অভিনয়ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিলেও বলিপাড়ার সফল অভিনেতাদের তালিকায় সেই অর্থে নিজের নাম লেখাতে পারেননি বিনোদ খন্নার পুত্র অক্ষয় খন্না। কেরিয়ারের ঝুলিতে বহু হিন্দি ছবি থাকলেও সেগুলির মধ্যে অধিকাংশ ছবি বহু তারকাখচিত অথবা বক্স অফিসে ব্যবসা করতে ব্যর্থ।
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কানাঘুষো শোনা যায়, অক্ষয়ের কাছে এমন একটি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে যা তাঁকে এক লাফে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিত। কিন্তু সে সুযোগ অক্ষয়ের কাছ থেকে কেড়ে নেন বলিপাড়ার অন্য এক অভিনেতা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, আমির খানই নাকি অক্ষয়ের সাফল্যে বাধা হয়ে দাঁড়ান। ২০০১ সালে ফারহান আখতারের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবিটি। এই ছবিতে অক্ষয়ের পাশাপাশি অভিনয় করতে দেখা যায় সইফ আলি খান এবং আমিরকে।
‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ের সময় আমির এবং অক্ষয়ের বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়। এই ছবি মুক্তির পর অক্ষয় বা সইফের তুলনায় দর্শকের কাছে বেশি প্রশংসা কুড়োতে থাকেন আমির। অক্ষয় দুর্দান্ত অভিনয় করলেও তাঁকে যেন পার্শ্বচরিত্র হিসাবেই রাখা হয়।
‘দিল চাহতা হ্যায়’ মুক্তি পাওয়ার চার বছর পর ‘তারে জমিন পর’ ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন অমোল গুপ্তে। এই ছবিতে শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য অক্ষয়কে পছন্দ করেছিলেন অমোল।
কিন্তু ফোন নম্বর না থাকার কারণে অক্ষয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না অমোল। তিনি জানতেন, আমিরের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রয়েছে অক্ষয়ের। তাই সাহায্য চাইতে আমিরের সঙ্গে দেখা করেন।
আমিরের সঙ্গে দেখা করে অক্ষয়ের ফোন নম্বর চান অমোল। নম্বর না দিয়ে অমোলকে কেন হঠাৎ অক্ষয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে মরিয়া হয়ে উঠছেন তার কারণ জানতে চান অভিনেতা।
কোনও উপায় না দেখে সত্যি কথা বলতে বাধ্য হন অমোল। আমিরকে জানান, একটি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য অক্ষয়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন অমোল।
কারণ জানার পরেও অক্ষয়ের ফোন নম্বর অমোলকে দেননি আমির। তার পরিবর্তে ছবির চিত্রনাট্যের খসড়া অমোলের কাছে শুনতে চান আমির।
অমোলও ‘তারে জমিন পর’ ছবির চিত্রনাট্যের খসড়া পড়ে শোনান আমিরকে। ছবির গল্প পছন্দ হয়ে যায় আমিরের। অমোলকে তিনি অনুরোধ করেন, অক্ষয়ের বদলে যেন তাঁকে শিক্ষকের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হয়।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, আমির আন্দাজ করেছিলেন ‘তারে জমিন পর’ ছবিটি হিট হবে। তাই এই ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ কোনও মতেই ছাড়তে চাননি তিনি। তাই অক্ষয়ের কাছ থেকে ছবিটি কেড়ে নেন আমির।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে সত্য ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছিলেন অক্ষয়। তিনি জানিয়েছিলেন, অমোল যখন অক্ষয়ের ফোন নম্বর চাইতে আমিরের বাড়ি যান, তখন আমির বাধা দেন।
আমির নাকি অমোলকে বলেন, ‘‘আমি এ ভাবে কাউকে সুযোগ দিতে পারি না। আগে আমাকে সম্পূর্ণ স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনাও। আমার ভাল লাগলে তবেই আমি অক্ষয়ের নম্বর দেব তোমায়।’’ এমনটাই দাবি করেন অক্ষয়।
‘তারে জমিন পর’ ছবিটি মুক্তির পর অক্ষয়ের সঙ্গে দেখা করেন আমির। তার পর সমস্ত ঘটনা জানান অক্ষয়কে। তবে সব শোনার পর আমিরের উপর রাগ করেননি অক্ষয়।
সাক্ষাৎকারে অক্ষয় বলেন, ‘‘আমির যে এই কাজ করেছে তাতে আমি একটুও ক্ষুব্ধ নই। ও যে ভাবে চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছিল তার এক অংশও আমি করতে পারতাম না।’’