দমদমের মতো প্রান্তিক কলকাতায় প্যাডেল রিক্সার রমরমা। ছাত্রাবস্থায় দেখতাম একজন রিক্সা দাদু রোজ দাদাকে বাড়ি থেকে স্টেশন নিয়ে যেতেন। — লেখক স্বরূপ কুমার চক্রবর্তী
সেই রিক্সা দাদু: ছবি — স্বরূপ কুমার চক্রবর্তী
আষাঢ় মাসের বৃষ্টি — কারও কাছে খুব রোম্যান্টিক। আবার কারও কাছে প্রেম, ভালোবাসা, বিষাদ ইত্যাদি। কিন্তু কলকাতার বৃষ্টি এবং জমা জলের শহর ভিড় করে আনে কিছু বেদনাঘন মুহূর্ত।
দমদমের মতো প্রান্তিক কলকাতায় প্যাডেল রিক্সার রমরমা। ছাত্রাবস্থায় দেখতাম একজন রিক্সা দাদু রোজ দাদাকে বাড়ি থেকে স্টেশন নিয়ে যেতেন। উচ্চতা কম হওয়ায় প্যাডেলে পা যেত না ঠিকঠাক। হাঁটু সমান ধুতি ও গায়ে মলিন ফতুয়া। চাকরিসূত্রে বাইরে চলে যাওয়ায় প্রায় দশ বছর ওনাকে দেখিনি। হঠাৎ একদিন সপ্তাহান্তে বাড়ি ফেরার সময় দেখি একদল মানুষের জটলা। সামনে গিয়ে দেখি সেই রিক্সা দাদু। বৃষ্টির জমা জলের মধ্যে রিক্সা গর্তে পড়ে ভারসাম্য রাখতে না পেরে সটান রাস্তায়। সারা গায়ে ক্ষত।
এর পরে ফের কয়েক বছর কেটে গেছে ফের ওনাকে দেখিনি। দাদাকে জিজ্ঞেস কোরে জেনেছিলাম বিহারে ওনার পরিবার- স্ত্রী, দুই ছেলে বৌমা। কিন্তু কেউ দেখতো না। হঠাৎ করেই উবে যাওয়া। হয়তো দেশে ফেরা নয়তো কোনও সরকারি হাসপাতালে অনাথ রোগী হিসেবে মৃত্যু বা অন্য কিছু — আজও অজানা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আষাঢ়ের গল্প’ কনটেস্ট থেকে সংগৃহীত।