ঘুম থেকে উঠে রোজ সকালে হাঁটতে যেত সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীটি। ২০১৪, ৩ অক্টোবর। ওই দিনও কাকার মেয়ের সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছিল সে। প্রতীকী ছবি।
হাঁটতে হাঁটতে সামনেরই একটি পার্কে গিয়েছিল দুই বোন মিলে। কিন্তু পার্কের গেট বন্ধ ছিল। তখন ভোর ৫টা। পার্কের গেটের সামনে এক যুবক বাইক নিয়ে এসে দাঁড়ান। তিনি দুই বোনকে জানান, পার্কের পিছনের দিকের গেট খোলা আছে। প্রতীকী ছবি।
ওই যুবকের কথা শুনে পার্কের পিছনের দিকের গেটের কাছে যেতেই সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াকে জোর করে বাইকে তুলে নিয়ে যান যুবক। দিদিকে চোখের সামনে অপহৃত হতে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিল বছর আটেকের বোন। দৌড়তে দৌড়তে বাড়িতে এসে গোটা ঘটনাটি জানায় সে। প্রতীকী ছবি।
কিশোরীর মুখে গোটা ঘটনা শোনার পরই বাড়ির লোকেরা সপ্তম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার খোঁজ শুরু করেন। বেশ কিছু ক্ষণ পরে সেনা সদর দফতরের পিছন থেকে রক্তাক্ত এবং অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার হয় কিশোরী। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে কিশোরীর পরিবার। প্রতীকী ছবি।
পুলিশ সূত্রে খবর, কিশোরীকে শুধু ধর্ষণই নয়, তার গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। পাথর দিয়ে শরীরের অনেক জায়গায় থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার। প্রতীকী ছবি।
প্রথমে কিশোরীকে সাগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার পর সেখান থেকে ভোপালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তিন মাস অচৈতন্য অবস্থায় ছিল। যখন জ্ঞান ফিরেছিল ঠিক মতো কথা বলতে পারত না, কাউকে চিনতেও পারছিল না। সুচিকিৎসার জন্য তাকে ইনদওরে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতীকী ছবি।
পুলিশ সূত্রে খবর, কিশোরীর শরীর কমজোরি হয়ে গিয়েছিল। শরীরে রক্তের অভাব দেখা দিয়েছিল। তার মধ্যেই যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় সে। ৬ বছর ধরে শয্যাশায়ী থাকার পর সুস্থ হয়। প্রতীকী ছবি।
‘দৈনিক ভাস্কর’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিশোরী বলে, “ঠিক মতো হাঁটতে পারতাম না। বিছানায় সব সময় শুয়ে থাকতে হত। এক সময় মনে হচ্ছিল মরে যাব।” প্রতীকী ছবি।
তার কথায়, “আমি স্কুল যেতে চাই। আর পাঁচ জনের মতো হেসেখেলে বেড়াতে চাই। পড়াশোনা করে আমি ডাক্তার হতে চাই, যাতে অন্যের জীবন বাঁচাতে পারি।” প্রতীকী ছবি।
কিশোরী বলে, “অন্য মেয়েদের বলতে চাই, যদি তারা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়, তারা যেন সাহস না হারায়। সাহসে ভর করে এগোলেই লড়াই জিততে পারবে। ভয় পেলে সব শেষ।” প্রতীকী ছবি।
কিশোরীর কাকা বলেন, “আমাদের মেয়ের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা যেন কারও সঙ্গে না হয়। সেই ঘটনার পর থেকে টানা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ছিল একরত্তি মেয়েটি। চোখে দেখা যেত না সেই কষ্ট।’’ প্রতীকী ছবি।
সেই দুঃসহ অতীতের কথা বলতে গিয়ে এর পর তিনি যোগ করেন, ‘‘চিকিৎসার জন্য ভোপাল, ইনদওর কোথায় কোথায় না ছুটেছি, তার ইয়ত্তা নেই। মেয়েটিকে এখন যদি স্কুলে আবার ভর্তি করাতে পারি, তা হলে আমাদের স্বপ্নপূরণ হবে।” প্রতীকী ছবি।
ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল কৌস্তুভ দুবে নামে এক যুবক। ২০১৫ সালে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রতীকী ছবি।
সাগরে হস্টেলে থেকে একটি বেসরকারি কলেজে পড়াশোনা করছিল সে। ২০১৭ সালে অভিযুক্তকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। সেই থেকে জেলে বন্দি কৌস্তুভ। প্রতীকী ছবি।
মধ্যপ্রদেশ পুলিশের মহিলা নিরাপত্তা শাখার তথ্য বলছে, ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত যে সব অভিযোগ জমা পড়েছে, তার মধ্যে ৮৫ শতাংশ লিভ-ইন করা যুবক-যুবতীর। প্রতীকী ছবি।
ওই তথ্য বলছে, এ ছাড়াও আত্মীয় এবং পরিচিতদের লালসার শিকার হয়েছেন ওই তিন বছরের মধ্যে, এমন মামলার হার ছিল ১৩ শতাংশ। অপরিচিতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে মাত্র ২ শতাংশ। বেশির ভাগ মামলার ক্ষেত্রে পীড়িতদের বয়স ১৮ বছর বলে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের মহিলা নিরাপত্তা শাখার তথ্য দিয়েছে। প্রতীকী ছবি।