হাসপাতালই নেই, ১৪ হাজার লোক নিয়োগের ঘোষণা

যে ৪০টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এখনও নেহাতই পরিকল্পনার স্তরে, সেখানে ১৩ হাজার ৭০০ লোক নিয়োগের কথা আজ নবান্নে ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রয়েছে আরও তিনশো নিয়োগ। মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, “এর আগে আমরা বিভিন্ন সরকারি দফতরে দু’লক্ষ লোককে চাকরি দিয়েছি। এ বার আরও ১৪ হাজার নিয়োগ করা হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৭
Share:

যে ৪০টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এখনও নেহাতই পরিকল্পনার স্তরে, সেখানে ১৩ হাজার ৭০০ লোক নিয়োগের কথা আজ নবান্নে ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রয়েছে আরও তিনশো নিয়োগ। মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, “এর আগে আমরা বিভিন্ন সরকারি দফতরে দু’লক্ষ লোককে চাকরি দিয়েছি। এ বার আরও ১৪ হাজার নিয়োগ করা হবে।”

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে প্রশাসনেই। সরকারি দফতরে চাকরি বলতে মুখ্যমন্ত্রী কী বোঝাতে চেয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন নবান্নের এক দল অফিসার। তাঁদের বক্তব্য, সরকারি দফতরে চাকরি বলতে সাধারণ ভাবে সরকারি পাকা চাকরিই বোঝায়। সেই চাকরি দিতে গেলে নিয়োগপত্র দিতে হয়। নিয়োগপত্রের সুবাদে প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি এবং পেনশন ভোগ করেন সরকারি চাকুরেরা। কিন্তু শ্রম দফতর ও কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের তথ্য বলছে, দু’লক্ষ তো দূরের কথা, সব মিলিয়ে সাকুল্যে হাজার তিনেক সরকারি চাকরি হয়েছে এই আমলে।

যে ১৪ হাজার লোক নেওয়ার কথা বলেন মমতা, নবান্ন সূত্র জানাচ্ছে, তার মধ্যে ১৩ হাজার ৭০০ জন নিয়োগ হবে স্বাস্থ্য দফতরে। রাজ্যে যে ৪০টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার, সেখানকার ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান ও করনিকের কাজ পাবেন তাঁরা।

Advertisement

নবান্ন সূত্র জানাচ্ছে, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের জন্য ২০১২-এর গোড়ায় নতুন করে স্টাফ সিলেকশন কমিশন (এসএসসি) তৈরি করে রাজ্য সরকার। সিদ্ধান্ত হয়, কেবল গ্রুপ ‘এ’ পদে চাকরির পরীক্ষা নেবে স্বশাসিত সংস্থা পাবলিক সার্ভিস কমিশন। বাকি গ্রুপ ‘বি’, ‘সি’ এবং ‘ডি’ পদে নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয় নবগঠিত এসএসসি-র হাতে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এ পর্যন্ত চার-পাঁচটি পরীক্ষা নিয়েছে এসএসসি। তাতে ১৫০০-এর বেশি চাকরি হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক কালে যেখানে সব চেয়ে বেশি নিয়োগ হওয়ার কথা, সেই খাদ্য দফতরে ১১০০ পরিদর্শক পদের পরীক্ষা প্রক্রিয়া শেষ হলেও খাতা দেখার কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও তার ফল প্রকাশ করতে পারেনি এসএসসি।

তা হলে দু’লক্ষ চাকরি কী ভাবে হল? প্রশাসনের একাংশ বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়তো সিভিক পুলিশ, ভিলেজ পুলিশ কিংবা বিভিন্ন দফতরে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের মতো অস্থায়ী ঠিকা কর্মীদেরও পাকা চাকুরেদের গোত্রে ফেলেছেন। তা বলে সংখ্যাটা দু’লক্ষে পৌঁছতেও পারে। নবান্ন সূত্র বলছে, বছরখানেক আগে ৬৬০০ টাকা ‘মাসিক বেতন’-এ হাজার দশেক ছেলেমেয়েকে বিভিন্ন দফতরে গ্রুপ ‘ডি’র চাকরি দিয়েছিল সরকার। এ ছাড়াও চলতি বছরে লোকসভা ভোটের আগে ১ লক্ষ ৩০ হাজার সিভিক পুলিশ নিয়োগের অনুমতি দিয়েছিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। তারও আগে রাজ্যের পাঁচটি কমিশনারেটে নেওয়া হয়েছিল ৫১০০ সিভিক পুলিশ, রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে এক জন করে, মোট ৩৩৫১ জন ভিলেজ পুলিশ এবং পাহাড়ে ৬০০ সিভিক পুলিশ। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ১৪১ টাকা ৮৫ পয়সা করে দৈনিক পারিশ্রমিক দেওয়া হয় সিভিক পুলিশককে। আর ভিলেজ পুলিশের রোজ ২৪০ টাকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement