Cambodia Cyber Slave

চলে অত্যাচার, বন্ধ করা হয় খাবার! বিদেশে চাকরির টোপে পা দিয়ে ‘সাইবার ক্রীতদাস’ হচ্ছেন বহু ভারতীয়

মোটা বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের কম্বোডিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর তাঁদের জোর করে সাইবার প্রতারাণার কাজে নিযুক্ত করা হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:২৪
Share:
০১ ১৫

‘সাইবার ক্রীতদাস’! নতুন করে এই শব্দবন্ধ আতঙ্কের জন্ম দিচ্ছে ভারতীয়দের মনে। প্রায় পাঁচ হাজার ভারতীয় এখনও কম্বোডিয়ায় ‘ক্রীতদাসের’ জীবন কাটাচ্ছেন। কেন্দ্র উদ্যোগী হওয়ায় ২৫০ জনকে ভারতে ফেরানো গেলেও বাকিরা মুক্তির আশায় দিন গুনছেন।

০২ ১৫

কী এই ‘সাইবার ক্রীতদাস’? আমরা সকলেই কমবেশি সাইবার প্রতারণা শব্দবন্ধের সঙ্গে পরিচিত। আধুনিক প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের যুগে প্রতারকেরা নানা ভাবে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে উঁকি দেয়। ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে টাকা লোপাট কিংবা প্রতারণা করে টাকা হাতানোর মতো অভিযোগও কম নয়। এই সাইবার প্রতারাণাই এখন কম্বোডিয়ায় জাল বিস্তার করেছে।

Advertisement
০৩ ১৫

মোটা বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের কম্বোডিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর তাঁদের জোর করে সাইবার প্রতারাণার কাজে নিযুক্ত করা হয়। সেই চক্র বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে আছে। তাদের কাজই হল বিভিন্ন দেশ থেকে লোক জোগাড় করে কম্বোডিয়ায় পাঠানো।

০৪ ১৫

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কম্বোডিয়ায় পৌঁছনো মাত্রই চাকরির খোঁজে আসা মানুষদের থেকে কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্ট। তার পরই তাঁদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধ করানো হয়।

০৫ ১৫

প্রতি দিন বেঁধে দেওয়া হয় কাজের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে চলে অত্যাচার। ছুটি তো মেলেই না, উল্টে খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিনে ১২ ঘণ্টা তো কাজ করতেই হবে, না হলে নিস্তার নেই।

০৬ ১৫

শুধু ডেটা এন্ট্রি করেই মিলবে অনেক বেতন! এমন টোপ দিয়ে কম্বোডিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় ইচ্ছুকদের। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন ডেটা এন্ট্রি নয়, সাইবার প্রতারণার কাজ করতে হবে। তাঁরা যাতে কম্বোডিয়া ছাড়তে না পারেন, সে জন্য কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্ট-সহ যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি।

০৭ ১৫

ভারত ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে মানুষকে কম্বোডিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয়। সম্প্রতি, ভারত সরকারের নজরে আসে বিষয়টি। কী ভাবে তাঁদের দেশে ফেরানো যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিল্লি। কম্বোডিয়া প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ ভাবে সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে শুরু হয় অভিযান।

০৮ ১৫

এখনও পর্যন্ত কম্বোডিয়ায় আটকে পড়া ২৫০ জনকে উদ্ধার করেছে বিদেশ মন্ত্রক। জানা গিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সম্প্রতি ভারতীয়দের উদ্ধারে বিদেশ মন্ত্রক, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক, ভারতীয় সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার এবং অন্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে। তার পরই উদ্ধারের কাজে নামে ভারত।

০৯ ১৫

গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, কম্বোডিয়ায় থাকা ভারতীয়দের জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সাহায্যপ্রার্থী সকল ভারতীয়কে সাহায্য করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার।

১০ ১৫

কম্বোডিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া ভারতীয়দের মধ্যে ছিলেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা স্টিফেন। দেশে ফিরে তিনি তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। স্টিফেন জানান, বেকার থাকায় বাড়়িতে চাপ বাড়ছিল। তাই কাজের সন্ধান শুরু করেন তিনি। সে সময় মেঙ্গালুরুতে এক এজেন্টের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। সেই এজেন্ট ডেটা এন্ট্রির কাজের সন্ধান দেন। বলেন, কম্বোডিয়ায় গিয়ে কাজ করতে হবে। রাজি হতেই স্টিফেনকে পর্যটক ভিসায় সে দেশে পাঠানো হয়।

১১ ১৫

স্টিফেন বলেন, ‘‘আমি কোভিডের সময় কম্পিউটারের কোর্স করি। আমাদের তিন জনকে একসঙ্গে কম্বোডিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। আমাদের বলা হয়েছিল আমরা পর্যটক হিসাবে যাচ্ছি। কম্বোডিয়ায় পৌঁছনোর পরেই আমাদের একটা অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমাদের টাইপিং স্পিড পরীক্ষা করে দেখা হয়। তার পর আমাদের বলা হয় চাকরি পেয়েছি।’’

১২ ১৫

কী কাজ করতে হত স্টিফেনদের? তিনি জানান, সমাজমাধ্যমে তাঁদের ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করা হয়। সেই প্রোফাইলে মেয়েদের নাম এবং ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। তার পর বিভিন্ন প্রতারণামূলক কাজ করানো হত।

১৩ ১৫

কম্বোডিয়ায় গিয়ে সাইবার ‘ক্রীতদাস’-এ পরিণত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। করোনা পর্বের পরেও এমন প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। করোনা পর্বে অনেকেই চাকরি হারিয়েছিলেন। বেশি প্রভাব পড়েছিল তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে। সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে প্রতারকেরা জাল বিস্তার করেছিল। ভারত ছাড়াও চিন, বাংলাদেশের মতো দেশের যুবসমাজই ছিল প্রতারকদের নিশানায়।

১৪ ১৫

সম্প্রতি প্রতারণার আরও এক ঘটনা সামনে এসেছে। মোটা বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে ভারতীয়দের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর অভিযোগে সরগরম গোটা দেশ। বিদেশ মন্ত্রক দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিবিআইও।

১৫ ১৫

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একটি এফআইআর দায়ের করেছে। সেই এফআইআরে একাধিক এজেন্ট এবং কোম্পানির নাম রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ‘মানব পাচার’-এর অভিযোগ উঠেছে। সেই একই অভিযোগ উঠল কম্বোডিয়ার ক্ষেত্রেও।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement