ফাইল চিত্র
ব্যাঙ্কের বই থেকে বিল, ক্রেডিট কার্ডের বিল সবই গুছিয়ে রেখেছেন। কিন্তু বিপদের সময় চট জলদি সব খুঁজে পান তো? আপনি নিজে সব জানেন, কিন্তু বাড়িতে অন্য কারুর কাছে সেই খোঁজ আছে কি? ভেবে দেখুন, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল। কিন্তু হাসপাতালে জমা দেওয়ার টাকাটা আপনার ব্যাঙ্কে থাকলেও, পড়শিকে দিতে হল টাকাটা। কারণ, আপনার বাড়ির কাছের মানুষটাই জানেন না, আপনার কোথায় কী আছে।
এক পরিচিতের বাবা বাড়ির সব কিছু সামলাতেন। অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্তও পুত্রকে বৈষয়িক ভাবনায় সময় দিতে হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করেই মারা যান সেই বৃদ্ধ। কিন্তু তাঁর নীল নোটবুকে সুন্দরভাবে লেখা ছিল তাঁর অবর্তমানে প্রতিটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা। সেই পরিচিতকে উত্তরাধিকার সামলাতে বা কী ভাবে সামলাবেন তা ভাবতে মাথার চুল ছিঁড়তে হয়নি।
ঈশ্বর না করুন, আপনার হঠাৎ কিছু হয়ে গেল। বাড়ির লোক আপনার কোথায় কী আছে, সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না। কারণ আপনিই সব সামলান। আপনার অনুপস্থিতিতে বা অবর্তমানে কী করবেন তাঁরা? তাই এখনই শুরু করুন গুছিয়ে রাখার কাজ। দেখবেন প্রয়োজনে কাগজ খুঁজে পাওয়ার কাজটা আপনারও সহজ হয়ে যাবে। ওই বৃদ্ধের পথে হেঁটেই।
প্রথমেই শুরু করুন ফাইল তৈরির কাজ
ক) আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স জাতীয় সব পরিচয়পত্রের ফটোকপি একটা ফাইলে রাখুন। আপনার পিপিও-র কপিও রাখবেন এখানে। ফাইলের বাইরে লিখুন ভিতরে কী আছে তার তথ্য।
খ) ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টের ফাইল। ভিতরের ফ্ল্যাপে লিখে রাখুন ব্যাঙ্কের ফোন নম্বর এবং সেই ব্যাঙ্কের আপতকালীন যোগাযোগের ফোন নম্বর। একই ফাইলে একাধিক বছরের স্টেটমেন্ট থাকলে, নতুন বছরের প্রথম স্টেটমেন্টে ‘স্টিকি ফ্ল্যাগ’ লাগান। এতে সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন প্রতিটি বছরের স্টেটমেন্ট।
গ) মিউচুয়াল ফান্ড স্টেটমেন্টের ফাইল। এই ফাইলের ভিতরেও লিখে রাখুন কোন ব্যাঙ্কে ডিভিডেন্ড আসে। একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলে, চেষ্টা করুন একটি অ্যাকাউন্ট থেকেই পেমেন্টের দায় মেটাতে। এতে বছর শেষে হিসাব মেলাতে সুবিধা হবে।
ঘ) তৈরি করুন মাস-কাবারি বিলের ফাইল যা আপনি ব্যাঙ্ক থেকে মিটিয়ে থাকেন। বিল মিটিয়ে দিয়ে থাকলে বিলের উপর লিখে রাখুন কোন অ্যাকাউন্ট থেকে দিলেন।
উপরে যা বলা হল, তা নেহাতই একটা রূপরেখা। আপনি প্রয়োজন মতো অদল বদল করতেই পারেন। আমরা জানি, হয়ত আরও সুন্দর ভাবেই করবেন। কিন্তু গুছিয়ে রাখুন কাগজ।
এর পর আসবে নোটবুক তৈরির কাজ।
একটা নোটবুকে সুন্দর করে সাজিয়ে নিন,
· আপনার বিমা এজেন্টের নাম আর যোগাযোগের নম্বর
· মিউচুয়াল ফান্ড এজেন্টের নম্বর
· কোন কাগজ কোন ফাইলে পাওয়া যাবে তার হদিশ
· যদি সরকারি পেনসন পান, তাহলে আপনার অবর্তমানে আপনার পরিজন ফ্যামিলি পেনসনের জন্য কী ভাবে আবেদন করবেন তার নির্দেশ
· অফিসের কোনও সহকর্মীর যোগাযোগের হদিশও থাকা ভাল এই ডায়েরিতে
· কোন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট কোন কাজে ব্যবহার করেন তার হদিশ
· কোন অ্যাকাউন্ট জয়েন্ট আর কোনটি শুধুই আপনার নামে তার তালিকা
· কোন অ্যাকাউন্টে কে নমিনি তার তালিকা
· উইল করা থাকলে তা কোথায় আছে
· লকার থাকলে তা কোন ব্যাঙ্কে
এই তালিকাও আপনার প্রয়োজনমতো আরও তথ্য সাজিয়ে নিন। কিন্তু করুন। এই তথ্য কিন্তু বিমার মতোই জরুরি।