মহাকাশচারীরা কোন রোগে বেশি আক্রান্ত হন? ছবি: শাটারস্টক।
মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকেই দেখেন। তবে সকলের স্বপ্ন সফল হয় কই? বুধবার চন্দ্রযান বিক্রমের সফল ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’-এর পর চাঁদে যাওয়ার বাসনা হয়তো অনেকের মনেই জেগেছে। স্পেসফ্লাইট কিন্তু মানুষের জন্য একটি কঠোর অভিজ্ঞতা। প্রথমত, মহাজাগতিক বিকিরণ রয়েছে, যা শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং তার উপরে মাইক্রোগ্র্যাভিটি যা শরীর মধ্যস্থ তরল এবং রক্তচাপের উপর হস্তক্ষেপ করে প্রতিনিয়ত। এ ছাড়াও হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো এবং বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও সমাজ থেকে দীর্ঘ দিনের বিচ্ছেদ মন দুর্বল করে দেয়। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় ব্যাপক ভাবে। মহাকাশচারীদের এই ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে বোঝাপড়া করার জন্য বছরের পর বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবুও মহাকাশে গিয়ে তাঁদের নানা শারীরিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
স্পেস হেলথ রিসার্চ অনুযায়ী দীর্ঘ দিন মহাকাশযাত্রা শরীরের প্রায় প্রতিটি তন্ত্র, শরীরের কার্ডিয়োভাসকুলার এবং মেটাবলিক সিস্টেম থেকে শুরু করে ইমিউন সিস্টেমের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ মিশনের সময় মহাকাশচারীরা সবচেয়ে বেশি যে সমস্যার মুখোমুখি হয়, তা হল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়া। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে মহাকাশচারীরা মহাকাশে অনেক ক্ষেত্রেই ভাইরাল সংক্রমণে কাবু হন। অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় যে, সেই ভাইরাসগুলি কিন্তু তাঁরা পৃথিবী থেকেই নিজের শরীরে বহন করে নিয়ে যান। অনেক ক্ষেত্রেই মহাকাশচারীদের ত্বকে বিভিন্ন রকম সংক্রমণ শুরু হয়।
আমাদের শরীরে কোনও রকম ভাইরাল সংক্রমণ হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি সেই ভাইরাসের মোকাবিলা করে, এবং সময়ের সঙ্গে আমরা সুস্থ হয়ে উঠি। শরীরে ভিতর কিন্তু সেই সব ভাইরাসগুলি দীর্ঘ দিন লুকিয়ে থাকে। মহাকাশে গেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে সেই ভাইরাসগুলির আবার সক্রিয় হতে খুব বেশি সময় লাগে না। তবে ভাল বিষয় হল, পৃথিবীতে ফিরে আসার পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ শক্তি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তার পর ভাইরাল সংক্রমণগুলি কমতে শুরু করে।