প্রতীকী ছবি।
আপনি মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখতে চান। কিন্তু কোন ফান্ডে রাখবেন? বাজারে বিভিন্ন শ্রেণির দু’হাজারের বেশি ফান্ড বিক্রি হচ্ছে। প্রতি শ্রেণির মধ্যে রয়েছে নানান ফান্ড। তাদের মধ্যে কোনওটা খুব ভাল ফল করছে, আবার কোনওটা ততটা নয়। তাই আপনার চাপ সব থেকে দক্ষ ভাবে পরিচালিত ফান্ডটি বেছে তাতে বিনিয়োগ করা।
কিন্তু এই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে দেখা নেওয়া যাক সেবি আপনার জন্য কী বলছে। যে কোনও ফান্ড তৈরিতে সেবি-র অনুমতি লাগে। বিনিয়োগকারীর সুবিধার জন্য সেবি
মিউচুয়াল ফান্ডগুলির যে নতুন শ্রেণিবিন্যাস করেছে সেগুলি হল:
ক) ইকুইটি প্রকল্প
খ) ঋণপত্র প্রকল্প
গ) ইকুইটি ও ঋণপত্রের মিশ্রণ
ঘ) লক্ষ্য নির্ভর প্রকল্প
ঙ) অন্যান্য
প্রতিটি সংস্থাকেই তাদের প্রকল্পগুলিকে এই পাঁচটির মধ্যে একটিকে বেছে তৈরি করতে হয়। সেবি বলে দিয়েছে কোন শ্রেণির বিনিয়োগে কী ধরনের শেয়ার বা ঋণপত্রে লগ্নি করা যাবে। সংস্থাগুলিকে সেই নির্দেশিকা মেনেই বিনিয়োগ করতে হয়।
এই শ্রেণি বিভাগের মুখ্য উদ্দেশ্য শুধু বিনিয়োগের জন্য প্রকল্প খোঁজার সুবিধা তৈরি করাই নয়, ঝুঁকির অঙ্কও যাতে সহজে করা যায় তা দেখা। কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া কোনও সংস্থাই কোনও একটি শ্রেণিতে একাধিক প্রকল্প বাজারে ছাড়তে পারে না। সেবি খুব পরিষ্কার করে বলে দিয়েছে কাকে লার্জ ক্যাপ, কাকে মিডিয়াম ক্যাপ বা কাকে স্মল ক্যাপ বলা হবে। তাই কোনও সংস্থাই তাদের ইচ্ছা মতো শেয়ারের শ্রেণি বিভাগ করতে পারে না।
আর যে সব প্রকল্প লক্ষ্য নির্ভর (যেমন অবসরকালীন আয়ের জন্য সঞ্চয়, বা বাচ্চাদের ভবিষ্যতের লক্ষ্যে সঞ্চয়) তাদের ক্ষেত্রে রয়েছে বিনিয়োগ করার পরে তা পছন্দ না হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত বদলে টাকা তুলে নেওয়ার সুযোগ।
ছবি: সংগৃহীত
সেবি আপনাকে বিনিয়োগের আগে যা দেখতে বলছে তা হল:
ক) জেনে নিন বিনিয়োগের পরে কোনও অসুবিধা হলে আইন কতটা আপনার সঙ্গে থাকবে।
খ) প্রতিটি প্রকল্পের ঝুঁকি বুঝতে সেই বিশেষ প্রকল্পের খুঁটিনাটি জেনে নিন। রিস্ক-ও-মিটার অনুযায়ী সেই প্রকল্পের ঝুঁকি কতটা জানুন। এ বার নিজের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতাটাও ভাল করে বুঝে নিন। মাথায় রাখতে হবে যে কোনও সঞ্চয় প্রকল্পেই অল্পবিস্তর ঝুঁকি থাকে। আপনি কতটা ঝুঁকি নিতে সক্ষম তার উপর কিন্তু আপনার বিনিয়োগ নির্ভর করবে। যে প্রকল্পে ঝুঁকি যত বেশি তাতে কিন্তু রিটার্ন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। আবার বিনিয়োগে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও একই রকম। তাই কত টাকা হারালেও আপনার পকেটে চাপ পড়বে না তা বুঝেই প্রকল্পের ঝুঁকি বাছুন।
গ) একই শ্রেণির একাধিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করবেন না। সঞ্চয়ের ঝুলি ভরুন নানান প্রকল্প দিয়ে। তাতে ঝুঁকি কমবে।
ঘ) বিনিয়োগ করে বসে থাকবেন না। প্রতিটি বিনিয়োগের জন্য একটা সময়সীমা নির্দিষ্ট করুন। মাঝে মাঝেই খোঁজ নিন আপনার লগ্নি করা প্রকল্পগুলো তুলনামূলক ভাবে কেমন করছে। যদি ভাল না করে, তা হলে কেন তা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি পছন্দ না হয়, তা হলে বিনা দ্বিধায় সেই প্রকল্প থেকে টাকা তুলে অন্য কোথাও বিনিয়োগ করুন।
মাথায় রাখবেন যেখানেই টাকা রাখুন কিছু না কিছু ঝুঁকি থাকবেই। কোথাও শুধু রিটার্নের ঝুঁকি আবার কোথাও গোটা বিনিয়োগটাই। তাই সেবি-সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি নির্ণায়ক সংস্থাই কিন্তু বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছে। তবে এটাও ঠিক যে ঝুঁকি আপনি কতটা নেবেন তা আপনার ঝুঁকির ক্ষিদের উপর নির্ভর করছে। তাই আগে নিজের চাহিদা ঝুঁকি ও লক্ষ্যের নিক্তিতে মেপে নিয়ে বিনিয়োগের পথে হাঁটা শুরু করুন।