Aligarh Muslim University

নামবদল, বিভিন্ন রায়, বিতর্ক! ১৪৯ বছরের মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে কেন এত হইচই?

কেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে এত বিতর্ক? এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৭৫ সালে, ১৪৯ বছর আগে। তৈরি করেন সৈয়দ আহমদ খান।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৬
Share:
০১ ১৯

আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে সংখ্যালঘু তকমা দেওয়া যায় কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে সংখ্যালঘু তকমা দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি সুপ্রিম কোর্টের সদ্যপ্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চও।

০২ ১৯

যদিও সাত সদস্যের এই বেঞ্চে সদ্যপ্রাক্তন প্রধান বিচারপতি-সহ চার সদস্য ইলাহাবাদ হাই কোর্টের আগের রায় খারিজ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement
০৩ ১৯

কিন্তু কেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে এত বিতর্ক? আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৭৫ সালে, ১৪৯ বছর আগে। তৈরি করেন সৈয়দ আহমদ খান।

০৪ ১৯

প্রতিষ্ঠার সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল মহমেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ। ১৯২০ সালে নাম বদলে করা হয় আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। ধীরে ধীরে সংখ্যালঘু তকমাও পায় বিশ্ববিদ্যালয়টি।

০৫ ১৯

যদিও ১৯৬৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির সংখ্যালঘু তকমা খারিজ করে শীর্ষ আদালত। তা নিয়েও কম হইচই হয়নি।

০৬ ১৯

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ১৯৮১ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংশোধন করে এই প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ সংরক্ষণ চালু হয়েছিল।

০৭ ১৯

তবে ২০০৬ সালে ওই আইন খারিজ করে দেয় ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন ইউপিএ সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

০৮ ১৯

কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যালঘু তকমা পেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকে।

০৯ ১৯

যদিও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সংরক্ষণ নীতি মেনে চলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের জন্য সেখানে ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে।

১০ ১৯

উল্লেখ্য, মোদী সরকার প্রথম থেকেই আলিগড় এবং দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ তকমা দেওয়ার বিরুদ্ধে।

১১ ১৯

এ নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতার মুখে পড়লেও মোদী সরকারের যুক্তি, এই তকমা অসাংবিধানিক। সংসদের আইনের মাধ্যমে যে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে, পরে তাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিশেষ তকমা দেওয়া দেশের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরুদ্ধে।

১২ ১৯

সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্ধেক আসন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় তফসিলি জাতি, উপজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির পড়ুয়াদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। কারণ, সেখানে জাতপাতের ভিত্তিতে সংরক্ষণ থাকে না।

১৩ ১৯

২০০৬ সালে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ইউপিএ সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন জানিয়েছিলেন, সম্প্রতি সেই আবেদনই প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন সলিসিটর জেনারেল।

১৪ ১৯

সরকার পক্ষের দাবি, ‘সেন্ট্রাল এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন (ভর্তি সংরক্ষণ) আইন ২০০৬’ (২০১২ সালে সংশোধিত)-এর ৩ নম্বর ধারা মেনে আলিগড়ে সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণ বজায় রাখার কোনও প্রয়োজন নেই।

১৫ ১৯

যুক্তি হিসাবে কেন্দ্র এ-ও জানিয়েছিল, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান এই তকমা পায় তা কোনও নির্দিষ্ট ধর্মীয় জনগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠান হতে পারে না।

১৬ ১৯

সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তাঁর সওয়ালে বলেছিলেন, ‘‘১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্‌‌-স্বাধীনতা যুগেও জাতীয় স্তরের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। তাই তাকে কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের জন্য বলা যেতে পারে না।’’

১৭ ১৯

যদিও গত শুক্রবার আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে সংখ্যালঘু তকমা দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি সদ্যপ্রাক্তন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ।

১৮ ১৯

সাংবিধানিক বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের রায়টি লেখেন সদ্যপ্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি সঞ্জীব খন্না (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র।

১৯ ১৯

অন্য দিকে, বিরুদ্ধমত পোষণ করে স্বতন্ত্র রায় দেন বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র। সংখ্যাগরিষ্ঠের মতানুসারে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা ফেরার পথ প্রশস্ত হলেও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নতুন বেঞ্চ নেবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement