প্রতীকী ছবি।
মায়েদের ভূমিকা সকলের জীবনে তুলনাহীন। সারা বছরই হয়ত তাঁরা সন্তানদের জন্য অনেক কিছু চান— সন্তান নিরাপদ থাক, উন্নতি করুক, ভাল মানুষ হয়ে উঠুক এবং আরও কত কী! কিন্তু সন্তানেরা এই অতিমারিতে মায়েদের জন্য সবচেয়ে বেশি কোন জিনিসটা চান? মাতৃদিবসের আগে একবার ঝালিয়ে নেওয়া যাক।
সুস্থ থাকুন
এই অতিমারিতে মানুষের জন্য সবচেয়ে জরুরি হয়ে উঠেছে সুস্বাস্থ্য। মা যেন সুস্থ থাকেন, সুরক্ষিত থাকেন, কোনও মতেই করোনার কবলে না পরেন। এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর টিকাকরণ হয়ে যাক— এ বছর মাতৃদিবসের বেশির ভাগ সন্তানের এই একটাই কামনা।
চাকরি থাকুক
কর্মরতা মায়েদের জন্য গত বছর থেকে সময়টা মোটেই সহজ যাচ্ছে না। বাড়ির সব কাজ সামলে, সন্তান সামলে, অফিসের কাজ করা তাঁদের পক্ষে আরও বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অফিসে থাকলে তাঁর মন যতই ছোট শিশুর দিকে পড়ে থাকুক, কাজে কোনও রকম ক্ষতি হতো না। কিন্তু বাড়িতে থাকাকালীন পাশের ঘরে যদি সন্তান কেঁদে ওঠে, কাজ ফেলে তাকেই ছুটে যেতে হচ্ছে সামলাতে। কর্মক্ষেত্রেও এই নিয়ে সকলের মনে নানা রকম প্রশ্ন উঠছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর যে মহিলারা কাজ এবং বাড়ি সামলে উঠতে হিমশিম খেয়েছেন, তাঁর মধ্যে ৫৬ শতাংশ মহিলারা সন্তানের মা। চাকরি খোওয়ানোর উদ্বেগে ভুগছেন এমন মায়েদের সংখ্যা ৬৩ শতাংশ। তাই এই মাতৃদিবসে বহু সন্তানই চাইবেন, তাঁদের মায়েদের এই উদ্বেগ যেন কেটে যাক। এবং তাঁদের চাকরি বহাল থাকুক।
নিজস্ব সত্বা বাঁচিয়ে রাখুন
মা ছাড়াও যে তাঁদের নিজস্ব একটা পরিচয় রয়েছে, অনেক সন্তানই চান তাঁদের মায়েরা সেটা ভুলে না যান। দিনের সব কাজ সেরে, পরিবারের সব কর্তব্য শেষ করে যেন তাঁরা নিজের জন্য সময় বার করায় অবহেলা না করেন। তাঁরা যেন নিজের মতো বাঁচুন। নিজের ইচ্ছে-অনিচ্ছেগুলো গুরুত্ব দেন, এমন আশাই করছেন বহু সন্তান। যদি তাঁর পিয়ানো শেখার শখ হয় কিংবা নতুন করে কোনও ব্যবসা শুরু করার ইচ্ছে হয়, তিনি যেন দু’বার না ভেবে সেই পথেই মনোযোগ দেন।
নিজেকে গুরুত্ব দেন
পরিবার এবং সন্তানের কথা ভাবতে গিয়ে অনেক সময়ও নিজেকে অবহেলা করেন মায়েরা। পুষ্টিকর খাওয়া, পছন্দের বই কেনা, শরীরচর্চা করা, নিজের মতো সময় কাটানো রোজকার রুটিন থেকে বাদ দিয়ে দেন তাঁরা। সন্তান হিসেবে অনেকেই চাইবেন, মায়েরা যেন নিজেকে গুরুত্ব দেওয়া বন্ধ না করেন। খেতে বসে সন্তানের পাতে ক’টা মাংসের পিস পড়ল, সেটা দেখার পাশাপাশি নিজে ক’টা পেলেন, সেটাও দেখতে শিখুন। সন্তানের স্কুলের প্রজেক্ট করাতে হবে বলে বিকেলের আধ ঘণ্টা বই নিয়ে কফি-ব্রেকটা যেন হারিয়ে না ফেলেন।
কখনও একাকিত্বে না ভোগেন
মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকুক, এমনটাই চান সন্তানেরা। গোটা শৈশব ধরে মায়েরা সঙ্গে থাকেন সন্তানদের। তাই এই অতিমারির যুগে তাঁরা কখনও যেন নিজেকে একা না মনে করেন। সন্তানেরা যতই দূরে থাকুন, ব্যস্ত থাকুন, মায়েদের জন্য যে সব সময় তাঁরা সময় বার করতে পারবেন, সেটা জানিয়ে দিতে চান তাঁরা। প্রযুক্তির সাহায্যে এখন অনেক দূরে বসেও একসঙ্গে সময় কাটানো সম্ভব হয়ে গিয়েছে। তাই মায়েরা যাতে কখনও একাকিত্বে না ভোগেন, সেটা নিশ্চিত করতে চান সন্তানেরা।