Personal Finance 2023

কর বাঁচাতে স্বল্পসঞ্চয়? আয়ের কথা ভেবে সঙ্গে এই প্রকল্পটিকেও ভাবুন

বেশিরভাগ গ্যারান্টিড রিটার্ন প্রকল্পে এখন ৭-৮ শতাংশ করে সুদ পাওয়া যাচ্ছে। যদি গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ৭ শতাংশের আশেপাশে হয় তা হলে আপনার নিট প্রাপ্তি কিন্তু ১ শতাংশের আশেপাশেই হবে।

Advertisement

নীলাঞ্জন দে

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি

কর বাঁচাতে কোন রাস্তায় হাঁটতে চান আপনি? পিপিএফ, এন এস সি বা অন্য কোনও ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প? যেখানে মেয়াদ শেষে কত টাকা পাবেন তা সঞ্চয়ের শুরুতেই আপনি জানতে পারেন। প্রসঙ্গত এই প্রকল্পগুলিকে গ্যারান্টিড রিটার্ন প্রকল্প বলা হয় সুদের হার পূর্ব নির্ধারিত বলেই। আবার কর বাঁচাতে অন্য রাস্তাও আছে। যে রাস্তায় হাঁটলে আপনার গন্তব্যে পৌঁছে কত টাকা পকেটে আসবে তা সঞ্চয় শুরু করার সময়ে আপনার জানার কোনও উপায়ই থাকে না। আপনি কিন্তু এই রাস্তাতেও হাঁটতে পারেন বা হাঁটেনও। অনেকেই আবার এই দুই পথেই হাঁটেন অনেকটাই।

Advertisement

আমরা সবাই জানি যে উপরের দু'টি রাস্তায় হাঁটলে ৮০ সি ধারায় কর ছাড় পেতে পারি আমরা। এই আলোচনা থেকে বিমার প্রিমিয়ামকে বাদ রাখছি আমরা। সেটা তো করতেই হবে। কিন্তু প্রশ্ন যেটা সবার মনেই ঘুর ঘুর করতে থাকে তা হল কোন পথে হাঁটব? স্বল্প সঞ্চয়ের পথে, না কি ইএলএসএস, যা পুরোপুরি বাজারের উপর নির্ভরশীল? আর যখন এই নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে তখন কিন্তু আমরা কখনই ভাবি না মুদ্রাস্ফীতির কথা। কিন্তু এই আলোচনায় মুদ্রাস্ফীতিকে ধরে আমাদের হিসাব করতে হবে কোন রাস্তা ভাল। না হলে প্রকৃত আয়ের অঙ্কটা আমরা বুঝতে পারব না। ভাবব যাই হোক না কেন, আমার আয়টা নিশ্চিত। কিন্তু এটা হতেই পারে মেয়াদ শেষে প্রকৃত চিত্রটা একদম অন্যরকম হয়ে দাঁড়াল।

বেশিরভাগ গ্যারান্টিড রিটার্ন প্রকল্পে এখন ৭-৮ শতাংশ করে সুদ পাওয়া যাচ্ছে। যদি গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ৭ শতাংশের আশেপাশে হয় তা হলে আপনার নিট প্রাপ্তি কিন্তু ১ শতাংশের আশেপাশেই হবে। প্রকৃত আয়ের অঙ্ককরতে কিন্তু দেখতে হবে যে প্রকল্পে টাকা ঢালছি সেই প্রকল্পে আয়ের অংশটা করযোগ্য কিনা। তার পরে তার সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতিকে ধরতে হবে। তুলনার জন্য এই দু'টি বিষয় ধরেই কিন্তু এগোতে হবে।

Advertisement

ইএলএসএস দিয়ে শুরু করা যাক। এর রিটার্ন সম্পূর্ণ বাজেটের উপর নির্ভর করে, ফান্ড ম্যানেজারের ক্ষমতা সেখানে বড় ভূমিকা নেবে। মাথায় রাখুন যা রিটার্ন আসবে তা ক্যাপিটাল গেনস হিসাবে গণ্য হবে। এই ক্ষেত্রে বারো মাস অতিক্রম করে যাবে তাই লং টার্ম ক্যাপিটাল গেনসের নিয়মটি খাটবে। এবং সেই করের অঙ্কতে হয়ত আপনার কর বাবদ গচ্ছা খুব একটা বেশি হবে না। মার্কেট যদি সহায় না হয় বা ফান্ড ম্যানেজার যদি ভুলভ্রান্তি করেন, তা হলে রিটার্ন কম হবে। লস হলেও কিছু বলার থাকবে না। তবে অঙ্ক বলছে গত তিন বছরে এই জাতীয় প্রকল্পে গড় রিটার্ন কিন্তু ১০ শতাংশের আশেপাশে। তাই প্রকৃত রিটার্ন স্বল্প সঞ্চয়ের প্রকল্পগুলি থেকে অনেক বেশি।

সঞ্চয় যাঁরা করছেন তাঁরা জানেন যে স্বল্প তিন বছরের লক-ইন ইএলএসএসের ক্ষেত্রে বলবৎ। এবং লক-ইন পিরিয়ডের আঙ্গিক থেকে দেখলে এইটিই সব থেকে কম। অন্যান্য অনুমোদিত লগ্নির জন্য তা ন্যূনতম পাঁচ বছর।

কম দিনের লক-ইন এবং উন্নত রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনার জন্য ইএলএসএসই অনেক বিনিয়োগকারীর পক্ষে বেশি গ্রহণযোগ্য। তবে নির্দিষ্ট হারে রিটার্ন পেতে হলে তাঁদের চাই এনএসসি বা অনুরূপ কোনও লগ্নি।

একই সঙ্গে দুই ধরনের বিনিয়োগ করাই বাঞ্ছনীয়। কিছুটা মার্কেট নির্ভর এবং অন্য অংশটি প্রতিশ্রুত হারে, এমন দুই শ্রেণীর পারফরম্যান্সও পছন্দসই হতে পারে সাধারণ লগ্নিকারীর। তাই ক্ষমতার মধ্যে থেকে ট্যাক্স বেনিফিট দুই ধরনের লগ্নির মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব। এবং ঝুঁকি ছড়িয়ে দিতে অনেকেই তাই দুই ধরনের বিনিয়োগকেই বেছে নিতে বলবেন।

প্রতিবেদক সঞ্চয় উপদেষ্টা। বক্তব্য নিজস্ব।

বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement