সাফাই নিয়ে ক্ষোভ শহরে

ফের ডেঙ্গির প্রকোপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ির সাফাই নিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, নিয়মিত নিকাশি নালা সাফাই হচ্ছে না। দুপুর অবধি আবর্জনা রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকছে। সাফাইকর্মীদের সংখ্যাও ওয়ার্ডে কমে যাচ্ছে। এতেই এনসেফ্যালাইটিসের পর ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৮
Share:

পড়ে আছে জঞ্জাল। —নিজস্ব চিত্র।

ফের ডেঙ্গির প্রকোপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ির সাফাই নিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, নিয়মিত নিকাশি নালা সাফাই হচ্ছে না। দুপুর অবধি আবর্জনা রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকছে। সাফাইকর্মীদের সংখ্যাও ওয়ার্ডে কমে যাচ্ছে। এতেই এনসেফ্যালাইটিসের পর ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। মূলত ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ মত ওয়ার্ডগুলির অবস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। ওই সমস্ত ওয়ার্ডগুলিতে ডেঙ্গির সংক্রমণ নিয়ে সম্প্রতি পুরসভাকে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য দফতর। মশা মারতে এবং এলাকা পরিষ্কার রাখতে আগাম ব্যবস্থা না নিলে গত বছরের মতো ডেঙ্গি পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নিতে বলেও জানানো হয়। পুর কর্তৃপক্ষ কেন তবু যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ার পর এলাকাগুলিতে কোনও কাউন্সিলর তথা জনপ্রতিনিধি নেই। কোনও কিছু ঘটলে পুরসভা সক্রিয় হচ্ছে। এনসেফ্যালাইটিসের পর এবার ডেঙ্গি প্রকোপ দেখা দিয়েছে। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তো নিচ্ছিই। শহর পরিষ্কার রাখতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement

খালপাড়ার বাসিন্দা পবন অগ্রবালের পরিবারের ৫ জন রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তাঁদের বাড়ির লাগোয়া পরিত্যক্ত জমিতে আবর্জনার স্তূপ জমে রয়েছে। এলাকা ঠিক মতো সাফ না হওয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারাও। পবনবাবু বলেন, “আবর্জনা নিয়মিত সাফাই একেবারেই হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে দু দিন ধরে প্রাক্তন কাউন্সিলর সবিতা অগ্রবালকে বলছি। তিনি পুরসভাকে বলে পরিষ্কার করানোর চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।” এলাকার সোনম অগ্রবাল, মহাদেব অগ্রবালদের অভিযোগ, বাড়ির চারদিকে দিনের পর দিন আবর্জনা পড়ে থাকছে।

বাসিন্দারা জানান, বিবেকানন্দ রোড, কেদারমাঠ, নেহেরু রোড, কালীনাথ রোড, এসপি মুখোপাধ্যায় রোড, অগ্রসেন রোড, শিবাজী রোড, নয়াবাজার লাগোয়া সব্জিবাজারের মত এলাকাগুলিতে মাঝেমধ্যেই দিনভর আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। নিকাশি নালার এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে কিছুদিন আগেও সামান্য বৃষ্টিতে নর্দমা উপচে নয়াবাজার বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে। বড় নর্দমাগুলি দীর্ঘদিন ধরে সাফাই হয়নি। এলাকায় একাধিক নার্সিংহোম, স্কুল, মাদ্রাসা রয়েছে। দ্রুত পুর প্রশাসনের বিষয়টিতে নজর দেওয়া দরকার।

এলাকার বাসিন্দা তথা সিপিএম নেতা সঞ্জয় টিব্রুওয়াল বলেন, “আমরা কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। সাফাই কর্মী কম, ট্রাকও কম আসছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।” টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা বিকাশ প্রসাদ, টিউমলপাড়ার শিবানী দাসরা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদেরও অভিযোগ, “সাফাই পরিষেবা শিকেয় উঠেছে। মশা মারার তেল স্প্রে করাই হয় না।”

জমা জলের জন্য সমস্যা বেড়েছে। অভিযোগ, বিশেষ করে নির্মীয়মাণ বহু বহুতল চত্বরে কৌটো, বালতিতে জল জমে থাকে। ইঁট ভেজানো ছাড়াও নানা কাজে জল জমিয়ে রাখা হয়। কোনও সময় চৌবাচ্চা বা ড্রামে জল থাকে। আবার অনেক জায়গায় ছাদে বা মেঝেয় জল জমে থাকতেও দেখা গিয়েছে। যা মশার আঁতুরঘরে পরিণত হয়। পুরসভার কমিশনার বলেন, “বহুতলের জমা জল সাফাইয়ে জন্য প্রোমোটারদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement