স্বাস্থ্য বিমা করাতে হবে বুঝেশুনে। ছবি: সংগৃহীত।
ক্যানসার হোক কিংবা হার্টের সমস্যা, কিডনির অসুখ হোক বা লিভার সিরোসিস—যে কোনও কঠিন রোগের সঙ্গে মৃত্যুভয়ের পাশাপাশি জড়িয়ে রয়েছে আরও একটি বড় চিন্তা। চিকিৎসার খরচ নিয়ে শুরু পরিবারের সব সদস্যের মনের মধ্যেই চরম দুশ্চিন্তা। আপনজনের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঘটি-বাটি বিক্রি হয়ে গিয়েছে বহু পরিবারের। তৈরি হয়েছে নতুন শব্দ— ‘মেডিক্যাল পভার্টি’। এই পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা পেয়েছে স্বাস্থ্য বিমার প্রয়োজনীয়তা।
খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, কম ঘুমোনো, কাজের জায়গায় মানসিক চাপ-সহ জীবনের ওঠাপড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছে শরীর ও মন। এ সবের জেরেই বাড়ছে রোগের প্রকোপ। এর সঙ্গে দিন দিন বেড়ে চলেছে চিকিৎসার খরচ। হাসপাতালের শয্যা বা ঘরের ভাড়া, ওষুধপত্র, বিভিন্ন পরীক্ষা, চিকিৎসকদের ফি, অস্ত্রোপচার (যদি হয়) বাবদ যে অঙ্কের টাকা খরচ হয়, তা অনেক সময়েই রোগী বা রোগীর পরিবারের পক্ষে দেওয়া কঠিন হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সঞ্চয়ের টাকাতেও চিকিৎসার খরচ কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিমা করা থাকলে কিছুটা ভার লাঘব হয়। স্বাস্থ্য বিমার আরও একটি সুবিধা হল এই বিমার প্রিমিয়াম বাবদ যে টাকা দেওয়া হয়, তাতে আয়কর দেওয়ার সময়ও বড় ছাড় পাওয়া যায়। জেনে নিন স্বাস্থ্য বিমা করানোর আগে কোন কোন বিষয় অবশ্যই মাথায় রেখে চলতে হবে।
১. স্বাস্থ্য বিমা করানোর আগে যার জন্য বিমা করাবেন, তাঁর বয়স, চিকিৎসার ইতিহাস, পূর্ব বিদ্যমান রোগের মতো বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে। বিশেষত আগে কোনও রোগ আছে কি না বা তার জেরে ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা হতে পারে কি না, তা ভাল করে বিবেচনা করে তবেই বিমা পলিসি নির্বাচন করা জরুরি।
২. বাজারে অসংখ্য বিমা সংস্থা আছে। সেই সব সংস্থার হাজারটা পলিসি রয়েছে। তাই বিমা নির্বাচনের আগে ভাল করে তুলনা করে দেখে নিন। বিশেষ করে রোগীর হাসপাতালে ভর্তির আগে এবং পরের খরচের মতো বিষয়গুলিতে কোন সংস্থার কোন বিমা কতটা কভারেজ দিচ্ছে, তা যাচাই করে নিতে ভুলবেন না।
৩. যে কোনও স্বাস্থ্য বিমা নির্বাচনের সময়ে শর্তাবলি ভাল করে পড়ে নিন। নির্দিষ্ট চিকিৎসার উপসীমা, অপেক্ষার সময় এবং বিমা ছাড়ার শর্তাবলিও ভাল করে দেখে নিন আগে থেকে।
৪. সাধারণ রোগ ছাড়াও যদি আগে থেকে কোনও বিশেষ অসুখ থাকে, তা হলে সেই বিষয়েও বিমা সংস্থা বা আপনার বিমাকারীর সঙ্গে কথা বলে নিন।
৫. শেষে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। স্বাস্থ্য বিমার পলিসি নির্বাচনের সময়ে বিমা সংস্থার ক্লেম সেটলমেন্ট রেকর্ড এক বার দেখে নেওয়া প্রয়োজন। তাতে সেই সংস্থার কর্মদক্ষতা সম্পর্কে আপনার একটি ধারণা তৈরি হবে।