৩০ বছর বয়সে মৃত্যু হল খ্যাতনামী বডিবিল্ডার জো লিন্ডারের। গত শনিবার ‘অ্যানুরিজ়ম’ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এই তরুণের। জো-র মৃত্যুতে বডিবিল্ডারদের জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জো সমাজমাধ্যমে বেশি পরিচিত ‘জোসথেটিক্স’ নামে।
জো-র বান্ধবী নিশা তাঁর মৃত্যুর খবর ইনস্টাগ্রামে জানান। নিশা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে জো-র মৃত্যু হয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে নিশা লেখেন, “শনিবার অ্যানুরিজম রোগে জো-র মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সময়ে আমি ওর সঙ্গেই ছিলাম। জো আমার গলায় একটা হার পরিয়ে দিয়েছিল। একে অপরের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্ত কাটাচ্ছিলাম। ৪টের সময়ে আমাদের জিমে যাওয়ার কথা ছিল। ও আমার হাতে মাথা রেখে শুয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যেই অঘটন ঘটে গেল। তিন দিন আগে জো জানিয়েছিল যে, ওর ঘাড়ে ব্যথা করছে। তবে বিষয়টা এতটা গুরুতর, তখন বুঝতে পারিনি। যখন বুঝলাম, তখন দেরি হয়ে গিয়েছে।’’
জো-র বন্ধু তথা বডিবিল্ডার নোয়েল ডেজ়েল শোকজ্ঞাপন করে ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘‘জো যেখানেই থাকবে, শান্তিতে থাকবে। ওর প্রতি ভালবাসা অটুট থাকবে।’’
অ্যানুরিজম হল এক ধরনের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগ। মস্তিষ্কের রক্তবাহগুলি ফুলে ফেটে গেলে রক্তক্ষরণ হয়। এই ধরনের রক্তক্ষরণকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘সাব অ্যারাকনয়েড হেমারেজ’ বলে।
চিকিৎসকদের মতে, বার্ধক্য, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস এই রোগের কারণ হতে পারে। কিন্তু কেন এত সুঠাম শরীরের অধিকারী হয়েও জো এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন, তা স্পষ্ট নয়।
৩০ বছর বয়সি জো বডিবিল্ডার হওয়ার পাশাপাশি নেটপ্রভাবী হিসাবেও জনপ্রিয় ছিলেন।
ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামে শরীরচর্চা সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন জো। তাঁর খাদ্যতালিকা এবং সুঠাম শরীরের রহস্য ভাগ করে নিতেন অনুরাগীদের সঙ্গে।
জো-র জন্ম জার্মানিতে। তিনি এক জন ফিটনেস মডেল হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেন।
বডিবিল্ডিংয়ের জগতে প্রবেশের আগে জো একটি ক্লাবে বাউন্সার হিসাবে কাজ করতেন।
জো একটি ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ অ্যাপের মালিকও ছিলেন। সেই অ্যাপ ডাউনলোড করে টাকা দিলেই তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া যেত।
জো দাবি করতেন, তাঁর সুঠাম শরীর তিনি প্রাকৃতিক উপায়ে বানিয়েছেন। কোনও স্টেরয়েড ব্যবহার করেননি। এই দাবি নিয়ে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। বিশ্বের অনেক নামী বডিবিল্ডার জো-কে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে প্রতিপন্ন করেন।
পরে জো স্বীকার করেন, কটাক্ষের মুখে পড়ার পর তিনি স্টেরয়েড ব্যবহার শুরু করেছিলেন।
জো-এর অনুরাগীরা প্রায়ই তাঁর শারীরিক গঠনকে অভিনেতা এবং প্রাক্তন বডিবিল্ডার আর্নল্ড সোয়ার্ৎজ়েনেগারের শারীরিক গঠনের সঙ্গে তুলনা করতেন।
ইউটিউবে জো-র অনুরাগীর সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। ইনস্টাগ্রামে অনুরাগীর সংখ্যা প্রায় ৯ লক্ষ।
জার্মানিতে জন্ম হলেও বিগত কয়েক বছর ধরে জো তাইল্যান্ডে বাস করছিলেন।
মৃত্যুর মাত্র দু’দিন আগে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন জো। সেই পোস্টে তিনি জানান, ‘টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (টিআরটি)’-র পর তিনি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন।
তার পরই শনিবার ‘অ্যানুরিজম’-এ মৃত্যু হল ৩০ বছরের বডিবিল্ডারের।