বালিগঞ্জ রেনবো থিয়েটার প্রযোজিত ‘সুইট ৬০’ নাটকটি সম্প্রতি মঞ্চস্থ হল। নির্দেশক স্বনাম গুপ্ত। জাতপাত যে এখনও ভালবাসার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়, সেই বিষয়টি উঠে এসেছে নাটকে। পাশাপাশি ভালবাসার আড়ালে সন্দেহের বীজ বপন করে চলা, ভ্রূণ হত্যার মতো বিষয়ও এসছে।
স্বামীহারা ডোনা (তাপসী রায়চৌধুরী) জীবনে একাকীত্ব দূর করতে চিকিৎসক পুত্রকে (ইন্দ্রনীল মল্লিক) বিয়ে করার জন্য অনুরোধ করে। নাতির আশায়। কিন্তু রোনাল্ড ভালবাসে তনুশ্রীকে (আভেরি সিংহ রায়), কিন্তু সেই পরিবার রাজি নয় সেই বিয়েতে। ডোনা আঘাত পায়। তার মনে পড়ে যায় ৩৫ বছর আগে সে ভালবাসত অনিরুদ্ধ বসু (রজত গঙ্গোপাধ্যায়)কে।
ওই একই কারণে তখনও তাদের বিয়ে হয়নি। অথচ ডোনার মনে হত ধর্ম নয়, কর্মই আসল। এ ভাবেই নাটকে উঠে এসেছে নানা ঘটনা। যার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে-এখনও ভালবাসার অন্তরায় জাত-পাত। ভালবাসার আড়ালে এখনও সন্দেহ তৈরি হয় যার মূলে রয়েছে মনোরোগ।
শিক্ষিতা তনুশ্রীও ভ্রূণ নষ্ট করতে চায়। অবশেষে সে শুধরে নেয়। নাট্যকার ও অভিনেত্রী তাপসী রায়চৌধুরী অবশ্যই প্রশংসা পাবেন।
যাত্রার সফল জুটি ত্রিদিব ঘোষ ও তাপসীর মুনসিয়ানা এখানেও প্রতিফলিত হয়েছে। মৌসুমী সেনও ভাল অভিনয় করেছেন। ফলে নাটকের সাফল্য এসেছে সহজেই।
সুরঋদ্ধ
সম্প্রতি আইসিসিআর-এ শোনা গেল ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তীর সেতার বাদন। প্রথম নিবেদন ছিল রাগ সুরদাসী মল্লার। আলাপ, জোড়ে দুরূহ মিড়ের কাজ এবং ঠোক ঝালার নাতিদীর্ঘ পর্বটি ছিল আগাগোড়া সুরঋদ্ধ। বিলম্বিত ঝাঁপতালে নিবদ্ধ গতে সুরের বিস্তার, লয়কারি তথা তেহাইয়ের বৈচিত্র নজর কাড়ে। যেমন দশমাত্রার মধ্যে তিন বা সাতের ছন্দে লয়কারির কুশলী প্রয়োগ ও অতি দ্রুত তান। দ্রুত তিন তালেও সুর বিস্তার ও সেই সঙ্গে সাপাট, কুট, গমকের তানের অনুষঙ্গ এবং অতি দ্রুত অসাধারণ ঝালা। পরে শোনালেন বিলম্বিত তিনতালে ঝিঁঝোটি এবং রবীন্দ্র-সুরে ধুন। মনোগ্রাহী অনুষ্ঠান। তবলায় উজ্জ্বল ভারতী।
দুই কবির গানে
দুই কবি রবীন্দ্র-নজরুল। কসবা সঞ্চারীর আয়োজনে নাচ-গান ও পাঠের অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন নবীন ও প্রবীণ শিল্পীরা। স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্তের ‘অন্তরে জাগিছ অন্তরতর’ মনকে নাড়া দেয়। সেই রেশ অটুট রাখলেন মনোময় ভট্টাচার্য। সুন্দর গাইলেন ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’। এই অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের সব চেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল সুরজিত চট্টোপাধ্যায় ও সিদ্ধার্থ রায়ের দ্বৈত কণ্ঠে ‘আকাশভরা, সূর্যতারা’, ‘দূরদ্বীপবাসিনী’। সুস্মিতা গোস্বামী শোনালেন চর্চিত কণ্ঠে ‘হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে’।
অন্যান্যদের মধ্যে গাইলেন অনুশীলা বসু (প্রজাপতি কোথায় পেলি এমন রঙিন পাখা), সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায় (মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে)।
অনুষ্ঠানের সংযোজনায় ছিলেন বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।