সোনার ভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হল চিনে। নতুন একটি সোনার খনির হদিস পেলেন চিনা ভূ-তত্ত্ববিদেরা। এই নতুন খনি স্বর্ণ সম্পদ চিনকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পূর্ব চিনের শ্যানডং প্রদেশ দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই প্রদেশে ১০ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করেন। শ্যানডঙের মাটিতেই লুকিয়ে চিনের ‘যখের ধন’।
খনিজ পদার্থে বরাবর সমৃদ্ধ শ্যানডং। এই প্রদেশে সোনার একাধিক খনি রয়েছে। সেখানেই নতুন আরও একটি সোনার খনি আবিষ্কৃত হয়েছে। যা শ্যানডঙের এখনও পর্যন্ত বৃহত্তম।
শ্যানডঙের রুশান এলাকায় এই সোনার খনির নাম শিলাওকোউ খনি। চিনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই নতুন খনিতে আনুমানিক ৫০ টন সোনা থাকতে পারে, মনে করছেন গবেষকেরা।
শ্যানডঙের ওই এলাকায় যে নতুন খনির সন্ধান মিলতে পারে, তা আগেই অনুমান করা গিয়েছিল। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে পর্যবেক্ষণের পর অবশেষে খনির খোঁজ পেলেন ভূ-তত্ত্ববিদেরা।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শিলাওকোউ খনিতে অপরিশোধিত অবস্থায় যে সোনা রয়েছে, তা অত্যন্ত উচ্চ মানের। সহজেই তা পরিশোধন করে কাজে লাগানো যাবে।
চিনে সোনার অভাব নেই। এই দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অজস্র সোনার খনি। প্রকৃতি যেন দু’হাত খুলে সোনাদানায় ভরিয়ে দিয়েছে চিনকে। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নেও এই হলুদ ধাতুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
চিন এই মুহূর্তে বিশ্বের সোনা উৎপাদনকারী দেশগুলির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। বিশ্বের স্বর্ণ ভান্ডারের অন্তত ৯ শতাংশ কেন্দ্রীভূত এই চিনেই।
গত বছর শ্যানডঙের জিয়াওজিয়া খনি থেকে ১০ টন সোনা উৎপন্ন করা হয়েছিল, যা একক খনির পক্ষে সর্বোচ্চ উৎপাদন।
চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ফেব্রুয়ারি মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সমগ্র চিনে খনিজ সোনার পরিমাণ ১ হাজার ৮৬৯ টন। যার অধিকাংশই রয়েছে শ্যানডঙে।
সোনার উৎপাদনে চিন এগিয়ে থাকলেও বৃহত্তম সোনার ভান্ডারে শীর্ষে আমেরিকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমেরিকায় মোট খনিজ সোনার পরিমাণ ৮ হাজার ১৩৩ টন। বাজারে যার আনুমানিক মূল্য ৩৯ লক্ষ কোটি টাকা।
সঞ্চিত সোনার ভান্ডারের নিরিখে আমেরিকার পরেই রয়েছে জার্মানি। তার পর যথাক্রমে ইটালি, ফ্রান্স, রাশিয়া। এই তালিকায় ৬ নম্বরে রয়েছে চিনের নাম। অথচ, সোনার ভান্ডারে পিছিয়ে থাকলেও চিন সর্বোচ্চ সোনা উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে সহজেই।
চিনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সোনা উৎপন্ন হয় অস্ট্রেলিয়ায়। তার পর তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে রাশিয়া, আমেরিকা, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, পেরু, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো এবং ঘানার মতো দেশ।
সম্প্রতি ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার বিপর্যয়ে আমেরিকার অর্থনীতি কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে দেশের ষোড়শ বৃহত্তম ব্যাঙ্ক সিলিকন ভ্যালি। এই পরিস্থিতিতে চিনে নতুন সোনার খনির আবিষ্কার তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের অগ্রগতিকে আরও ত্বরাণ্বিত করবে এই শিলাওকোউ খনি। চলতি বছরে আবিষ্কৃত সোনার খনিগুলির মধ্যে এখনও পর্যন্ত এটিই বৃহত্তম।