প্রতীকী ছবি।
লোকে বলে জীবনসঙ্গী নির্বাচন নাকি সহজ নয়। কেউ কেউ চোখ কান বুজে ঝাঁপ দেন। আর তাঁদের অনেকেরই সুখেই কেটে যায় গোটা জীবনটা। কিন্তু যদি না মেলে?
মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা ঢালাও কিন্তু এ রকমই। সবাই বলছে ভাল। আপনিও ভাল বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। লেগে গেল তো ঠিক আছে। কিন্তু যদি ভুল হয়? ব্যস! গেল।
ভুল সিদ্ধান্ত এড়ান:
জীবনসঙ্গী নির্বাচনে ভুল হয়ে গেলে যেমন পস্তাতে হয় যায়, এ ক্ষেত্রেও সমস্যাটা একই। নিজের চাহিদা বুঝে যদি ফান্ড বাছতে না পারেন, তাহলে কিন্তু ভুগবেন আপনিই।
বেশিরভাগ মানুষই মিউচুয়াল ফান্ড বাছাই করেন অন্যের কথা শুনে। "এই ফান্ডটা না বেশ ভাল রিটার্ন দিচ্ছে!" ব্যস। আপনিও ঢেলে দিলেন টাকা। আর আপনি যদি আর একটু খবর রাখা মানুষ হন তাহলে শোনা কথাটা মিলিয়ে নেবেন, তার সঙ্গে ফান্ডটির রাঙ্কিং।
রেটিং শেষ কথা নয়
রেটিং যদি শেষ কথা হত, তাহলে তো সবাই একই ফান্ড কিনতেন। রেটিং প্রয়োজনীয় কিন্তু তার সঙ্গে আরও অনেক কিছু দেখা জরুরি। খেয়াল করে দেখবেন, একই ফান্ড কিন্তু বিভিন্ন রেটিং সংস্থার হিসাবে সেই একই ফান্ডের অবস্থান বিভিন্ন। তার কারণ, বিভিন্ন রেটিং-এর ভিত্তি আলাদা।
দ্বিতীয়ত, যে ফান্ড এ বছর রাজার মুকুট পেল, পরের বছর সেই ফান্ডই কিন্তু রেটিং-এর সিঁড়িতে তলায় থাকতে পারে। তাই নিয়মিত যাচাই করুন ফান্ডের অবস্থা।
এ বছর যে মিউচুয়াল ফান্ড লাভের নিরিখে স্টার পারফর্মার হয়েছে, পরের বছর সেই একই ফান্ডের অবস্থা খারাপ হতেই পারে। তাই নিয়ম করে প্রতি ছয় মাসে খতিয়ে দেখুন আপনার ফান্ডের অবস্থান। প্রয়োজনে ফান্ড বদল করুন।
কেন বিনিয়োগ করেছেন জানেন তো
খুচরো বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে তৃতীয় সমস্যা হল, তাঁরা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যর কথা মাথায় না রেখেই বিনিয়োগ করে ফেলেন। মাথায় রাখবেন বাজারে বিভিন্ন ফান্ড তৈরি হওয়ার কিন্তু কারণ রয়েছে। সব ফান্ডই টাকা খাটানোর জন্য। কিন্তু কী কারণে সেই টাকা খাটছে সেই চাহিদা মেটাতেই কিন্তু নানান ফান্ড তৈরি হয়েছে।
বুঝতে হবে বাজারের অবস্থা
মনে রাখতে হবে আপনার সঞ্চয়ের টাকা খাটছে ব্যবসায়। তাই বাজারের হালচালের উপর নির্ভর করবে আপনার বিনিয়োগ। যেহেতু বিভিন্ন ফান্ড বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে, তাই আপনার টাকা কোথায় খাটছে এবং তাদের বাজারের কী অবস্থা তার একটা আন্দাজ থাকা জরুরি। তাই অর্থনীতির গতির দিকে নজর রাখতেই হবে। জানি কাজটা কঠিন। তবু একটা চলনসই ধারণা করা মোটেই কঠিন নয়।
ধরা যাক, সবচেয়ে নিরাপদ ভেবে আপনি ডেট ফান্ডে বিনিয়োগ করছেন। এবার দেখুন প্যানডেমিক-এর সময় বাজারে সুদের হার একদম তলানিতে ঠেলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আর তার চাপ কিন্তু আপনার ঋণপত্রের বিনিয়োগেও পড়েছে। তাই আপনার যদি স্বল্পমেয়াদী ফান্ডে বিনিয়োগ থাকে তাহলে আপনার সিদ্ধান্ত যা হবে, দীর্ঘমেয়াদী ফান্ডের ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে। সুদের হার কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে দীর্ঘমেয়াদী ডেট ফান্ড বেছে নেওয়া ভাল। আর সুদের হার বাড়ার ইঙ্গিত থাকলে স্বল্পমেয়াদী ডেট ফান্ড লাভজনক হবে।