মন ছুঁয়ে যায়

‘কবিতাস্কোপ’ এর অনুষ্ঠানে। লিখছেন বারীন মজুমদার।একক আবৃত্তির আসর এখন আর শুধুমাত্র কণ্ঠ দিয়ে হয় না। সঙ্গে নানা অনুষঙ্গ জুড়ে থাকে। আবৃত্তি শিল্পকে নিয়ে শিল্পীদেরও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হচ্ছে। তেমনই সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিকল্পিত ‘কবিতাস্কোপ’ একটি নবতম সংযোজন। নাচ, গান, নাটক, চলচ্চিত্রায়ন, সঙ্গীত সব কিছুর সহযোগে এই কবিতাস্কোপ যে দর্শকচিত্ত জয় করেছে দর্শক সমাগম থেকেই বোঝা গেল। এটি কবিতাস্কোপের এক দলবদ্ধ প্রয়াস।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
Share:

একক আবৃত্তির আসর এখন আর শুধুমাত্র কণ্ঠ দিয়ে হয় না। সঙ্গে নানা অনুষঙ্গ জুড়ে থাকে। আবৃত্তি শিল্পকে নিয়ে শিল্পীদেরও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হচ্ছে। তেমনই সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিকল্পিত ‘কবিতাস্কোপ’ একটি নবতম সংযোজন। নাচ, গান, নাটক, চলচ্চিত্রায়ন, সঙ্গীত সব কিছুর সহযোগে এই কবিতাস্কোপ যে দর্শকচিত্ত জয় করেছে দর্শক সমাগম থেকেই বোঝা গেল। এটি কবিতাস্কোপের এক দলবদ্ধ প্রয়াস। সুতপার সঙ্গে সঙ্গীতায়োজন ও সরোদ বাদনে ছিলেন পণ্ডিত দেবজ্যোতি বসু, আবৃত্তিকার সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, নৃত্যশিল্পীরা এবং চলচ্চিত্রায়নে প্রবাল মল্লিক।

Advertisement

তাঁর চয়নে এদিন যে সব কবিতা ছিল তার মধ্যে কিছু কিছু কবিতার মধ্যে সামাজিক বার্তাও ছিল। অনেকগুলি কবিতা, বহুশ্রুত হয়তো তাদের বিষয়বস্তুরই জন্য। যেমন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘কলকাতার যীশু’ কবিতাটির চলচ্চিত্রায়ণ অত্যন্ত বাস্তবসম্মত। সুতপার পাঠেও ছিল আন্তরিকতা। শুভ দাশগুপ্তের ‘বাবার চেয়ার’ সাদা কালোয় চলচ্চিত্রায়ন, দেবজ্যোতির একক সরোদ ও সুতপার আবেগ সব মিলিয়ে উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘না পাঠানো চিঠি’-র বিষয়বস্তু প্রত্যেক মানুষের কাছেই এক বিশেষ আবেদন সমৃদ্ধ। সুতপা এই কবিতাটিকে মর্মস্পর্শী ভাবে উপস্থাপন করেছেন। কবিতাটি বসে বলছিলেন। কিন্তু ‘আমি জানি আমি সব জানি’ অংশ থেকে যখন উঠে দাঁড়ান এবং তারপরে অনুযোগ, অনুরোধ অংশগুলিতে তিনি মন ছুঁয়ে যান। সুবোধ সরকারের ‘কাল্লু’-ও যেন সব মিলিয়ে জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই চয়নে ‘পাগলা জগাই’, ‘মুখটা দেখুন’, ‘তিন পাহাড়ের গল্প’ সংযোজিত না হলেই ভাল হত। কথকের ভূমিকায় সুজয়প্রসাদ নজর কেড়েছেন। তিনি গল্প বলার ভঙ্গিতে কবিতার সূত্রগুলি ধরিয়ে দিচ্ছিলেন। তা বেশ শ্রুতিমধুর। এ ছাড়াও এই অনুষ্ঠান কণ্ঠ, চলচ্চিত্রায়ন, সঙ্গীতায়োজন সব কিছুর সমাহারে এতটাই চিত্তজয়ী যে নাচ (পরিচালনায় অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেবলীনা কুমার) আলাদা করে প্রযোজনাকে সমৃদ্ধ করেছে। সুতপার কণ্ঠ ভালো, আন্তরিকতার সঙ্গেই সমস্ত কবিতা উপস্থাপন করলেও ক্ষেত্র বিশেষ কণ্ঠের ‘মড্যুলেশনে’ উন্নতির দিকে দৃষ্টি দিতে হবে, নীলাভ চট্টোপাধ্যায়ের মঞ্চ ও উত্তীয় জানার আলো ‘কবিতাস্কোপ’-কে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

Advertisement

ভুলব কেমনে

সুলগ্না বসু

সম্প্রতি মোহিত মৈত্র মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ‘হে বন্ধু হে প্রিয়’ শীর্ষক গান ও আড্ডা। মধ্যমণি ছিলেন জগন্নাথ বসু-উর্মিমালা বসু। এ যেন এক অন্য আড্ডা। যেখানে উপস্থিত ছিলেন দুলাল লাহিড়ি, বিশ্বজিত্‌ চক্রবর্তী, বিভাস চক্রবর্তী, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, চৈতালী দাশগুপ্ত, তুলিকা বসু, শ্রীকান্ত আচার্য, অগ্নিমিত্রা পল, শংকরw চক্রবর্তী, সোনালী চক্রবর্তী, শ্রাবণী সেন, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়। সঞ্চালনায় ছিলেন মীর। অনুষ্ঠানের সূচনা-লগ্নে ছিল স্বপন সোম-দেবারতি সোমের কণ্ঠে ‘পুরানো সেই দিনের কথা’।

ইন্দ্রাণী সেন আন্তরিক স্মৃতিচারণায় শোনালেন সত্তর-আশির দশকের গল্প। শোনালেন ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’। জগন্নাথ-উর্মিমালা নিবেদিত দুটি শ্রুতিনাটক ‘পাকা দেখা’ এবং ‘একালের কপালকুণ্ডলা’ এক দিকে স্বরক্ষেপণ মুন্সিয়ানায় এবং অন্য দিকে কৌতুকের অনবদ্য প্রকাশে শ্রোতাদের মধ্যে হাসির হুল্লোড় তুলে দিল। আড্ডার মধ্যেই মনোজ মুরলীর খোলা গলার নিবেদন ‘বিপুল তরঙ্গ রে’ এবং তার সঙ্গে মধুবনীর শান্তভঙ্গিমার নৃত্য নির্মিতিতে ধ্রুপদী আড্ডার মাধুর্যটি প্রকাশ পেল।

কাহারবা রাগে

গানের ভুবন আয়োজন করেছিল রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা অবলম্বনে ‘বাদল সাঁজে’। অনুষ্ঠানে কাহারবা রাগাশ্রিত ‘আজি ঝরঝর’ শোনালেন অশোক ঘোষ। দীপান্বিতা সেন শোনালেন বেশ কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ‘এসো এসো ওগো’ প্রশংসার দাবি রাখে। এ ছাড়া অন্যান্য শিল্পীদের কণ্ঠে ছিল নির্বাচিত ঋতু পর্যায়ের গান। ভাষ্যপাঠে ছিলেন বিবেকানন্দ হাজরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement