Retirement Plan

Retirement tool: নিজের ‘রিটায়ারমেন্ট টুল’ তৈরি করুন নিজেই

আপনি খুব গুছিয়ে, সুষ্ঠু ভাবে অবসরের পরিকল্পনা করেছেন বটে, কিন্তু গোড়ায় যে গলদ থেকেই গিয়েছে তা আর খেয়াল করেননি।

Advertisement

নীলাঞ্জন দে

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৯:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

আপনি খুব গুছিয়ে, সুষ্ঠু ভাবে অবসরের পরিকল্পনা করেছেন বটে, কিন্তু গোড়ায় যে গলদ থেকেই গিয়েছে তা আর খেয়াল করেননি। ‘প্ল্যানিং টুল’ নামক যে সহায়কগুলি সাধারণত ব্যবহার হয়ে থাকে, সেগুলি অনেক সময় ঠিক ভাবে ‘পোস্ট-ইনফ্লেশন রিটার্ন’-এর (মুদ্রাস্ফীতির অভিঘাত ধরে নিয়ে যে নিট অঙ্কটি পাবেন) হিসাব ঠিকঠাক কষে না। ফলে ভাল প্ল্যানও ভুল সন্ধান দেয়, দিনের শেষে যা পাওয়ার কথা তা বিনিয়োগকারী পান না। আর প্রথমেই ভুল করলে আর কখনই তা ঠিক করা হয়ে ওঠে না।
মুদ্রাস্ফীতির হার আমরা কেবল অনুমান করতে পারি বা ধরে নিই। একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ধরে নেয় মুদ্রাস্ফীতির হার পাঁচ বা ছয় (বা অন্য কিছু) শতাংশ হবে। কী ভাবে তা ঠিক হয়? আমরা হিস্টরিক ট্রেন্ড বা ঐতিহাসিক তথ্য সারণী দেখে এমনই ধরে নিই। আর হিসাবে ভুল হয় এখানেই কারণ ১৫-২০-২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে মুদ্রাস্ফীতি একই স্তরে থাকতে পারে না।

Advertisement

রিটায়ারমেন্ট প্ল্যানের গোড়ায় কিন্তু অনেক শর্ত থাকে। মাথায় রাখতে হবে এ কথাও। যেমন কত টাকা আপনি কিস্তিতে জমাবেন, তার বৃদ্ধি হার কী হবে ইত্যাদি। যাবতীয় পরিকল্পনা এই সমস্ত শর্তের ভিত্তিতে করে থাকি আমরা। এই ধারণার মধ্যে এ-ও থাকে যে ইকুইটি মার্কেট ডবল-ডিজিট রিটার্ন তো দেবেই, দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে গড়ে পনেরো শতাংশ পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। অন্য কেউ হয়তো তার কম বা বেশি পাওয়ার কথাও ভাবতে পারেন।

প্রতীকী ছবি।

এমন যদি হয় যে একটি প্ল্যানের শেষ পর্যায়ে দুই-তিন বা তার বেশি সময় নিয়ে শেয়ার মার্কেট পড়ল, ইকুইটি ভাল ফল দিল না। এমন হতেই পারে, আগে হয়েছেও বহু বার। তা হলে? প্ল্যানের মধ্যে ধরে নেওয়া বৃদ্ধির হার তো একটু হলেও নেমে আসবে। লগ্নিকারী কী করবেন সে ক্ষেত্রে?
তাই মাথায় রাখতে হবে, যে হিসাব মাথায় রেখে আপনি এগিয়েছেন সেই হিসাব না মিলতেও পারে। তখন কী করবেন সেই চিন্তাটাও মাথায় রাখা উচিত। অর্থাৎ একটা ‘প্ল্যান বি’ মাথায় রাখতেই হবে। কারণ প্রথম প্ল্যান যে আন্দাজ বা শর্তগুলির উপর নির্ভরশীল ছিল, সেগুলি নাও পুরণ হতে পারে। অন্য পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। তা হয়তো তেমন সুখপ্রদ হবে না। যদি না এই প্ল্যান বি থাকে।

Advertisement

রিটার্ন কষে নেওয়ার সময় যেন অঙ্ক যথাসম্ভব সতর্কতার সঙ্গে করা হয় তাও দেখতে হবে। না হলে লগ্নিকারীর মনে ভ্রান্ত কিছু ধারণা তৈরি হবে। আপনার রিটার্ন ইকুইটি থেকেই আসুক বা ডেট মার্কেট থেকে, কর দেওয়ার পর হাতে কী পড়ে থাকল সেটাই বিবেচনা করা উচিত। নেট রিটার্নই প্রধান বিবেচ্য। আম আদমি যেন তাই মনে রাখেন। করের হার এ দেশে তেমন কম কিছু নয়। তাই প্রাপ্য অংশটি আয়কর দফতরের হাতে তুলে দেওয়ার পরই আপনার লাভ কত হয়েছে সেই বিচার করতে বসুন। যদি আপনি আয়করের স্ল্যাবের উঁপরের দিকে থাকেন, তা হলে তো কথাই নেই।

মোট কর ও মুদ্রাস্ফীতি একত্রিত করলে সেই পরিমাণ যে অনেকটাই তা নিশ্চয় বোঝা যাচ্ছে। তাই নিজের ‘রিটায়ারমেন্ট টুল’ নিজেই তৈরি করুন। কী চান, আর সেই চাহিদা পূরণ করতে কতটা সঞ্চয় করতে পারবেন সে অঙ্ক কিন্তু অন্য কেউ করে দিতে পারবে না। সাহায্য করতে পারেন অন্য কেউ। তবে আপনার চাহিদা বা ক্ষমতার ওজন অন্য কেউ ঠিক করে দিতে পারবেন না। তাই আগে নিজের চাহিদা আর ক্ষমতা যাচিয়ে নিন। না হলে ভুল হিসাবের ভিত্তিতে করা পরিকল্পনা আপনার অবসরের পরের জীবনে সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement