ত্রিশ বছরেই ধরা পড়েছিল কঠিন রোগ। তার এক বছরের মধ্যেই চিকিৎসা শুরু, তার পর অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারের পর আরও ৪৫ বছর ৩৬১ দিন কাটিয়েছেন। বহাল তবিয়তে। সারা বিশ্বে নজিরও গড়ে ফেলেছেন কলিন হ্যাংকক।
ব্রিটিশের বাসিন্দা কলিন। ছোটবেলা থেকে কোনও রকম শারীরিক দুর্বলতা ছিল না তাঁর। কিন্তু ত্রিশ বছরের গণ্ডি পার হতে না হতেই মাথায় বাজ পড়ে কলিনের।
বুকের ব্যথা শুরু হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যান কলিন। কিন্তু চিকিৎসকের তরফে জানানো হয়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। অস্ত্রোপচার ছাড়া এই রোগ সারানো সম্ভব নয়।
চিকিৎসা চলার এক বছর পর ট্রিপল হার্ট বাইপাস সার্জারি হয় কলিনের। অস্ত্রোপচার সফলও হয় তাঁর। তবুও বিপদের ঘেরাটোপ থেকে বার হতে ব্যর্থ হন কলিন।
চিকিৎসক জানান, অস্ত্রোপচার সফল হলেও হার্টের কোনও না কোনও সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনাই বেশি কলিনের। তাই কলিন যত দিন বেঁচে থাকবেন, তত দিন তাঁকে খুব সাবধানতা মেনেই চলতে হবে।
কলিনের দাবি, ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত খেলাধুলো থেকে শুরু করে শরীরচর্চা সব কিছুই নিয়ম মেনে করতেন তিনি। কখনওই দুর্বল বোধ করেননি।
কলিন জানান, ছোটবেলা থেকে কোনও নির্দিষ্ট ডায়েট মেনে চলতেন না তিনি। চর্বিযুক্ত খাবারও খেতেন তিনি।
কলিনের প্রিয় খাবার ছিল ডিম। তা ছাড়াও চিপ্স খেতে ভালবাসতেন তিনি।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জিনগত সমস্যা ধরা পড়ে কলিনের। হাইপারকোলেস্টেরলেমিয়া রোগ দেখা দেয় তাঁর। চিকিৎসক বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলেরেস্টলযুক্ত খাবার বেশি খেলে এই রোগ হয়।
হাইপারকোলেস্টেরলেমিয়া রোগ আবার নানা রকমের হৃদ্রোগও ডেকে আনে। যাঁরা এই রোগে ভোগেন, তাঁদের যে কোনও মুহূর্তে হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কলিনের হার্টে তিন জায়গায় ব্লকেজ ধরা পড়েছিল। এর ফলে হার্টে ঠিকমতো রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল। সম্প্রতি ৭৭ বছরে পা দিয়েছেন কলিন।
এর আগে যাঁদের ট্রিপল হার্ট বাইপাস সার্জারি হয়েছিল, অস্ত্রোপচারের পর তাঁদের জীবনকালের দিকেও নজর রাখা হয়। এই কঠিন অস্ত্রোপচারের পর রোগীরা কত দিন বেঁচে থাকেন সারা বিশ্ব জুড়ে সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
কলিনের আগে বিশ্ব জুড়ে নজির গড়েছিলেন আমেরিকার বাসিন্দা ডেলবার্ট ডেল ম্যাকবি। ২০১৫ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
তথ্য ঘেঁটে জানা যায়, ট্রিপল হার্ট বাইপাস সার্জারির পর ৪১ বছর ৬৩ দিন বেঁচেছিলেন ডেলবার্ট। সে দিক থেকে ৪৫ বছর ৩৬১ দিন বেঁচে থেকে বিশ্ব জুড়ে নজির গড়লেন কলিন।