অফিসে ব্যক্তিগত কথা কতটা বলবেন জানা জরুরি। ছবি: সংগৃহীত
স্কুল-কলেজ জীবনের পর পেশা প্রবেশ। কর্মজগৎ। দিনের অন্তত আট ঘণ্টা কাটে সেখানেই। কর্পোরেট জগৎ বা বেসরকারি চাকরিক্ষেত্র হলে, সেই সময় আরও বেড়ে যায়। এতক্ষণ কাজ করার সময়ে তো আর মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকা যায় না! সহকর্মীদের সঙ্গে মনের কথাও আদান-প্রদান চলতে থাকে। কিন্তু কী বলবেন, কতটা বলবেন সে সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। না-হলে কোনও সময় বিরক্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন। আপনার কথার ভুল ব্যাখ্যা করে সমালোচনাও শুরু হতে পারে। কর্মজগত ও ব্যক্তিগত জীবনের সূক্ষ সীমারেখা অফিসেও বজায় রাখা দরকার।
প্রেমের কথা
সহকর্মীদের সকলের কাছেই কিন্তু প্রেমের কথা, কার সঙ্গে ডেটিং-এ যাচ্ছেন, রাতে কতক্ষণ কার কার সঙ্গে চ্যাট করছেন সবটাই উজাড় করে দেবেন না। দিনভর কাজের ফাঁকে গল্প করতে করতে অনেকের সঙ্গেই সখ্য গাঢ় হয় ঠিকই, তবে সমস্ত ব্যক্তিগত কথা কি খোলা মনে বলে দেওয়া উচিত হবে, ভেবে দেখা দরকার। আর সহকর্মীদের সঙ্গে পরনিন্দা পরচর্চাতেও অংশ না নেওয়া ভাল। এটা মোটেও ভাল কাজ নয়। ভাবুন একবার, আপনার অনুপস্থিতিতে আপনাকে নিয়ে সমালোচনা, ঠাট্টা, তামাশা হচ্ছে, সেটা কি আপনার ভাল লাগবে?
স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা
শরীর খারাপ সকলের হয়। কারও ক্রনিক কিছু সমস্যা থাকে। অসুস্থতার কথা বসকে ও সহকর্মীদের জানাতে হবেই, সেটা প্রয়োজন। কিন্তু অসুখ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা অফিসে না হওয়াই ভাল। অসুখ মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়। কার কোন শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে কথোককথন ঠিক নয়।
আর্থিক বিষয়
বেতন, সঞ্চয়, খরচ, কত দাম দিয়ে কী কিনলেন এগুলি কিন্তু অফিসের আলোচ্য বিষয় হতে পারে না। কার কত বেতন, ব্যাঙ্কে কার কত টাকা রয়েছে তা তো যে কোনও মানুষেরই ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেই সব কথা সহকর্মীদের কাছে বিস্তারিত গল্প করে বলার দরকার নেই। আপনি দামী একটা টিভি কিনলেন বা হীরের গয়না, সেগুলি কি সত্যি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার মতো! কারও মনে হতেই পারে, আপনি কিনছেন শুধু নয়, লোককে জানাচ্ছেন আপনার কত টাকা আছে।
রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভাবনা
যে কোনও মানুষের রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতে পারে। নিজস্ব ধর্মীয় ভাবনাও থাকা স্বাভাবিক। এ নিয়ে তার্কিক ও তাত্ত্বিক আলোচনার পরিসর আদৌ অফিস হতে পারে কি? সেটি তো কাজের জায়গা। তা ছাড়া রাজনৈতিক মতাদর্শ বা কার্যাবলী যখন ব্যক্তিগত, তখন তা ব্যক্তিগত বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গেই ভাগ করে নেওয়া ভাল।
কেরিয়ার ভাবনা
ভবিষ্যত ও কেরিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন, তা সহকর্মীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা না করাই উচিত। সহকর্মীরা কিন্তু একই কর্মক্ষেত্রে রয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন প্রতিযোগিতা থাকা খুব স্বাভাবিক। তাই কেরিয়ার নিয়ে বিশদে না বলাই ভাল। এতে ভবিষ্যতে আপানারই বিপদ বাড়তে পারে।
কর্মক্ষেত্রে অভিযোগ
কর্মক্ষেত্রে কোনও বিষয় নিয়ে যদি অভিযোগ থাকে বা কারও কোনও কাজ নিয়ে বিরক্তি থাকে, অফিসে তা নিয়ে চেঁচামেচি না করে বা প্রকাশ্যে কাউকে কিছু না বলে, যেখানে বলা প্রয়োজন সেখানেই বলতে হবে। সকলের সামনে এ নিয়ে কথা বললে কাজের পরিবেশ নষ্ট হতে পারে।