হাত, মুখ দুই-ই চলুক। ছবি- সংগৃহীত
সকালে কাজে আসার আগে তাড়াহুড়ো করে যা হোক কিছু একটা খেয়ে চলে আসেন অনেকেই। কিন্তু তাতে পেট তো ভরে না। কিছু ক্ষণের মধ্যেই খিদে পেয়ে যায়। তার পর নানা কাজের চাপে খাওয়ার কথা ভুলেই গিয়েছেন। সন্ধ্যা নাগাদ যখন খিদের চোটে মাথা ঘুরছে, তখন পাশের টেবিলে থাকা সহকর্মীর লকার খুলে একমুঠো ঝাল-ঝাল চানাচুর খেয়ে নিলেন। এমন ঘটনা চলতে থাকে নিত্যদিনই। কখনও চানাচুর, কখনও বিস্কুট, কখনও কুকিজ়— নানা রকম অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাসে শরীরের ক্ষতি ডেকে আনছেন না তো?
সহকর্মীর বানানো কেক, বিস্কুটে ভাগ বসানোর মধ্যে কোনও ক্ষতি নেই। অনেকেই মনে করেন, এই অভ্যাসে সহকর্মীদের মধ্যে নাকি সুসম্পর্ক বজায় থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখলে কিন্তু চলবে না। হালের গবেষণা বলছে কাজের মাঝে খাবার বিরতি নিয়ে আলাদা করে নিজের মতো খেয়ে আসার থেকে সারাদিন ধরে ছোট ছোট খাবার খাওয়াই ভাল।
সহকর্মীদের সঙ্গে ভাগ করে খাওয়া
স্বাস্থ্যের কথা ভেবে অনেক খাবারই এড়িয়ে চলেন। কিন্তু সহকর্মীদের চাপে পড়ে সেই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়। ফলে ডায়েট করেও বিশেষ লাভ হয় না। আবার অনেকেই কাজ করতে করতে টুকটাক মুখ চালানোর জন্য টেবিলের পাশে কেক, বিস্কুট, চকোলেটের মতো টুকটাক খাবার রাখেন। এমনকি, তিনি অফিসে উপস্থিত না থাকলেও তাঁর টেবিলে রাখা খাবারগুলি অন্যদের হাতছানি দিতে থাকে। এমন অভ্যাস নাকি পরোক্ষ ধূমপানের মতোই ক্ষতিকর।
কাজের টেবিলে বসে খাওয়া
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন দেশের কর্মসংস্কৃতিতেই পরিবর্তন এসেছে। আগেকার দিনে অফিসে যেমন আধঘণ্টা বা এক ঘণ্টার জন্য খাওয়ার বিরতি দেওয়া হত, এখন তা নেই বললেই চলে। কর্মীরাও যে খাওয়ার জন্য এতটা সময় ব্যয় করতে চান, তেমনটা নয়। ২০২১ সালে ব্রিটেনে ১৩৩টি সংস্থার কর্মীদের নিয়ে করা একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে সেখানকার ৬ শতাংশ কর্মীই নাকি দুপুরে কিছু না খেয়েই থাকেন। অথচ ‘ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজ়েশন’-এর মত অনুযায়ী, কাজের জায়গায় না খেয়ে থাকার প্রভাব কিন্তু বেশ সুদূরপ্রসারী। এমনকি, কাজের মানেও তার প্রভাব পড়ে। এর চেয়ে কাজ করতে করতে বিভিন্ন রকম বাদাম, দানাশস্য, ভুট্টার খইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতেই পারেন।
গত দু’বছর অতিমারি চলাকালীন কাজের ধারায় নিঃসন্দেহে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। বাড়ি থেকে কাজ করা এবং অনলাইনে খাবার অর্ডার দিয়ে দেওয়ার অভ্যাসও এর জন্য অনেকটাই দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।