নয়, দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে শুরু করেন তিনি।

১৪ ২০

তবে আবার অভিনয় শুরু করার আগে সলমনের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলেন স্নেহা। সলমন তাঁকে জানান, প্রথম ছবি ফ্লপ হওয়ার পরেও স্নেহা যখন প্রস্তাব পাচ্ছেন তা হলে তিনি অভিনয়জগতের জন্যই তৈরি। সলমন বলেন, ‘‘আগে তুমি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চাইতে। এখন ইন্ডাস্ট্রি তোমার সঙ্গে কাজ করতে চাইছে।’’

১৫ ২০

সলমনের অনুমতি নিয়েই অভিনয় শুরু করেন স্নেহা। বলিপাড়া থেকে তিনি সাফল্যের যে স্বাদ পাননি, তা তাঁকে এনে দিল দক্ষিণী সিনেমা জগত। একের পর এক তেলুগু ছবি, এমনকি কন্নড় ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে স্নেহাকে।

১৬ ২০

২০১০ সালে আবার হিন্দি ছবিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন স্নেহা। ‘ক্লিক’ নামে একটি হরর ঘরানার ছবিতে শ্রেয়স তালপাড়ের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু ছবিটি বক্স অফিস থেকে উপার্জন করতে ব্যর্থ হয়।

১৭ ২০

২০১৫ সালে ‘বেজুবান ইশক’ নামে আরও একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন স্নেহা। কিন্তু এই ছবিটিও মুখ থুবড়ে পড়ে। তাই দক্ষিণী সিনেমাজগতেই আবার ফিরে যান তিনি। ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ নামের একটি বাংলা ছবিতে কাজ করেছিলেন স্নেহা।

১৮ ২০

তবে, বেশি দিন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারেননি স্নেহা। সিনেমার শুটিং করার সময় তিনি হঠাৎ লক্ষ করতে শুরু করলেন যে, একটানা ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না স্নেহা। প্রথমে এই রোগকে পাত্তা না দিয়ে অনবরত কাজ করে গিয়েছেন তিনি।

১৯ ২০

কিন্তু পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন স্নেহা। দীর্ঘ অসুস্থতা কাটিয়ে তিনি যখন আবার ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে আসার চেষ্টা করেন, তত দিনে তাঁকে সকলে ভুলে গিয়েছেন।

২০ ২০

এক পুরনো সাক্ষাৎকারে স্নেহা বলেন, ‘‘অভিনয় জানি না বলে যে আমি ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে গিয়েছি, তা নয়। বহু বছর অসুস্থ ছিলাম বলেই আমাকে কাজ করতে দেখা যায়নি।’’ ২০২০ সালে ‘এক্সপায়েরি ডেট’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করতে দেখা যায় স্নেহাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement