বর্ষায় দ্বিচক্রযানের যত্ন। ছবি: সংগৃহীত।
বর্ষা এলেই যেমন রোগ সংক্রমণ বাড়ে, শরীর থেকে ত্বক বাড়তি যত্নের প্রয়োজন বোধ করে, ঠিক তেমনই বাইসাইকেল, বাইক বা স্কুটারেরও দেখভাল প্রয়োজন। কিছুটা ‘বাহন’ ভাল রাখার জন্য, কিছুটা নিজের সুরক্ষার জন্য।
নিত্য যাতায়াত হোক বা বেড়ানোর জন্য লম্বা যাত্রা, বাইক বা স্কুটার নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। বর্ষা এলেই জল-কাদা বাড়ে। ফলে বাইক, স্কুটার, সাইকেল দ্রুত নোংরা হয়ে যায়। পাশাপাশি জলে রাস্তাতেও চাকা হড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। কী ভাবে দেখভাল করবেন ‘বাহন’-কে।
পরিষ্কার করতে হবে
জল-কাদা লেগে থাকা বাইক হোক বা স্কুটার কিংবা সাইকেল নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। না হলে, দ্রুত রং ক্ষয়ে যাবে। পাশাপাশি যন্ত্রাংও কাদা-জলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। জল দিয়ে ভাল করে নিজের বাহনকে পরিষ্কার করে নিন। মাঝে-মধ্যে শ্যাম্পু দিয়েও পরিষ্কার করতে পারেন। তবে যন্ত্রাংশে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এতটা জোরে জল দেওয়া উচিত নয়। সঙ্গে যন্ত্রাংশে মসিন ওয়েলও দিতে হবে।
সুরক্ষা বর্ম
বর্ষার দিনে বাইক বা স্কুটার, সাইকেল যদি বাইরে রাখতেই হয়, তা হলে জলের ছিটে আসে না এবং জল জমে না এমন জায়গায় রাখুন। শেডের নীচে রাখলেও অবশ্যই বর্ষার জন্য বাইক ঢাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি। বর্ষায় সুরক্ষায় বিশেষ নজর দিতে হবে। বাইক বা স্কুটারের রং তো বটেই, যন্ত্রাংশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মোমের পরত দিতে পারেন। বর্ষা থেকে যন্ত্রাংশ বাঁচাতে মোম ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের পরত দেওয়া যায়। দোকানে গেলেই তাঁরা বলে দেবেন কোনটা করলে ভাল।
যন্ত্রাংশে তেল জরুরি
বৃষ্টিতে যন্ত্রাংশের তৈলাক্ত ভাব ধুয়ে যায়। তাই নিয়মিত তেল দেওয়া জরুরি। যে কোনও তেল নয়, বাইক বা স্কুটারের যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ ভাল থাকবে, এমন তেল ব্যবহার প্রয়োজন। সাইকেলেও চেনে তেল দিতে হবে।
টায়ার পরীক্ষা
বর্ষার দিনে জল কাদা ভরা, খানা খন্দে ঢাকা রাস্তায় বাইক বা স্কুটার চালানো একটু ঝুঁকিরই। সেক্ষেত্রে টায়ার ঠিক আছে কি না, বাতাস ভরা আছ কি না, নিয়মিত পরীক্ষা করা দরকার। টায়ারের খাঁজ ঘষে মসৃণ হয়ে গেলে গাড়ি হড়কে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বর্ষায় যদি নিয়মিত লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়, এই বিষয়গুলি মাথায় রাখা দরকার।
ব্রেক
বাইক বা স্কুটার, সাইকেলের ব্রেক পরীক্ষাও খুব জরুরি। সারা বছরই খেয়াল রাখা দরকার। তবে বর্ষায় অবশ্যই বিশেষ করে। যেহেতু এই সময়ে রাস্তা বৃষ্টিতে পিচ্ছিল হয়ে যায়, তাই ব্রেক সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, পরীক্ষা করানো দরকার নিয়মিতভাবে।
ব্যাটারির সুরক্ষা
বৃষ্টির জল ব্যাটারিরও ক্ষতি করতে পারে। তাই যথাসম্ভব বৃষ্টির জল এড়াতে হবে। তারপরেও ব্যাটারি বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা দরকার। গাড়ি সারাইয়ের জায়গায় গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে সমস্তটা ঠিক আছে কি না। দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইক ব্যবহার না করলে ব্যাটারির সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে পারেন। কোনও কোনও সাইকেলে ব্যাটারি থাকে। একইভাবে সাইকেলের ব্যাটারির যত্নও করতে হবে।
আলো
গাড়ির আলো সবসময় জরুরি। নিজে রাস্তা দেখার জন্য, অন্যেরা যাতে আপনার বাইক বা স্কুটার দেখতে পান সে জন্যও। বর্ষায় মেঘে দ্রুত অন্ধকার হয়ে যেতে পারে চারপাশ। প্রবল বৃষ্টিতে দৃশ্যমানতাও কমে যায়। তাই জোরালো আলো থাকা দরকার।
সতর্কতা
প্রবল বৃষ্টির সময় বাইক বা স্কুটার, সাইকেল না চালানোই ভাল। এই সময় দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। পাশাপাশি চাকা হড়কে যেতে পারে। গাড়ির ক্ষতির সম্ভবনা তো রয়েছেই। প্রবল বৃষ্টি এড়িয়ে চলাই ভাল।