মহাকাশে বিভিন্ন ধরনের রশ্মি ও তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের পরিমাণও সেখানে বেশি। প্রতীকী ছবি।
সরকারি হিসাবে এখনও মহাকাশে কোনও শারীরিক মিলনের ঘটনার উল্লেখ নেই। কারণ মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলির কড়াকড়ি। আসলে শারীরিক মিলনের ফলে যদি কেউ মহাকাশে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন, তবে তার ফল হতে পারে ভয়াবহ আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। ঠিক কী হবে তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও, একাধিক কারণে অন্তঃসত্ত্বা মহাকাশচারী ও ভ্রূণের ক্ষতি হতে পারে।
মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি থাকে না। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রশ্মি ও তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের পরিমাণও সেখানে বেশি। এই বিষয়গুলির অভিঘাতে ভ্রূণে ত্রুটি দেখা দিতে পারে। হতে পারে মৃত্যুও। তা ছাড়া মহাকাশে মানবদেহে রক্তসঞ্চালন, হাড়ের বৃদ্ধি ও পেশির কার্যকারিতাকেও প্রভাবিত করে। এই পরিস্থিতিতে কোনও মহাকাশচারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তা বিপজ্জনক হতে পারে হবু মায়ের জন্যও।
মানুষের দেহে স্বাভাবিক ভাবেই বেশ কিছু জীবাণু থাকে। মহাকাশে এই ধরনের জীবাণুগুলির চরিত্র বদলে যেতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আর যদি তা হয়, তবে আপাত ভাবে যে জীবাণুগুলি খুব একটা ক্ষতিকর নয়, সেগুলিই হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক। নাসার ওয়েবসাইট বলছে, মহাকাশে কিছু কিছু জীবাণু অনেক দ্রুত ও সহজে এক জনের দেহ থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে ছড়িয়ে পরে। তাই দরকার বাড়তি সতর্কতা। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নারীদেহে হরমোনের ভারসাম্য ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নড়বড়ে হয়ে যায়। ফলে এই সময় নারীদের রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
এই কারণেই সরকারি ভাবে নাসা মহাকাশে গর্ভধারণকে নিষিদ্ধ করার নীতি নিয়েছে। এমনকি, কোনও মহিলা নভশ্চরকে মহাকাশে পাঠানোর ১০ দিন আগে থেকে রোজ পরীক্ষা করা হয় তিনি অন্তঃসত্ত্বা কি না, এমনই জানিয়েছে একটি ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা। তবে কত দিন এই নিয়ম বজায় রাখা যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে, কারণ ভবিষ্যতে আরও দীর্ঘ মহাকাশযাত্রার পরিকল্পনা করছে সব মহাকাশ গবেষণা সংস্থাই। কাজেই সে ক্ষেত্রে দিনের পর দিন মহাকাশচারীদের যৌনতা থেকে দূরে রাখা কঠিন হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।