বছরের শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছেন কত টাকা জমাবেন। এ বার চাপটা পুরোপুরি আপনার উপর। ভাবছেন, কর বাঁচাতে এত টাকা জমালে সংসার চালাবেন কী ভাবে। বছর শেষ। নতুন আর্থিক বছর দরজায় কড়া নাড়ছে। এই অবস্থায় টাকা না জমালে তো কর বাবদ টাকা কাটা যেতে পারে।
কিন্তু ৮০সি ধারায় কর বাঁচাতে সঞ্চয় করা কতটা যুক্তিযুক্ত? কিন্তু কর বাঁচানোর সঞ্চয়েও তো কর দিয়ে চলেছেন। হয়তো দেওয়া কর আর বাঁচানো করের অনুপাতে কর দেওয়ার পাল্লাটাই ভারী হয়ে যাচ্ছে! এই বিষয়টা খতিয়ে দেখেছেন কি?
ভাবছেন বিমা করে কর বাঁচাচ্ছেন? কিন্তু বিমা যদি বিমার জন্য না করে থাকেন, তা হলে কিন্তু আপনি চাপে। প্রিমিয়ামের উপর পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি)-র কথা ভেবে দেখেছেন কি? কিছু ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ টাকা বিমায় কিন্তু ১৮ শতাংশ জিএসটি যোগ হয়। আপনি যদি ২০ শতাংশ আয়করের সীমাতেও থাকেন তা হলে আপনার ছাড় কিন্তু মাত্র ৫ টাকা ৬০ পয়সার মতো। কর তো দিচ্ছেনই। জিএসটি কি কর নয়?
বিমা নানা রকম হয়। বিমা ভেদে প্রিমিয়ামের উপর জিএসটির বিভিন্ন হার হল ১৮, ৪.৫, ২.২৫ এবং ১.৮ শতাংশ। আপনি কী দিচ্ছেন, আর ছাড় বাবদ কী পাচ্ছেন তা অবশ্যই খতিয়ে দেখুন।
কর ছাড়ের সব প্রকল্পেই কিন্তু টাকা ভাঙানোর উপর নানা শর্ত আছে। তাই কর বাঁচাতে এই ধরনের সঞ্চয় করতে গিয়ে বিপদও ডেকে আনতে পারেন আপত্কালীন সঞ্চয়ের অভাবে।
সঞ্চয়ের প্রধান ও একমাত্র লক্ষ্য কিন্তু কর বাঁচানো নয়। এটা সব সময় মাথায় রাখতে হবে।
কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা উচিত, তা কিন্তু আপনার নিজের লক্ষ্যের উপর নির্ভর করে। আর সেই লক্ষ্য কিন্তু শুধুই কর বাঁচানো হতে পারে না। তাই লক্ষ্য ঠিক করে তবেই কর বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নিন।
যদি কর বাঁচাতে সঞ্চয় করতেই হয়, তা হলে মাথায় রাখতে পারেন ইকুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম (ইএলএসএস)-এর মতো প্রকল্পের কথা। জাতীয় পেনশন প্রকল্প (এনপিএস)-এর ক্ষেত্রে আবার বিনিয়োগে ছাড় থাকলেও প্রকল্প ম্যাচিওরিটিতে কোনও ছাড় নেই।
এ সব কিছু মাথায় রাখলে সেই অর্থে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিপিএফ)-ও কর বাঁচানোর বেশ ভাল পথ। এই প্রকল্পে সুদও বাজারের অন্য সরকারি প্রকল্পের চেয়ে অনেকটাই ভাল।
মাথায় রাখুন বেশির ভাগ কর ছাড়ের সঞ্চয় প্রকল্পেই কিন্তু কিছু না কিছু কর আছেই। তাই কী দিচ্ছেন আর কী পাচ্ছেন তা মিলিয়ে দেখে নিন।
আয়করের নীচের স্তরে থাকলে মাথায় রাখুন বেশি রিটার্নের বিনিয়োগের কথা। পুরো দেড় লক্ষ বিনিয়োগে আপনার লাভ না হতেও পারে।