১৯৯৭ সালের ৮ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ফ্লোরিডার বাসিন্দা উইলিয়াম মল্ডট। নিখোঁজ হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর। বহু দিন তদন্ত চালিয়েও তাঁর কোনও হদিস পায়নি ফ্লোরিডার পুলিশ।
১৯৯৭ সালের ৮ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ফ্লোরিডার বাসিন্দা উইলিয়াম মল্ডট। নিখোঁজ হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর। বহু দিন তদন্ত চালিয়েও তাঁর কোনও হদিস পায়নি ফ্লোরিডার পুলিশ।
জলজ্যান্ত একটা মানুষ হঠাৎ এ ভাবে কোথায় উধাও হয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল। কেউ ভেবেছিলেন তাঁকে খুন করে দেওয়া হয়েছে। কেউ ভেবেছিলেন, নিজে থেকেই নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন উইলিয়াম। কিন্তু কোনও সূত্র খুঁজে না পাওয়ায় কেস বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ।
নিরুদ্দেশ হওয়ার ২২ বছর পর ২০১৯ সালে দেহ উদ্ধার হয় উইলিয়ামের। তাঁর হদিস পাওয়া যায় গুগল ম্যাপের উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে।
আবাসন নির্মাণকারী সংস্থার ম্যানেজার জিম মুর (নাম পরিবর্তিত) খোঁজ পান উইলিয়ামের দেহের। কিন্তু এর নেপথ্যের কাহিনি চমকপ্রদ।
ফ্লোরিডার ওয়েলিংটনের কাছে একটি হ্রদ রয়েছে। তার স্বচ্ছ উপগ্রহ চিত্র ২০০৭ সাল থেকেই গুগলে ছিল। ১২ বছর ধরে এই হ্রদের উপগ্রহ চিত্র সকলের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জিমের নজর আটকে যায় হ্রদের জলের দিকে। তিনি লক্ষ করেন, জলের তলায় একটি গাড়ি ডুবে রয়েছে। তৎক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দেন তিনি।
জলের তলা থেকে উদ্ধার করে গাড়ির ভিতর তল্লাশি চালানো হয়। গাড়ির দরজা খুলতেই দেখা যায়, চালকের আসনে এক ব্যক্তির দেহ।
ডিএনএ পরীক্ষা করে তার সঙ্গে উইলিয়ামের ডিএনএ নমুনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পুরনো নথি খুঁজে ২২ বছর আগের উইলিয়ামের নিখোঁজ হওয়ার ফাইল আবার নতুন করে খোলা হয়।
পুলিশ জানায়, ১৯৯৭ সালে ৮ নভেম্বর উইলিয়ামের শেষ খবর পাওয়া গিয়েছিল। সে দিন সন্ধ্যায় একটি নাইটক্লাবে গিয়েছিলেন তিনি।
রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ নাইটক্লাব থেকে বেরোনোর পর বান্ধবীকে শেষ ফোন করেছিলেন উইলিয়াম। তিনি বাড়ি ফিরছেন বলেও জানান। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি তাঁর।
মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর, প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানায় পুলিশ। কিন্তু পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, উইলিয়াম নিয়মিত মদ্যপান করতেন না। সে দিন নাইটক্লাবে গিয়েও সামান্য পরিমাণে মদ খেয়েছিলেন তিনি।
সে দিন নাইটক্লাব থেকে একা বেরিয়ে আসতেও দেখা গিয়েছিল উইলিয়ামকে। যে হ্রদ থেকে উইলিয়ামের গাড়ি পাওয়া যায়, ১৯৯৭ সালে ওই জায়গায় আবাসন নির্মাণের কাজ চলছিল। গাড়ি চালিয়ে কী করে উইলিয়াম সেখানে পৌঁছলেন তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে পুলিশ।
এত বছর আগেকার ঘটনা, কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কী করে সমাধানে পৌঁছবে তা নিয়ে দিশাহারা হয়ে যায় ফ্লোরিডার পুলিশ।
শেষ পর্যন্ত পুলিশের তরফে জানানো হয়, গাড়ি চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন উইলিয়াম। সেই কারণেই মৃত্যু হয় তাঁর।