প্রতীকী চিত্র
প্রায় সব সমীক্ষাই বলছে বিমা কেনার দৌড়ে পশ্চিমবঙ্গ সবার আগে। কিন্তু একই সঙ্গে সমীক্ষা বলছে বিমা নিয়ে জানার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মানুষই অনেক পিছিয়ে। যখন কিছু কিনতে যাই, সে আলুই হোক বা টিভি, আমরা কিন্তু খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা করি কোনটার দাম কত এবং কেন। তারই সঙ্গে মিলিয়ে নি আমাদের প্রয়োজন। পকেটে টাকা থাকলেও আমরা এক চিলতে ঘরের জন্য নিশ্চয়ই ৫২ ইঞ্চি টিভি কিনে ঝোলাই না। কিন্তু যখন বিমা কিনি, আমরা খুব একটা যাচাই করে দেখি না বাজারে অন্য কী বিমা আছে। অথবা আমরা যা কিনছি তা কতটা আমাদের প্রয়োজনে লাগবে।
বিমাকে আমাদের মধ্যে একটা বড় অংশই কর ছাড়ের রাস্তা হিসাবে দেখি আর দেখি সঞ্চয়ের রাস্তা হিসাবে। আর্থিক ঝুঁকি সামলানোর পথ হিসাবে প্রায় দেখিই না। কিন্তু সঞ্চয়ের রাস্তা হিসাবে দেখেও অনেকেই আমরা তার জটিলতা এড়িয়ে সরাসরি এজেন্টের হাতে নিজেদের সঁপে দিয়ে থাকি। কিন্তু কিছু সাধারণ পার্থক্য বুঝে নিলে আপনার কিন্তু সুবিধাই হবে সিদ্ধান্ত নিতে।
যেমন ধরুন এই লিঙ্কড আর নন-লিঙ্কডের ফারাক। শুনতে খুব কঠিন হলেও ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই অত কঠিন নয়। অন্তত বিভাজনটার গোড়ার কথাটা বুঝে নিলে বাকিটা অনেকটাই সুবিধার হয়ে যায়। তাই চলুন চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ফারাকটার উপর।
লিঙ্কড প্ল্যান হল সেই সব বিমা যাদের লগ্নিযুক্ত বিমা হিসাবে দেখা হয়। মাথায় রাখবেন, লগ্নি বা বিনিয়োগ করা তখনই বলি যখন আপনার টাকা সাধারণ ভাবে শেয়ার বাজার বা ঋণপত্রের বাজারে ঢালা হয়। এই ধরনের বিমায় আপনার বিমা বাবদ প্রিমিয়ামের টাকা সরিয়ে রেখে বাকি টাকাটা বাজারে লগ্নি করা হয়। যেমন, ইউলিপ। তাই এই ধরনের বিমায় জমা টাকার ওঠা-নামা বাজারের ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত বলেই একে ‘লিঙ্কড’ পলিসি বলা হয়।
নন-লিঙ্কড প্ল্যান হল প্রথাগত বিমা। এর টাকা বাজারে লগ্নি করা হয় না। এই বিমায় আগে থেকেই মোটামুটি আন্দাজ করা যায় বিমার সময়সীমার শেষে আপনি কত টাকা পেতে পারেন। ম্যাচিওরিটি বা বিমার সময়সীমা পার হয়ে গেলে কত টাকা পেতে পারেন তার একটা পূর্বনির্ধারিত অঙ্ক বলা থাকে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় প্রতি বছর যে বোনাস ঘোষণা করা হয় তার টাকা।
ব্যস! এবার জেনে গেলেন সঞ্চয় হিসাবে বিমাকে দেখলে তার মূল বিভাজন কী হতে পারে। নতুন বিমা কেনার রাস্তায় হাঁটলে নিজের টাকা বিনিয়োগের ঝুঁকি কতটা নেবেন তা বুঝেই এগিয়ে চলুন।