মিউচুয়াল ফান্ড বা ক্রিপ্টোকারেন্সি – বিনিয়োগের বাজারে বিকল্পের ছড়াছড়ি! তবে তার সঙ্গে এটাও অজানা নয় যে, বিনিয়োগের বাজার ঠিক কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।
বড় অঙ্কের বিনিয়োগের অর্থ বড় ঝুঁকির আশঙ্কা। বহু বিনিয়োগকারী এই ঝুঁকি এড়াতেই ছোট অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড তাঁদের কাছে হতে পারে তুরুপের তাস।
এক দিকে যেমন দীর্ঘমেয়াদি, তেমনই অন্য দিকে ঝুঁকিহীন বিনিয়োগের সুযোগ। তবে পিপিএফ–এ বিনিয়োগ করার আগে কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন। যেমন, ফান্ডের সুদের হার, সর্বনিম্ন কত টাকা থেকে বিনিয়োগ শুরু, সর্বোচ্চ কত টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে ইত্যাদি।
এই প্রকল্পের মেয়াদ ১৫ বছর। অর্থাৎ পিপিএফ অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করার পরে প্রাপ্ত ম্যাচ্যুরিটির টাকা ১৫ বছর পরে পাওয়া যায়। বিনিয়োগকারী চাইলে অবশ্য আরও পাঁচ বছর বাড়াতে পারেন।
তবে এ ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টটি পাঁচ বছরের কম সময়ের জন্য চালিয়ে যাওয়া যায় না। অতএব পাঁচ বছরের ব্লকে চালিয়ে যেতে হবে অ্যাকাউন্ট। এক কথায়, ১৫ বছর পর পাঁচ বছরের প্রতিটি ব্লকে এক্সটেনশন করা যেতে পারে।
জনকল্যাণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে পিপিএফ বা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বিশেষ ভাবে নজর কেড়েছে। দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ পিপিএফ –এ বিনিয়োগ করছেন।
বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের পাশাপাশি আয়কর নিয়ম অনুযায়ী কর ছাড়ের সুবিধা পান সরকারি এই প্রকল্পে। এতে বিনিয়োগ করে আয়করের ৮০সি ধারায় সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড় পেতে পারেন লগ্নিকারী।
বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে পিপিএফের। যেমন ধরুন, এক জন ব্যক্তি মাত্র একটিই পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এবং প্রয়োজনে আপনার পিপিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে লোনও নিতে পারবেন। প্রসঙ্গত, নাবালকদের জন্যও খোলা যেতে পারে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট।
যে কোনও পোস্ট অফিস অথবা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকলেই পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। অ্যাকাউন্ট খোলার নথি হিসাবে প্রয়োজন প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। সঙ্গে যে পরিমাণ অর্থ জমা করবেন, তা ওই দিনই জমা করতে হয়।
এই অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতিও বেশ সহজ। ব্যাঙ্ক অথবা পোস্ট অফিস থেকে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম সংগ্রহ করে, তথ্য ভরে সেটি জমা করুন। আপনার পিপিএফ অ্যাকাউন্ট চালু হয়ে যাবে।
তবে বর্তমানে ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে সরাসরি গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার পরিবর্তে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে অনলাইনে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতিও নিচ্ছেন অনেকেই। এই খাতে মাসে ৫০০ টাকার উপরে এবং সাড়ে ১২ হাজার টাকার নীচে বিনিয়োগ করা যায়। বিনিয়োগের কোনও নির্দিষ্ট অঙ্ক নেই।
মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে কোটিপতি হয়ে যেতে পারেন আপনি! কী ভাবে? অঙ্কের সহজ হিসাব। পিপিএফের নিয়ম অনুযায়ী, এক জন গ্রাহক বছরে সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন এই প্রকল্পে।
অতএব, যদি ২৫ বছর বয়স থেকে বিনিয়োগ শুরু করেন, তা হলে প্রতি বছর অ্যাকাউন্টে দেড় লক্ষ টাকা করে রাখলে ৫৫ বছরে অর্থাৎ অবসর জীবনের প্রায় পাঁচ বছর আগেই টাকা পেয়ে যাবেন।