Loan

হিসেব মেলানো ভার, আয় ব্যয় একাকার, কিন্তু সঞ্চয়?

দোকানে খেতে হবে, সিনেমা যেতে হবে, বন্ধুবান্ধবকে উপহার দিতে হবে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেড়াতে যেতে হবে, আবার ভাবতে হবে অসুখ বিসুখ বা ভবিষ্যতের কথাও।

Advertisement

সুপর্ণ পাঠক

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভিক্ষা করে খেতেন। কিন্তু মারা যাওয়ার পরে দেখা গেল ঝোলায় এক কাঁড়ি টাকা। সঞ্চয়বাগীশ মানুষ। তাই হয়ত ভিক্ষা করেই জমিয়ে গিয়েছেন টাকা। খবরে পড়ি আর ভাবি, “আহা বেচারা। কী লাভ হল?” এটা সত্যিই মানসিক সমস্যা। কিন্তু এর উল্টোদিকও আছে।সারাজীবন আয় করেছেন। কিন্তু জীবন উপভোগ করতে গিয়ে শেষ জীবনে পথে বসার অবস্থা!

Advertisement

এ দুটোর কোনওটাই কিন্তু কারও জীবনে কাম্য নয়। দোকানে খেতে হবে, সিনেমা যেতে হবে, বন্ধুবান্ধবকে উপহার দিতে হবে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেড়াতে যেতে হবে, আবার ভাবতে হবে অসুখ বিসুখ বা ভবিষ্যতের কথাও -- এই সবই কিন্তু করতে হবে আপনার মাস গেলে হাতে আসা নির্দিষ্ট সেই আয়ের মধ্যেই!

ঝামেলা! ভাবলেন এ মাসে কিছু টাকা সরিয়ে রাখবেন। কিন্তু ওই যে রবিবার ভাল লাগছে না বলে চলে গেলেন কেতার দোকানে, খেতে। ব্যস! ঝপ করে পকেট থেকে গলে গেল এক গাদা টাকা। জানি ভাবছেন, এই হিসাব কী করে করবেন! তাই তো?

Advertisement

ভাববেন না। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু আমার আপনার মতো মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তথ্য নিয়ে কিছু বুড়ো আঙুলের নিয়ম ঠিক করে দিয়েছেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেই নিয়ম গুলো।

খরচ ভাবুন সঞ্চয় দিয়ে

ভাবছেন এ আবার কেমন কথা! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “হ্যাঁ। এটাই কথা।” আমরা অঙ্কটা কী ভাবে করি? মাইনে থেকে খরচ করে তার পর যা থাকে সেটাই জমাই। তাই তো? অর্থাৎ

সঞ্চয় = আয় - খরচ

কিন্তু আপনাকে এই অঙ্কটাই ভাবতে হবে উল্টে। আগে নিজেকে টাকা দিন। মানে হল নিজের জীবনের সংস্থান করুন প্রথমে। আজকের কথা ভাবুন ভবিষ্যতের ব্যবস্থা করেই। আর তাই উল্টে দেখুন হিসাবটাকে।

খরচ = আয় - সঞ্চয়

কতটা সঞ্চয় করব

ভাবছেন তো, “মানলাম। কিন্তু কতটা সঞ্চয় করব? ভবিষ্যতের কথা তো জানি না!” দেখুন, বয়স বাড়ার সঙ্গে আয়ও বাড়ে, আর তার সঙ্গে বাড়ে সঞ্চয়ের ক্ষমতাও। এটা আমরা জানি। কিন্তু সমস্যা হল আয়ের কতটা সঞ্চয়ে রাখব। তাই তো?

আপনি জীবন শুরু করেছেন, ধরলাম ২৫ বছর বয়সে। শুরু করুন আয়ের ১০ শতাংশ দিয়ে। তার পর যত বয়স বাড়বে, বাড়াতে থাকুন সঞ্চয়ের ভাগও। কারণ আপনার দৈনন্দিন খাওয়া একই থাকবে। তাই আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ কিন্তু পাল্লা দিয়ে বাড়বে না। তাই আয় বাড়লে জমার ঘরেও ওজন বাড়াতে পারবেন।

৫০:২০:৩০-এর নিয়ম

কিন্তু খরচ তো নানান। প্রয়োজনও। না হয় সরিয়ে রাখলাম থোক টাকা। কিন্তু সেই থোক থেকে কতটা কোথায় রাখব? এরও একটা বুড়ো আঙুলের নিয়ম আছে। সেটা বলে আয়ের ৫০ শতাংশ রাখুন আপনার মাসের খরচের জন্য। ২০ শতাংশ রাখুন নিকট এবং আরে একটু দুরের ভবিষ্যতের জন্য। ওই বেড়াতে যাওয়ার বা অন্য কোনও লক্ষ্য পূরণের জন্য, আর ৩০ শতাংশ রাখুন আগামী সেই ভবিষ্যতের জন্য যখন আপনাকে ছেলে মেয়ের বিয়ে দিতে হবে, অবসরের খরচ চালাতে হবে, এই সব লক্ষ্য পূরণের জন্য।

মাথায় রাখুন এগুলো সবই কিন্তু বুড়ো আঙুলের নিয়ম। বিভিন্ন মানুষের অভিজ্ঞতা যাচাই করে করা। তাই আপনার চাহিদার সঙ্গে যে মিলবেই তা নাও হতে পারে। কিন্তু এটা আপনাকে ভাবতে সাহায্য করবে। তাই করেই দেখুন না, কী হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement