কাননদেবী আত্মকথায় লিখেছিলেন, ‘....আমরা অনেকেই অন্ধকারে জন্মেছি। আমাদের আলো দেখার উদগ্র কামনা ছিল। আজ যারা আলোতে জন্মাচ্ছেন, তারা কেন অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছেন?’ সময়ের সঙ্গে অনেক প্রশ্নেরই কোনও উত্তর থাকে না। তবুও সেই কবে কাজী নজরুল ইসলাম একটি কবিতায় তাঁর ক্ষোভ জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘কে বলে তোমায় বারাঙ্গনা মা/ কে দেয় থুথু ও গায়ে/ হয়তো তোমারে শূন্য দিয়াহে/ সীতা সম সতী মায়ে।’
সোনাগাছির কোমলগান্ধারের একপাল ছেলেমেয়ে তাদের প্রতিভা ফুটিয়ে তুলতে চায় মুক্ত এই সমাজে। ছোট্ট মেয়ে অহিনা খাতুন। মা যৌনকর্মী। সুযোগ পেয়ে আত্মহারা। গানও ধরে। মিতা এগিয়ে এসেছে বিনোদিনী সাজবে বলে। তার মা এখানকারই বাসিন্দা। যাকে এক সময় তার বাবা-ই এখানে বিক্রি করে দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। মিতার কথায়, ‘‘আমি এমন কিছু করতে চাই যেখানে সমাজ আমায় ভালবেসে কাছে টেনে নেবে।’’
দুর্বার মহিলা সংগঠনের সহযোগিতায় ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় কলকাতার বিভিন্ন মঞ্চে ‘সংস্ট্রেস’ শিরোনামে (সেই সব অভিনেত্রী যাঁরা একাধারে স্টেজ, ছায়াছবি ও রেকর্ডে নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন, তাঁদের জীবন-গাথা) মঞ্চস্থ হবে।
‘একটু বড় হয়ে শুনেছি আমার মা কখনই বাবার বিবাহিত স্ত্রী ছিলেন না। আবার এর বিপরীত কথাও শুনেছি। কোনটা সত্যি জানি না। কিন্তু এ নিয়ে আমার কোনও মাথা-ব্যথা নেই। আমি মানুষ। সেটাই আমার পরিচয়।’ কাননবালার আত্মকথনে যে জেহাদ উঠে এসেছিল, তারই প্রতিধ্বনি প্রতিফলিত হবে রবীন্দ্রসদনে ১৮ জানুয়ারি।